Thokbirim | logo

৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১৯শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

কবি শাওন রিছিল।। আমার জন্য কবিতা লিখেছিলো কি? ।। জাডিল মৃ

প্রকাশিত : সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২১, ১৯:৪৬

কবি শাওন রিছিল।। আমার জন্য কবিতা লিখেছিলো কি? ।। জাডিল মৃ

এক

কবি শাওন রিছিল। বড় ভাই।’থকবিরিম.কম’এ একসাথে কাজ করেছি। বেশিদিন হয়নি, দুই কী আড়াই বছর হবে।আমাদের মধ্যে গভীর ভালোবাসার মেলবন্ধন ছিল।যেমন আছে এখন নিগূঢ়’দাকিংবা অন্যদের সঙ্গে।নিগূঢ়’দার সাথেও কম কথা হয় তবে ভালোবাসা যে কমতি নেই সেটা বুঝতে পারি। নিগূঢ়’দা এক আশ্চর্য  মানুষ। আজকে নিগূঢ়’দার কথা থাক।নিগূঢ় দার প্রসঙ্গ টেনেছি এই কারণে যে, সবসময় ভ্রমণে যাওয়া, পাশে থাকা, আড্ডা দেওয়া, শোক দুঃখের আলাপ তাদের(শাওন) মধ্যে চলতো।যাকে বলে ক্লোজ।

মনে পড়ে, চুনিয়ায় একবার ওয়ানগালায় শাওন দা আর নিগূঢ় দা একসাথে এসেছিল।তখন নতুন নতুন তেমন চিনাজানা ছিলো না।নিয়ম করে ভালোমন্দের কথা হয়েছিল।দু’জনে সবসময়ই একসাথে থাকতো।বুঝতে পেরেছিলাম ওয়ানগালায় এসে খুবই উপভোগ করেছে।দু’জনের মধ্যে সাংসারেক বা গারোদের যে ‘র’ মানে খাঁটি জিনিস দেখা বা ছুঁতে পারা ব্যাপারটার প্রতি খুবই আগ্রহ ছিল।বরাবর আজ অবধি আছে।অনেক কিছু নিয়েই আলাপ হয়েছিল, গল্প জমেছিল।তখন আমাদের সম্পর্ক ছিল প্রাথমিক পর্যায়ে। গভীর সম্পর্ক হয়ে উঠেনি।

দুই

দ্বিতীয়বার দেখা হয় হালুয়াঘাট, তার নিজ বাড়িতে।অপ্রত্যাশিতভাবে আমরা ক’জন তার বাড়িতে গিয়েছিলাম তখন রাত সাত কী আটা বাজে ।নিজের পুকুরের মাছ খাইয়েছিল।অপ্রত্যাশিত আগমনে শাওন’দা চমকে গিয়েছিল। তবুও আমাদের সকলকে সাদরে গ্রহণ করেছিল।অসময় আগমনের মধ্যেই আপ্যায়নের কমতি রাখেনি।যদিও দাদা একটু দ্বিধাগ্রস্ত ছিল।কারণ সে ঠিকমতো আপ্যায়ন করতে পারছে কিনা! আমরা খুশি হলাম কিনা! খুশি হয়েছে কিনা! সত্যি কথা কী তখন আমরা সকলেই আনন্দে ছিলাম।এক কথায় দাদাকে প্যারা দিয়েছিলাম।

তিন.
তৃতীয়বার দেখা হয় চুনিয়া গ্রামে।বর্ষীয়ান সাংসারেক ধর্মাবলম্বী জনিক নকরেক এর নাতির বিয়েতে।তখন নিগূঢ় দা এবং শাওন’দা দু’জনে এসেছিল।আমিও সকালবেলা গিয়ে তাদের সাথে দেখাসাক্ষাৎ করি।তখন দাদাদের বললাম চলো একটু জঙ্গলে ঘুরে আসি।একটি বাইকে  তিন জন জঙ্গলে ঘুরতে গিয়েছিলাম।তারপর মান্দি গ্রাম চার পাঁচ টা দেখালাম।ঘুরতে ঘুরতে চলে গেলাম থানারবাইদ গ্রামে।বাড়িতে মানুষজন নেই।তাই আপ্যায়ন করতে পারিনি।কিছু পানীয়জল সুব্যবস্থা করতে পেরেছিলাম।তা দিয়েই কাজ চালিয়ে নিয়েছিলাম।যদিও কমতি ছিল কিন্তুু সেই-সময় সব্বোর্চ চেষ্টা করেও আর কিছু করতে পারিনি।
যে বিয়ে বাড়ি থেকে নিয়ে এসেছিলাম,সেখানেই আবার দিয়ে আসলাম।ব্যক্তিগত কিছু কাজের কারণে দেখা হয়ে উঠেনি। পরবর্তীতে দাদার সাথে আর দেখা হয়নি।মৃত্যু সময়েও দেখা হলো না।আত্মার সম্পর্কের বাঁধ থাকবে চির অটুট।

চার

যখন আমাদের বাড়িতে পানীয়জল(র) চলছিল তখন হঠাৎ করেই শাওন দা জিজ্ঞাসা করলো,”জাডিল, তোমার জন্য একটি কবিতা উৎসর্গ করতে চাই। তোমার কাছে অনুমতি চাইছি”। কথাটি শুনে কিছুটা লজ্জিত হলাম।দাদাকে বললাম,”অনুমতির নেওয়ার প্রয়োজন নেই দাদা। তুমি যদি চাও লিখতে পারো, উৎসর্গ করতে পারো”।এই যে শেষ আড্ডা খোশগল্প, এইখানেই পরিসমাপ্তি। তার পর জানা হয়নি আমার জন্য কবিতা উৎসর্গ করেছিলো কিনা! হয়তো অপ্রকাশিত রয়ে গেছে।দাকে জিজ্ঞাসা করা হয়নি, আমার জন্য কবিতা লিখতে চেয়েছিলো, সেটা লিখেছে কিনা! কোনদিন জানা হবে কিনা, সেটাও জানি না।তবে তুমি যেখানেই থাকো, ভালো থাকো।মাটি দিতে যেতে পারি নাই, সেটাই আফসোস থেকে যাবে।আমি বিশ্বাস করি তুমি বেঁচে থাকবে আমাদের হ্নদয়ে, তোমার কবিতার মাধ্যমে।



 




সম্পাদক : মিঠুন রাকসাম

উপদেষ্টা : মতেন্দ্র মানখিন, থিওফিল নকরেক

যোগাযোগ:  ১৯ মণিপুরিপাড়া, সংসদ এভিনিউ ফার্মগেট, ঢাকা-১২১৫। 01787161281, 01575090829

thokbirim281@gmail.com

 

থকবিরিমে প্রকাশিত কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। Copyright 2020 © Thokbirim.com.

Design by Raytahost
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x