মানবেন্দ্র নারায়ন লারমা সকল আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন বলে মন্তব্য করেছেন ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২১ সকাল ১১.০০ ঘটিকায় বিপ্লবী মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমার ৮২তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে এক অনলাইন আলোচনায় অংশ নেয়া দেশের বিশিষ্টজনরা। অনুষ্ঠানটি বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের ফেসবুক পেইজ থেকে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়। সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং এর সঞ্চালনায় ও সভাপতিত্বে উক্ত অনলাইন আলোচনায় শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সহ সাধারণ সম্পাদক পল্লব চাকমা। ভার্চুয়ালি আলোচনায় অন্যান্যের মধ্যে আলোচক হিসেবে অনুষ্ঠানে যুক্ত ছিলেন তত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও বিশিষ্ট মানবাধিকারকর্মী সুলতানা কামাল, বরণ্যে রাজনীতিবিদ ও ঐক্য ন্যাপের সভাপতি পঙ্কজ ভট্টাচার্য, পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সহ সভাপতি ও সাবেক সাংসদ ঊষাতন তালুকদার, কবি ও লেখক সোহরাব হাসান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক ড. মেসবাহ কামাল, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. রানাদাশ গুপ্ত, এএলআরডির নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা, আদিবাসী বিষয়ক সংসদীয় ককাসের টেকনোক্রেট সদস্য জান্নাত ই ফেরদৌসী, বিএনপিএস এর উপ-পরিচালক শাহানাজ সুমি, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সদস্য চঞ্চনা চাকমা, বাংলাদেশ আদিবাসী ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সাধরণ সম্পাদক অলিক মৃ প্রমুখ ।
মেসবাহ কামাল বলেন, সারা বিশ^ আধুনিকতার ৫০০ বছরে অতিক্রান্ত করছে। বিশ্বের বড় বড় রাষ্ট্রগুলো সংখ্যালঘু জাতিগোষ্ঠির বৈচিত্র্যতাকে অস্বীকার করছে। বিশেষ করে আদিবাসীদের অধিকার ও তাদের বৈচিত্র্যতাকে অস্বীকার করা বৃহৎ রাষ্ট্রের কাছে এটা অভিশাপ বলে মনে করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই শিক্ষক। বাংলাদেশর ক্ষেত্রেও সেটা পুরোপরি লক্ষ্যনীয়। কেননা যে আশা আকাক্সখা নিয়ে এদেশের আদিবাসীরা মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেিেছল সে আশা আকাক্সখা পুরোপুরি উপক্ষিত।
সোহরাব হাসান বলেন, মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা একজন ভিন্ন প্রকৃতির নেতা ছিলেন। তিনি শুধু পাহাড়ী মানুষের অধিকারের কথা বলেননি, তিনি সকল জাতিসত্বার কথা বলেছেন। একটি সমতাভিত্তিক বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে এম এন লারমা সংগ্রাম করেছেন। পাশাপাশি আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন বলেও মন্তব্য করেছেন প্রথম আলোর সিনিয়র এই সাংবাদিক।
সুলতানা কামাল বলেন, মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমার আদর্শ ধারণ করে তরুণ প্রজন্মকে আরো বেশি উজ্জীবিত হতে হবে। এম এন লারমা নিপীড়িত মানুষের কন্ঠস্বর ছিলেন। আদিবাসীদের সাংবিধানিক স্বীকৃতির দাবি জানিয়ে তিনি আরো বলেন, আদিবাসী এদেশে সবচেয়ে পশ্চাৎপদ, সবচেয়ে অনগ্রগামী। তাই তাদেরকে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দেওয়া অত্যন্ত জুরুরী। একারণে মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা সকল মেহনতি মানুষের কথা সংবিধানে অন্তভূক্তির জন্য স্বোচ্চারভাবে দাবি তুলেছিলেন।
পঙ্কজ ভট্টাচার্য বলেন, এম এন লারমা একজন ব্যতিক্রমধর্মী জাতীয় নেতা ছিলেন। তিনি সমগ্র জুম্ম জাতিকে সংগ্রামে উদ্বুদ্ধ হওয়ার পাশাপাশি দেশের গোটা বৃহৎ বাঙালি সমাজকেও প্রভাবিত করেছিল। নারীদেরকে সংগ্রামে উদ্বুদ্ধকরণের মধ্য দিয়ে তিনি গড়ে তুলেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম মহিলা সমিতি
