Thokbirim | logo

১লা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১৫ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

জীবন সম্পর্কে পরিস্কার ধারণা থাকতে হবে।।প্রলয় চিসিম

প্রকাশিত : জুলাই ১৮, ২০২০, ১৫:০১

জীবন সম্পর্কে পরিস্কার ধারণা থাকতে হবে।।প্রলয় চিসিম

মি. প্রলয় চিসিম বাংলাদেশি গারোজাতিসত্তার একজন গর্বিত সন্তান। তিনি বর্তমানে বিএমপি (বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ) এর অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। মি. প্রলয় চিসিম ক্লাশ থ্রি পর্যন্ত পড়ালেখা করেছেন চন্দ্রকোণা জিবিসি স্কুলে। তারপর বিরিশিরিতে ক্লাশ ফোর থেকে সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত পড়েন। এরপর অষ্টম শ্রেণি থেকে ঢাকায় চলে আসেন এবং সেন্ট প্যাট্রিকস গ্রামার স্কুলে পড়ালেখা শুরু করেন। তারপর তিনি নটর ডেম কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহে কৃষি অনুষদে গ্রেজুয়েশন করেন এবং বর্তমানে বঙ্গবন্ধু কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, সালনা, গাজীপুর-এ (আগে যার নাম ছিলো ইপসা) সয়েল সাইন্সে এমএস সম্পন্ন করেন। সেখানে থাকা অবস্থায় ১৭তম বিসিএস-এ সুযোগ পান এবং ১৯৯৮ সনে বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিসে যোগদান করেন। থকবিরিম পাঠকদের জন্য অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার প্রলয় চিসিম এবং থকবিরিম সম্পাদকের সাথে আলাপের বিশেষ অংশ পুনরায় প্রকাশ করা হলো।

ছোট বেলার স্বপ্ন…

গারো ছেলেরা যেভাবে বেড়ে ওঠে গ্রামে সেভাবেই বেড়ে উঠি। আমি সেভাবে স্বপ্ন দেখিনি। খেলাধুলা করেছি খুব। পড়ালেখা করারও চেষ্টা করেছি। মা ছোট বেলায় পড়ালেখা করিয়েছেন, কেয়ার নিছেন। মা সরকারি প্রাইমারি স্কুলের টিচার ছিলেন। তখন বাড়িতেই ছিলাম। বাবা বিরিশিরি পিসি নল মেমোরিয়াল হাইস্কুলের টিচার ছিলেন। যখন চন্দ্রকোণা গ্রামের বাড়িতে ছিলাম তখন মা আমাকে পড়িয়েছেন। পড়ালেখার হাতে খড়ি মার কাছে, তারপর বাবার সাথে বিরিশিরি চলে গেলাম, বাবার সাথেই সেখানে থাকতাম। সেখানে ক্লাশ সেভেন পর্যন্ত পড়েছি, তারপর ঢাকাতে চলে আসি। ঢাকায় আমার বড় দাদাবাবু মাইকেল মৃত্যুঞ্জয় রেমা ও বড় বোন প্রকৃতি চিসিমের কাছে চলে আসি। আবার আমি কলেজ শেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার জন্য ময়মনসিংহে চলে যাই।

স্ত্রী কন্যা এবং দিদি দুলাভাইয়ের সাথে প্রলয় চিসিম

দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে বাঁধার সম্মূখিন হয়েছেন…

না দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে বাঁধার সম্মূখিন আমাকে হতে হয়নি। আমি চেষ্টা করেছি আইনের মধ্যে থেকে নিয়মের মধ্যে থেকে কাজ করার জন্য। সব সময় আমি চিন্তা করেছি আমার কাজ যেন জনস্বার্থে হয়, আইন ও বিধি মোতাবেক হয়। আমার সিনিয়র স্যারদের পরামর্শ নিয়েছি। আমি অনেক অভিজ্ঞ লোকদের সহযোগিতা পেয়েছি এবং সর্বোপরি আমার কাজ আমি সব সময় চিন্তা করেই করেছি। এখনও চিন্তা করেই করি….. যেন আমার কাজ জনস্বার্থে হয়।

