খেলতে খেলতে একসময় ট্রেভর ও জেসনের মধ্যে তুমুল ঝগড়া বাদে। শরীরিরের সর্বচ্চো শক্তি দিয়ে তারা একে অপরকে কিল ঘুষি মারে। তাদের ঝগড়া দেখে দূর দেখে এক বৃদ্ধ দৌড়ে এসে ধমকের সুরে বলল, “বন্ধ কর তোমাদের ঝগড়া, আর কখনও এভাবে ঝগড়া করবা না।” ট্রেভর ও জেসন ঝগড়া থামিয়ে বৃদ্ধ বার্নির দিকে তাকায়। বন্ধুর মতো দুজনকে দুবাহুতে আকড়ে ধরে তাদের দিকে সে মাথা নিচু করে দেখে। এতে ট্রেভর ও জেসন আর ঝগড়া করতে পারে না। পকেটে হাত ঢুকিয়ে পরস্পরের দিকে চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে থাকে। বৃদ্ধ বার্নি বললো, “চলো আমরা নৌকায় কিছুক্ষণ বসি; আমি তোমাদের জন্য একটি গল্প বলবো।” ট্রেভর ও জেসন বিনয়ের সহিত বৃদ্ধ বার্নির দু’পাশে হাটে। কিছু দূর হেঁটে তিনজনেই একটি নৌকার উল্টোপিটে বসলো।
বৃদ্ধ বার্নি গল্প বলা আরম্ভ করলো, “তোমাদের মতো ছোট থাকতে বড় ভাই ও আমি প্রায়ই চাকা-গাড়ি খেলতাম। জেসন জিজ্ঞেস করলো, “ চাকা-গাড়িটা কী জিনিস?” বৃদ্ধ বার্নি বলল, “এটি সাধারণত লোহা টুকরোর ১.৩ মিটার দিয়ে গোলাকারভাবে বানানো হয়। ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা ভাঙা চালুনির গোলাকার অংশটি বা কাঠ দিয়ে গোলাকার করে বানিয়ে চাকা-গাড়ি হিসেবে খেলে থাকে। আর বড় ছেলেরা লোহার বানানো চাকা-গাড়ি বেশি খেলা করে। ছোট একটি শিক বা লোহা বেকিয়ে ব্রেক বানিয়ে তারা এই ধরণের গাড়ি চালায়।”
একদিন বড় ভাই ও আমি চাকা-গাড়ি খেলছিলাম। বাঁশ দিয়ে তৈরি গাড়িটা আমি খেলছিলাম। বড় ভাই খেলছিলেন লোহার গাড়িটা। তার গাড়িটা চালিয়ে দেখার জন্য আমি চাইলাম। কিন্তু সে আমাকে চালাতে দিলো না তো দিলোই না বরং বলল, “আমি নিজেই ভাল মতো চালাতে পারছি না আর তুমি তো ছোট মানুষ আরো চালাতে পারবে না।” “চালাতে পারবো দাদা, একবার শুধু আমাকে সুযোগ দাও। আমি তোমাকে দেখাবোনে কীভাবে চালাতে হয়।” “না, আমি কোনো মতেই তোমাকে দিতে পারবো না।” রাগ করে আমি বড় ভাই এর বুকে একটা ঘুষি মারি। সেও আমার মাথায় একটা ঘুষি দেয়। এভাবে আমাদের দু’জনের মধ্যে ঝগড়া চলে। একপর্যায়ে বড় ভাই আমাকে পিছন থেকে ধাক্কা দেয়। এতে আমি একটি পাথরের উপরে পরে হাতে আঘাত পায়। ব্যথা যন্ত্রণায় চিৎকার করে কাঁদি। বড় ভাই আমাকে উঠাতে চেষ্টা করে কিন্তু ব্যথায় আমি উঠতে পারছিলাম না। বড় ভাই ভয়ে অনুতপ্ত হয়ে কাঁদো কাঁদো গলায় বার বার স্যারি ভাই স্যারি বলে আমাকে সমবেদনা জানায়।