ঊষাতন তালুকদার বলেন, প্রগতিশীল পরিবারের জন্ম নেয়া এই ক্ষণজন্মা মহাপুরুষটি ছিলেন প্রতিবাদী, সাহসী, সংগ্রামী, দৃঢচেতা ও বিচক্ষণ প্রতিভাবান। প্রতিবাদী ছিলেন বলে তিনিই প্রথম কাপ্তাই বাঁেধর বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ সংগ্রাম করেছিলেন। যার কারণে পাাকিস্তান সরকার কর্তৃক তিনি গ্রপ্তার হন। কাপ্তাই বাধের ফলে ৫৪ হাজার একর ধাণ্য জমি পানিতে তলিয়ে যায়, প্রায় ৬০ হাজার পাহাড়ী উদ্বাস্তু হয়ে পাশের দেশ অরুনাঞ্চলে নাগরিকত্বহীন অবস্থায় বসবাস করতেছেন। যা তাদেরকে এখনো সে দেশের নাগরিক হিসেবে স্বীকার করা হয়নি। ১৯৯৭ সালে সম্পাদিত পার্বত্য চুক্তি এখনো পুরোপুরি বাস্তবায়ন না হওয়ায় পাহাড়ীদের মধ্যে হতাশা ও উৎকন্ঠা বিরাজ করছে। তাই তিনি পার্বত্য চুক্তি পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে জোর দাবি জানান।
এদেশের মানবাধিকারের লড়াই যতদিন থাকবে ততদিন এমএন লারমা আমাদের মাঝে থাকবেন বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানাদাশ গুপ্ত।
শামসুল হুদা বলেন, এদেশ বহ ভাষার, বহ বর্ণের, বহ জাতি ও বহু সংস্কৃতির বৈচিত্র্যপূর্ণ দেশ। স্বাধীনতার ৫০ বছরেও এদশে আদিবাসীদের অধিকার স্বীকৃতি মেলেনি। এ কারনে এমএন লারমা সংবিধান রচনার প্রাক্কালে সকল মানুষের অধিকারের কথা সংবিধানে লিপিবদ্ধ করার দাবি জানিয়েছেন।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, এই মহান নেতা মানবেন্দ্র নারায়ন লারমা ১৯৩৯ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর রাঙামাটি শহরের অনতিদূরে সেই সময়ের এক বর্ধিষ্ণু গ্রাম মহাপূরমের এক মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৫৮ সালে রাঙামাটি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় হতে ম্যাট্রিক পাশ করেন। এরপর তিনি চট্টগ্রাম সরকারি কলেজ থেকে ১৯৬০ সালে আইএ পাশ করেন। ১৯৬৫ সালে তিনি বিএ পাশ করেন। এরপর তিনি ১৯৬৮ সালে বিএড পাশ করেন এবং ১৯৬৯ সালে এলএলবি পাশ করেন। তাঁর উদ্যোগে ১৯৭২ সালে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি গঠিত হয়। জনসংহতি সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হিসেবে বীরেন্দ্র কিশোর রোয়াজা ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে তিনি নির্বাচিত হন। ১৯৭৩ সালে বাংলাদেশের প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন। ১৯৭৩ সালে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
।। থকবিরিম বার্তা
‘১ সেপ্টেম্বর শুক্রবার থকবিরিম-এর যুগপূর্তি উৎসব অনুষ্ঠান’
: এক এক করে বার বছরে পদার্পণ করলো গারো সাহিত্যের পত্রিকা ......বিস্তারিত
-
রাত পোহালেই উদযাপিত হতে যাচ্ছে গারো জনগোষ্ঠীর উৎসব ওয়ানগালা
: রাত পোহালেই উদযাপিত হতে যাচ্ছে গারো জনগোষ্ঠীর সামাজিক সাংস্কৃতিক ও...
-
আজ লেখক ও চিন্তক আলবার্ট মানকিন-এর স্মরণসভা ও স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠান
: মধুপুর গড়াঞ্চলের আদিবাসী নেতা, চিন্তাবিদ, লেখক, সমাজকর্মী, এনজিও কর্মী আলবাট...
-
গুলশান বনানী ওয়ানগালা ২১ অক্টোবর শনিবার
: গুলশান বনানী ওয়ানগালা ২১ অক্টোবর শনিবার আদি সাংসারেক গারো জাতিগোষ্ঠীর...
-
১ সেপ্টেম্বর শুক্রবার থকবিরিম-এর যুগপূর্তি উৎসব অনুষ্ঠান
: এক এক করে বার বছরে পদার্পণ করলো গারো সাহিত্যের পত্রিকা ...
-
রে রে : হায়রে আমার কাঞ্জিয়া ।। নীলু রুরাম
: সমর সাংমার রেরে নিয়েই শুরু করি তবে একটু আলাদা। আমাদের...
-
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের নিরাপদ ব্যবহার ।। জাডিল মৃ
: এক. সময় স্রোতের সাথে আবাহমান ছুটে চলা প্রযুক্তির উন্নতি, মানব...
‘রাত পোহালেই উদযাপিত হতে যাচ্ছে গারো জনগোষ্ঠীর উৎসব ওয়ানগালা’
: রাত পোহালেই উদযাপিত হতে যাচ্ছে গারো জনগোষ্ঠীর সামাজিক সাংস্কৃতিক ও......বিস্তারিত
‘১ সেপ্টেম্বর শুক্রবার থকবিরিম-এর যুগপূর্তি উৎসব অনুষ্ঠান’
: এক এক করে বার বছরে পদার্পণ করলো গারো সাহিত্যের পত্রিকা ......বিস্তারিত