খ্রিষ্টান পরিবারে বেড়ে ওঠেছেন বলে এই বোধটা কাজ করে কিনা…

অবশ্যই। এখন এই বয়সে এসে, এই সময়ে এসে আরো বেশি উপলব্ধি করি, ফিল করি খ্রিষ্টের আদর্শ বা ফিলোসফি। সব সময় চেষ্টা করি মানুষের সেবা দেওয়ার জন্য; যেখানেই থাকি না কেন, যে পজিশনে থাকি না কেন। আইন ও বিধির মধ্যে থেকে মানুষের সেবা করার জন্য সব সময় চেষ্টা করেছি। এখনও করে যাচ্ছি…

স্মরণীয় ঘটনা…

প্রায়শই গুরুত্বপূর্ণ অপারেশন করেছি। একজন নামকরা ভারতীয় সাইকোলজিস্ট বলেছিলেন, পুলিশ সার্ভিসের দুই বছরের অভিজ্ঞতা অন্য সার্ভিসের বিশ বছরের অভিজ্ঞতার সমান। বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিসের সদস্য হিসেবে নিজেকে একজন গর্বিত সদস্য মনে করি। ১৯৭১ সনের স্বাধীনতা সংগ্রামে শুরুতে সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়েছিল আমাদের বাঙালি পুলিশ সদস্যগণ, রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে। তারই ধারাবাহিকতায় আজকে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনী দেশের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে। সর্বতোভাবে তারা কাজ করে যাচ্ছে দেশের আইন-শৃঙ্খলা ভাল রাখার জন্য। আপনারা জানেন, আইন-শৃঙ্খলা ভাল রাখা উন্নয়নের পূর্বশর্ত। সেটাকে সামনে রেখেই বাংলাদেশ পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে। আমি বাংলাদেশ পুলিশের সদস্য হতে পেরে খুব গর্ব অনুভব করি। পুলিশ সার্ভিসে এসে সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করার সুযোগ পেয়েছি।

গুরুত্বপূর্ণ অপারেশন…

দীর্ঘ চাকরি জীবনে বেশিরভাগ সময়ে আমি অপারেশনাল ইউনিটে কাজ করেছি। অনেক ঘটনার ভিড়ে হঠাৎ করে এই মুহুর্তে একটা মজার ঘটনা মনে পড়ছে, তখন আমি পিরোজপুর জেলার সার্কেল এএসপি; প্রায় রাত বারটার পর অফিসার ফোর্সদের নিয়ে অপারেশনে বের হতাম। একদিন এই রকম অপারেশনে ডাকাত ধরতে গিয়েছিলাম। সেই ডাকাতেকে গ্রেফতারের জন্য কয়েকটি গ্রেফতারী পরোয়ানাও জারি করা হয়েছিল। যথারীতি সোর্স নিয়োগ করে সেই বাড়িতে গেলাম। চারিদিকে ঘেরাও দেওয়া হলো। দায়িত্বরত অফিসারদের আগে থেকেই ব্রিফ করে দেওয়া হয়েছিল। দরজা খোলার জন্য বলা হলেও যথেষ্ট সময়ের পরে এক মহিলা (তার স্ত্রী) দরজা খুলে দিলো। তারপর ঘরে ঢুকে তন্নতন্ন করে খুঁজেও সেই আসামীর খোঁজ পাচ্ছিলাম না। এমনকি খাটের তক্তা খুলেও দেখা হলো। যখন বিফল মনোরথে ফিরে আসব তখন আমার একটু খটকা লাগলো যে খাটের তক্তা খুলে একটু ভালো করে দেখি। তক্তা খুলে দেখলাম সেখানে কয়েকটি খাঁচায় হাস-মুরগী আছে এবং সেই খাঁচাগুলোর পাশে নিঃশব্দে ঘাপটি মেরে সেই আসামী লুকিয়ে আছে। তখন আমার ছোট বেলার লুকোচুরি খেলার কথা মনে পড়ছিল। আসামীকে গ্রেফতার করে আনার সময় এলাকার দু-এক জনের সাথে কথা হলো। আসামী সম্পর্কে একজন খুব মজার ঘটনা আমাদের জানাল। এই আসামী একবার কোথা থেকে একটি গরু চুরি করে নিয়ে এসেছিল, গরুর রঙ ছিল সাদা। লোকটি গরুর গায়ে কালো রঙ লাগিয়ে কালো করে ফেলে এবং সেই গরুটি দড়ি দিয়ে বেঁধে মাঠে ঘাস খাওয়াচ্ছিল। হঠাৎ বেরসিক বৃষ্টি পড়া শুরু করলে গরুর শরীর থেকে কালো রঙ বের হতে থাকে। এটা দেখে এলাকাবাসীর সন্দেহ হয়। পরে আসল ঘটনা বেরিয়ে আসে, গরুটি ছিল চোরাই গরু এবং গরুর রঙ পরিবর্তনের জন্য কালো কলপ লাগিয়েছিল। এ ধরনের অনেক ঘটনারই অভিজ্ঞতা আছে।

বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস এবং গারো ইয়ং যুবক-যুবতী…

গারো যুবক-যুবতীদের মধ্যে অনেকেই প্রতিশ্রুতিশীল, অনেকেই প্রতিভাবান। অনেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করছে, তারা বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিসে যোগ দিয়ে নিজের ক্যারিয়ার তৈরী করতে পারে; তাদের মেধা-মনন কাজে লাগিয়ে সমাজ সেবা করতে পারে। গারো ছেলে-মেয়েদের বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিসে কাজ করা জরুরি এবং প্রয়োজনও আছে।

সস্ত্রীক প্রলয় চিসিম

ছুটির দিনে অবসরে…

বই পড়ার চেষ্টা করি, ইন্টারনেট ব্রাউজ করি। আমার অনেক শখ আছে। খেলাধুলা করি, স্কুল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ফুটবল খেলতাম। ছোটবেলায় বিরিশিরিতে থাকার সময় নিয়মিত ক্রিকেট খেলতাম। একসময় খুব মনোযোগ দিয়ে মার্শাল-আর্ট অনুশীলন করেছি, মেডিটেশনও করতাম——এখনও করি। সুযোগ পেলেই ইন্টারেনেটে ডকুমেন্টরিগুলো দেখি, টেডএক্স-এর লেকচার গুলো দেখি ও শুনি। ক্রিকেট নিয়ে চিন্তা করতে ভালো লাগে। ইনডোরে টেবিল টেনিস, ব্যাডমিন্টন খেলতাম——ভলিবলও খেলি। সুযোগ পেলেই বাস্কেটবলও খেলি। তবে এখন বেশির ভাগ সময় মিউজিক ও লন-টেনিস খেলে অবসর সময় কাটাই।

গানের প্রতি আগ্রহ…

ছোটবেলা থেকে দেখেছি আমার দাদাবাবু মাইকেল মৃত্যুঞ্জয় রেমাকে ভারতীয় ক্লাসিকাল মিউজিকের চর্চা করতে। তিনি ঢাকার কলেজ অব মিউজিক থেকে গ্রেজুয়েশন করেন এবং বাংলাদেশ বেতারের সালগিত্তালের মূখ্য প্রযোজক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে বর্তমানে অবসরে আছেন। ওস্তাদ শুভেন্দ্র চন্দ্র রেমা ওনার বাবা অর্থাৎ আমার মামা অনেক বড় মাপের একজন গুণী শিল্পী ও ওস্তাদ ছিলেন। এছাড়াও ছোটবেলাতে আমার বাবাকে দেখেছি তবলা বাজাতে। আমার দাদু ভালো গান ও কীর্তণ করতেন এবং খুবই ভালো খোল-করতাল বাজাতে পারতেন। আমাদের পরিবারে গানের পরিবেশ ছিল। নিজেকে আনন্দ দেওয়ার জন্য গান করি, গিটার বাজাই। আমি সব ধরণের গানই শুনি।

গারো গান…

শুনি…….শোনা হয়। সব ধরণের গান শুনি। আমি কুষ্টিয়ার এসপি ছিলাম….লালনের আখড়ায় যেতাম। লালনের গান শুনি, যদিও লালনের গানের কথাগুলো অনেক সময় আমি ভালো বুঝি না বা অর্থও সেভাবে বোধগম্য নয়, তবুও সাধারণের চোখে যেভাবে ধরা দেয় সেভাবে কথাগুলোর অর্থগুলো বুঝি, সেভাবেই উপলব্ধি করার চেষ্টা করি।

সাফল্যের মূলমন্ত্র…

লেগে থাকতে হবে… পড়াশোনা করতে হবে। জানতে হবে, শিখতে হবে….. সবচেয়ে বড় কথা সততার সাথে কাজ করে যেতে হবে। আন্তরিকতার সাথে প্রতিনিয়ত কাজ করে যেতে হবে। কাজ করতে গেলে ভুল হবে আবার শুধরিয়ে সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে কাজ করে যেতে হবে। এটাই মূলমন্ত্র।

