ওরা এখনো খুঁজে ফেরে
ওরা এখনও খুঁজে ফেরে,
ত্রিশ লক্ষ মানুষের রক্ত
চুষে চুষে এখনও ক্ষান্ত হয়নি।
শান্ত হয়নি ওদের শোষন
নির্যাতনের বুভুক্ষু অন্তর।
নেকড়ে-বাঘের লোলপ দৃষ্টি
হিংস্র থাবা, রক্তাক্ত রাক্ষুসী মুখ
গ্রাস করতে চায়,
লুটে নিতে চায় এখনও
আমার মা-বোনের ইজ্জত সম্ভ্রম
অবশিষ্টাংশটুকু।
সেই উন্মাদ নর পিশাচ, কাপুরুষ
বেশ ভূষা পোশাক আর ধর্মের কাহিনি
আওড়িয়ে টানে সহজ, সরল আমাকে।
ওরা এখনও খুঁজে ফেরে
হিংস্র থাবা তুলে,
সংসদে, সারা বাংলায়,মা-মাটি মানুষকে।
সম্প্রতিকে
মহৎ তোমাকে হাতছানি দিয়ে ডাকছে
তুমি এসো।
আমাদের কল কল ঝর্না ঘেঁষে যাওয়া
পাহাড়ের আঁকা বাঁকা বন্ধুরময় ঝোপঝাড়ের সরু পথ দিয়ে।
গভীর অরণ্যের নির্জন নিঃশব্দ মাচাং ঘরে।
এইখানে বসে তুমি দেখতে পারবে
পাহাড় আকাশের এক অর্পূব মিলনের
স্নিগ্ধ তীর্থ ভূমি।
এখানকার মানুষ কোন রাজনীতি
কূটনীতি, প্রতারণা মিথ্যের মতো জটিল
শব্দের সাথে পরিচিত নয়।
অতএব তুমি এসো
নিঃসন্দেহে নির্বিগ্নে রেনেসার ধুলি মেখে
তুমি কি পারবে ?
নিন্দুক আর ক্ষুদ্র স্বার্থের জলাঞ্জলি দিয়ে
আপন মহিমায় উদ্ভাসিত হতে?
তোমার পরশে যদি পাথর সোনা হয়ে যায়
ক্ষতি কি?
আর তুমিই হবে
সেই গগণ চুম্বি দ্যা স্ট্যাচু অব লিবার্টি
এ বিশ্বের পাতায়।
দ্বিধা
আমি কবি নই,
তবু ছন্দ আসে
শব্দ সাজাই।
গীতিকার নই,
তবু সুরের মাধুরী মেশাই বাক্যে ।
শিল্পি নই,
জানি না গানের সুর তাল, লয়, মাত্রা
তবু সুর আসে গুন গুন করি ।
এ কোন ঘোড়ারোগ জানি না,
এই না জানার মাঝেই
চলছে জীবন,
শেষ হবে নিঃশ্বাসও।
হে নারী
হে নারী
তুমি বড় বিচিত্র।
হাজার পূজতেও হয়নি তুষ্ট ,
বিভোর হাজার স্বপ্নে তুমি ,
দেবতাও দেখে মনে হয় রূষ্ট ।
এত ছলা কলা হায়
বসত তোমার মনে।
এ অবোধ আমি জানি না
তুমি কোথায় কোনখানে।
তুমি থাকো পাতায় পাতায়
আমি থাকি ডালে।
মিলনের মাঝে বিরহের সুর
তোমার এ কোন ইন্দ্রজালে।
মমতায় ঘেরা মন তোমার
মাতৃত্বের অরূপ রতন।
দাহ্য তুমি জ্যান্ত আমায়
মানে না কোনো মৃত্যুর বারণ।
ওগো সিমসাং
ওগো সিমসাং
তুমি দুঃখ করো না
এইখানে জীবনানন্দ বা
মধূসুদন নেই বলে।
হতেও চেয়ো না ধানসিঁড়ি
বা কপোতাক্ষ নদ।
তোমার মাহিমায় তুমি
উদ্ভাসিত হবে,
তুমিও এক অনন্যা।
শুধু জানে না, এখানকার কোনজন
পরেনি এখনও
কোন মাহিমার দুটি চোখ।
তুমি দুঃখ করো না
ধৈর্য ধর, অপেক্ষা কর