আমার এ করুণ অবস্থা দেখে একজন পথযাত্রী দৌড়ে আমার নিকটে আসেন যে নাকি প্রাথমিক চিকিৎসা জানতেন। সে আমাকে তার কোলে নিয়ে বাড়িতে নিয়ে যায় এবং মাকে বলে তোমার ছেলের পা ভেঙে গেছে ডাক্তারেরর কাছে নিতে হবে এখনি। এই কথা শুনে আমি প্রচুর কান্না করি। মাও অনেক মন খারাপ করে। তারা ডাক্তারের কাছে আমাকে নিয়ে যায়। ডাক্তার আমার জামাহাতা কেটে ভাঙ্গা হাতটি দেখে বলল, “খোকা কেঁদো না ভাল হয়ে যাবে”। এক্সরে করলে জানতে পারলাম আমার হাতের কবজি একটু নড়ে গেছে আর দুটি হাড় ভেঙেছে। ডাক্তার আমার হাতটি প্লাসটার করে দেন। কিন্তু দুঃখের বিষয় দুবার অস্ত্রোপচার করার পরও আমার ভাঙা হাতটি আর সোজা হলো না। এই যে দেখ আমার বাম হাত ১৩ সেন্টিমিটার ডান হাত থেকে বেঁকে আছে। বৃদ্ধ বার্ণির প্রতি সহানুভুতি দেখিয়ে ট্রেভর বলল, “দাদু, তোমার ভাঙা হাতের জন্য আমার কষ্ট লাগছে । তোমার ভাঙা হাতের করুণ কাহিনি বলার জন্য অনেক ধন্যবাদ।” বার্নি বলল, “হ্যাঁ সত্যি অনেক বছর আগে আমাদের দুভাইয়ের মধ্যে ঝগড়ার কারণেই আমার বাম হাতটি এখন পর্যন্ত বেঁকে আছে।”
জেসন বলল, “তাহলে তুমি এর জন্যই আমাদের ঝগড়া থামিয়ে ছিলে তাই না, দাদু?” তুমি ঠিকই বলেছে দাদু, আসলে কি জানো দাদুরা, যখনই আমি দেখি কোনো ছেলেমেয়েরা ঝগড়া করছে; তখন আমার ভয় লাগে তারাও হয়তো আমার মত আঘাত পাবে। সারা জীবন কষ্ট পাবে। তাই এর জন্য ঝগড়া করা দেখলে আমি থামিয়ে দেয়। তোমাদেরকেও আজকে থামালাম। দাদুরা আজ থেকে সবসময়ই মনে রাখবে রেগে গেলে মাথা ঠান্ডা রাখতে হয়; কখনোই ঝগড়া করতে নেই। কারণ এতে ভাল ফল আসে না। তোমারই এখন বিচার বিশ্লেষণ কর ঝগড়া করা ভাল কাজ কি-না।
বৃদ্ধ বার্নির কথায় ঠিক। রেগে গেলে আমাদের ঝগড়া করতে নেই। কারণ তর্কে জরিয়ে রেগে ঝগড়া করা কোনো সময়ই মানুষের জীবনে মঙ্গলকর কিছু বয়ে আনতে পারে না।
মূল: আংকেল আর্থার
প্রচ্ছদ সংগৃহীত
‘প্রমোদ মানকিন- আমার কিছু স্মৃতি।। মিঠুন রাকসাম’
: ২০০৭ সাল ঢাকা শহরের দুই ওয়ানগালা ঢাকা ওয়ানগালা দুভাগ হয়ে......বিস্তারিত
-
Git-bibal ।। Motendro Mankhin
: Git-bibal Bijak-samjak dongja somai ongkuja Migaru-mikopba min.nin minkuja Nang nokchi...
-
প্রমোদ মানকিন- আমার কিছু স্মৃতি।। মিঠুন রাকসাম
: ২০০৭ সাল ঢাকা শহরের দুই ওয়ানগালা ঢাকা ওয়ানগালা দুভাগ হয়ে...
-
স্বাধীনতা পুরস্কার-২০২৪ লাভ করায় অরন্য চিরানকে সংবর্ধনা
: দেশের সর্বোচ্চ জাতীয় বেসামরিক পুরস্কার ‘স্বাধীনতা পুরস্কার-২০২৪ লাভ করায় অরন্য...
-
তর্পণ ঘাগ্রার একগুচ্ছ গারো লোকছড়া
: 1 Do.o wakki-chongprot. Susumimani mimang kam.o, Wak mat.chu ra.sotana. Bijak-songa...
-
শরৎ ম্রং-এর প্রথম উপন্যাস-শুধু তোমার জন্য
: প্রকাশিত হয়েছে কবি ও গল্পকার শরৎ ম্রং-এর প্রথম উপন্যাস-শুধু তোমার...
-
সেকালের জলছত্র ও গারোদের উত্থান।। মোহন লাল দাস
: সুপ্রিয় পাঠক সবাইকে প্রীতি ও শুভেচ্ছা। আজ থেকে ষাট উর্ধ্ব...
‘Git-bibal ।। Motendro Mankhin’
: Git-bibal Bijak-samjak dongja somai ongkuja Migaru-mikopba min.nin minkuja Nang nokchi......বিস্তারিত
‘প্রমোদ মানকিন- আমার কিছু স্মৃতি।। মিঠুন রাকসাম’
: ২০০৭ সাল ঢাকা শহরের দুই ওয়ানগালা ঢাকা ওয়ানগালা দুভাগ হয়ে......বিস্তারিত