তরুণদের জন্য পরামর্শ…

জীবন সম্পর্কে পরিস্কার ধারণা থাকতে হবে। জ্ঞান অর্জন করতে হবে। তাহলে সে সামনে এগিয়ে যেতে পারবে। জীবনে প্রতিষ্ঠা পেতে হলে ভালো ডিগ্রীর সার্টিফিকেট ও জ্ঞান দুটোই খুবই প্রয়োজন। প্রথমে দর্শনধারী পরে গুণবিচারী। কবি নজরুলের মতো সিস্টেমের বাইরে গিয়ে জীবনে প্রতিষ্ঠা পেতে হলে, অনেক কষ্ট করতে হয়। কিন্তু কেউ যদি এসএসসি তে ভালো রেজাল্ট করে, সে ভালো কলেজে ভর্তি হতে পারবে। আবার এইচএসসি তে ভালো রেজাল্ট করতে পারলে এবং ভর্তি পরীক্ষায় ভালো করতে পারলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন ভালো বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করতে পারে। আবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভালো সার্টিফিকেট নিয়ে ভালো কোনো প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতে পারে। রাষ্ট্র তার নাগরিকদের প্রতিষ্ঠার জন্য যে সিস্টেম রেখেছে সেটা গারো তরুণ-তরুণীদের পুরোপুরি সদ্ব্যবহার করা উচিত। আমাদের চেতনবোধ অর্থাৎ লেভেল অভ থিংকিং উচুঁতে নিয়ে যেতে হবে। ভালো থাকার জন্য সংগ্রাম করতে হবে। সফলতা ও বিফলতা মুদ্রার এপিঠ এবং ওপিঠ। দুটোকেই জীবনে সমান ভাবে গ্রহনের শিক্ষা অর্জন করতে হবে।

এডিশনাল ডিআইজি প্রলয় চিসিম আর ব্যক্তি প্রলয় চিসিম এই দুয়ের তফাৎ…..

আমরা ইউনিফরমের লোক…..পুলিশ সব সময় চব্বিশ ঘন্টা কর্মরত থাকবে। চেষ্টা করি আমার দ্বারা যেন বাংলাদেশ পুলিশের মান সম্মান ক্ষুন্ন না হয়। সেভাবেই চেষ্টা করি বা আমার দ্বারা যেন সজ্ঞানে ক্ষতি না হয় সে চিন্তা করি, সেভাবেই কাজ করি।  অনেক সময় আমাদের আলাদাভাবে ব্যক্তিগত বলে কিছু থাকে না…..তারপরও নিজস্ব জীবন আছে, পরিবার, আত্মীয়-স্বজন আছে। শত ব্যস্ততার পরও এক সময়ে পরিবারের কাছে ফিরতে হয়।

বড়দিন উদযাপন…

সব সময় চেষ্টা করি গ্রামের বাড়িতে গিয়ে আত্মীয়-স্বজনের সাথে বড়দিন করার জন্য। আগে তো বন্ধু আত্মীয়দের নিয়ে গান-বাজনা, খাওয়া-দাওয়া করে খুব এনজয় করতাম, এখন বড়দিন সম্পর্কে অন্য ধরণের উপলব্ধি কাজ করে….. বয়স হলে হয়ত এরকমই মনে হয়। বড়দিনের দুটি দিক আছে। একটা সামাজিকতা আরেকটি হচ্ছে আধ্যাত্মিকতা। এখন আধ্যাত্মিকতা নিয়ে চিন্তা করতে ভালো লাগে। তবে সামাজিকতারও প্রয়োজন রয়েছে। যিশু কেন এই পৃথিবীতে এসেছিলেন, এই বিষয়টি নিয়ে আমাদের চিন্তা করা উচিত। ইদানিং বড়দিনের সময় আধ্যাত্বিকতার চর্চা না করে অনেক গারো ছেলে-মেয়েরা আনন্দ-উল্লাসকে প্রাধান্য দিয়ে চু খেয়ে মটরসাইকেল চালিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। শুনেছি এ ধরণের ঘটনা মোকাবেলার জন্য বড়দিনের সময় গারো অধ্যূষিত এলাকার সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালগুলো গুরুত্ব দিয়ে জরুরি সেবাদানের জন্য প্রস্তুত থাকে।