অপেক্ষার প্রহর অনেক দীর্ঘ।
সত্যের মর্মবাণী
দেখিনি শুধু কুমিল্লার শালবনের বৌদ্ধ বিহার
বৌদ্ধ মন্দির, বৌদ্ধ মূর্তি
বৌদ্ধের সেই অমৃত বাণী,
মর্মার্থ মরমে মরমে উপলদ্ধি
করেছি বারংবার” জীবে দয়া
করে যেই জন, সেইজন সেবিছে
ঈশ্বর।
উপলব্ধি করেছি “জীব হত্যা মহাপাপ”,
“অহিংসা পরম ধর্ম”।
এমন নিগৃঢ় তত্ত্বের বেড়াজালে
নিজেকে যখন অসহায় অধম
অবোধ ভেবে ভেবে নাজেহাল
তখন পাশের এক অশূর কূলের
দর্শনার্থী , ফিস ফিস করে বলছে
এটা দেখা আমাদের পাপ।
ধর্মের ধর্মান্ধতায় গোড়ামীর তীব্রতায়
সত্যের মর্মবাণী আর আমি বড়ই মর্মাহত।
ধিক তোমাকে, তোমার অস্তিত্ব,
আমার সুখ শান্তি সম্প্রীতির
বিশ্ব গড়ার অঙ্গীকারের স্বপ্ন উড়ে
যায় দূর বহূ দূর ।
আমার সবুজ গ্রামখানি
শান্ত স্নিগ্ধ সবুজ শ্যামল
ফুলে ফলে ভরা পাখিদের
বিচিত্র কলরব রতিলা রেমা,
সতিলা রেমা, মাধবী স্নাল, মাধুরী চাম্বুগং
নির্বিঘেœ অবাধ বিচরণ,
নির্মল হাসি আনন্দে ঘেরা
আমার সবুজ গ্রামখানি
আজ বড়ই বিপন্ন।
কত স্মৃতি ঘেরা সুভনী রেমা, নরেন্দ্র চামুগং
এর কর্ষ্টাজিত মাচাং ঘরটি বিস্মৃতির
অতল গর্ভে বিলীন।
রাংকেত স্নাল, শচীন রেমা
সীতা নাথ চামবুগং
এর প্রতিপত্তির দাপট
গাইমারা গ্রামে আজ আর নেই।
নেই ওয়াচি চুগান, সংক্রান্তির
বিভিন্ন উৎসব পার্বণের কলরব
মুখর, উৎসবের খাবি
হাজিয়া গ্রিকার হৃদয় কাড়া
বাদ্যযন্ত্র রাং খারামের, সুরতাল লয়।
নয়ন রেমা, নগেন্দ্র মানকিন,
ডেবু মানকিন, বিরল রেমা, সুবেন চামবুগং,
রমেনদ্র রেমার হাস্য রসাত্মক সুনিপুণ অভিনয় মার্জেন
চামবুগংয়ের বলিষ্ঠ সুঠাম দেহে,
স্ফি-মিলামের যুদ্ধের নৈপূণ্যতা,
বাদক পরিচালক নবেশ স্নালের
হারমোনিয়াম ও প্রদীপ চিসিমের ঢোলের
সুরের মূর্ছনায় মন আজো উদাস হয়ে যায়,
বিস্মৃতির অটল তলে সেই সেরেনজিং পালা গান।
সবুজ শ্যামল সু শোভিত বিধাতার
সুনিপুন হাতের পাহাড় বনভূমি আজ বিদগ্ধ,
তোমার স্বার্থের কড়াল গ্রাসে
চিনা মাটি উত্তোলনের নামে অনিয়ম অবৈধ্য,
রাজনৈতিক স্বেচ্ছাচারিতা স্খলনে।
নামি-বেনামি, কোাম্পানি, কহিনূর, পিসিআই,
ফুয়াং, মোমেনশাহী, জারদিন, চায়না বাংলা,
বেঙ্গল,কমল, ফালু স্বার্থের বেড়াজালে অন্ধ, নির্দয়, নিষ্ঠুর, বিবেকবর্জিত।
তুমি ফিরে দিতে পারবে-
দিলীপ মানখিন, লুকুস রিছিল, জুয়েল তজু, নীরোদ হাজং
গীরেন্দ্র মানখিনের তাজা প্রাণ ?