চু নিয়ে…

গারো সমাজে যেকোন উৎসব পার্বণে চু এর প্রচলন রয়েছে। আমরা চু বানাই, চু খাই। তবে ব্যক্তিগতভাবে আমার মতামত হলো সবার চু খাওয়া ঠিক নয়। চু খাওয়ার জন্য শিক্ষা ও যোগ্যতার প্রয়োজন রয়েছে। অনেক গারোদেরই সেই যোগ্যতা নেই। অনেক গারোদের স্বাস্থ্যজ্ঞান নেই……….. যাদের ডায়াবেটিস আছে, হার্টের সমস্যা আছে, উচ্চ রক্ত চাপের সমস্যা আছে, কিডনির সমস্যা আছে তারাও রাত জেগে চু খায়। অনেকেই সারারাত সারাদিন চু খেয়ে ভবলীলা সাঙ্গ করে। অনেকেই চু খেয়ে নেশাসক্ত হয়ে কাজে মন না দিয়ে সহায়-সম্পত্তি হারিয়েছে। আমাদের খ্রিষ্টান সমাজে চু খাওয়া নিয়ে ধর্মীয় ব্যাখ্যা সংক্রান্ত বিতর্ক আছে। অনেকে বলেন চু খাওয়া বাইবেলে নিষেধ আছে, আবার অনেকে বলেন নিষেধ নেই। তবে সব খ্রিষ্টান ডিনমিনেশনই মনে করে যে, চু (মদ) খেয়ে মাতলামি করা পাপ। তবে আগেই বলেছি চু খাওয়ার জন্য শিক্ষা ও যোগ্যতার প্রয়োজন আছে। শিক্ষা ও যোগ্যতা থাকলে সাধারণতঃ কেউ কোন কিছুর অপব্যবহার করতে পারে না। তবে খ্রিষ্টান গারো ভাই-বোনদের চু খাওয়ার বিষয়ে বাইবেলে বর্ণিত নূহের ঘটনাটি মনে রাখার জন্য অনুরোধ করবো। নূহ একদিন মদ খেয়ে চেতনবোধ হারিয়ে বেসামাল হয়ে পরিধেয় বস্ত্র সামাল দিতে না পেরে ছেলেদের, আত্মীয়-স্বজনদের কাছে অসম্মানিত হয়েছিলেন। আমরা যেন এরকম অসম্মানিত না হই এ জন্য সর্বদা সতর্ক থাকব।

ঢাকা শহরের ওয়ানগালা নিয়ে…

খুবই ভালো। এনজয় করি……এটা আমাদের সংস্কৃতির একটা অংশ। ধর্মীয় ও সামাজিক এবং অর্থনৈতিক শ্রেণির দৃষ্টিকোণ থেকে ওয়ানগালা নিয়ে মতপার্থক্য থাকতেই পারে। মতপার্থক্য থাকাই স্বাভাবিক………..বৈচিত্র্যের মধ্যেই সৌন্দর্য, এটাই সত্য। ঢাকাতে তিনটা কেন আরো দশ-বারোটা ওয়ানগালা হতে পারে। আমি এটার মধ্যে খারাপ কিছু দেখি না।

 

আরো লেখা

ট্রাফিক হলো একটা কমনসেন্স-এর বিষয়- সার্জেন্ট লিমা চিসিম

যারা লিখতে আসছে তাদের মধ্যে অনেকেই প্রতিশ্রূতিশীল এবং দায়বদ্ধতাও আছে-জেমস জর্নেশ চিরানযারা লিখতে আসছে তাদের মধ্যে অনেকেই প্রতিশ্রূতিশীল এবং দায়বদ্ধতাও আছে-জেমস জর্নেশ চিরান@




সম্পাদক : মিঠুন রাকসাম

উপদেষ্টা : মতেন্দ্র মানখিন, থিওফিল নকরেক

যোগাযোগ:  ১৯ মণিপুরিপাড়া, সংসদ এভিনিউ ফার্মগেট, ঢাকা-১২১৫। 01787161281, 01575090829

thokbirim281@gmail.com

 

থকবিরিমে প্রকাশিত কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। Copyright 2020 © Thokbirim.com.

Design by Raytahost