তোমার অনিয়ম, অবৈধ্য, অপরিকল্পিত চিনামাটি উত্তোলনে
ভেঙেছে এদের পরিবারের সুখের স্বপ্ন,
মুছে যায় চিরদিনের মত কপালের সিঁথির সিঁদূর ।
ফিরে দিতে পারবে, উঠোন ঘেঁষা মাটি উত্তোলনে
গভীর খাদে পড়ে মাধবী স্নালের ফুটফুটে অবুঝ শিশুটির প্রাণ ?
থামাতে পারবে মায়ের আর্তনাদ ?
নববধূর আহাজারি,সুনশান পরিবারের নীরবতা
দেখার বুঝি কেউ নেই, কেউ নেই ।
দেবেশ রেমা : ১৯৭৩ সালের ১০ নভেম্বর জন্ম। প্রকাশিত গ্রন্থ : খুরাংনি চিদারে (আচিক থেকে বাংলা ভাষায় অনূদিত)
‘১ সেপ্টেম্বর শুক্রবার থকবিরিম-এর যুগপূর্তি উৎসব অনুষ্ঠান’
: এক এক করে বার বছরে পদার্পণ করলো গারো সাহিত্যের পত্রিকা ......বিস্তারিত
-
রাত পোহালেই উদযাপিত হতে যাচ্ছে গারো জনগোষ্ঠীর উৎসব ওয়ানগালা
: রাত পোহালেই উদযাপিত হতে যাচ্ছে গারো জনগোষ্ঠীর সামাজিক সাংস্কৃতিক ও...
-
আজ লেখক ও চিন্তক আলবার্ট মানকিন-এর স্মরণসভা ও স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠান
: মধুপুর গড়াঞ্চলের আদিবাসী নেতা, চিন্তাবিদ, লেখক, সমাজকর্মী, এনজিও কর্মী আলবাট...
-
গুলশান বনানী ওয়ানগালা ২১ অক্টোবর শনিবার
: গুলশান বনানী ওয়ানগালা ২১ অক্টোবর শনিবার আদি সাংসারেক গারো জাতিগোষ্ঠীর...
-
১ সেপ্টেম্বর শুক্রবার থকবিরিম-এর যুগপূর্তি উৎসব অনুষ্ঠান
: এক এক করে বার বছরে পদার্পণ করলো গারো সাহিত্যের পত্রিকা ...
-
রে রে : হায়রে আমার কাঞ্জিয়া ।। নীলু রুরাম
: সমর সাংমার রেরে নিয়েই শুরু করি তবে একটু আলাদা। আমাদের...
-
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের নিরাপদ ব্যবহার ।। জাডিল মৃ
: এক. সময় স্রোতের সাথে আবাহমান ছুটে চলা প্রযুক্তির উন্নতি, মানব...
‘রাত পোহালেই উদযাপিত হতে যাচ্ছে গারো জনগোষ্ঠীর উৎসব ওয়ানগালা’
: রাত পোহালেই উদযাপিত হতে যাচ্ছে গারো জনগোষ্ঠীর সামাজিক সাংস্কৃতিক ও......বিস্তারিত
‘১ সেপ্টেম্বর শুক্রবার থকবিরিম-এর যুগপূর্তি উৎসব অনুষ্ঠান’
: এক এক করে বার বছরে পদার্পণ করলো গারো সাহিত্যের পত্রিকা ......বিস্তারিত