পূর্ব প্রকাশের পর…
বর্তমানে এত নিখুঁতভাবে হিসেব রাখা সম্ভব হয় না কিন্তু যথা সাধ্য চেষ্টা করে ফিরিয়ে দেবার। এছাড়াও আরও একটি প্রথা গারো সমাজে খুব নিষ্ঠার সাথে পালন করা হয় তা হল জাসি চাআ বা পা খাওয়া অনুষ্ঠান। বিয়ে বা অন্য যে কোন অনুষ্ঠানে আত্মীয় বা যে কেউ কোন শূকর বা ছাগল সাহায্য দিলে মূল অনুষ্ঠানের পরের দিন আবার খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয় এবং পশুটির একটি পা সাহায্যকারীকে ফেরত পাঠানো হয়। গারোদেরএইসামাজিকমূল্যবোধএখনশক্তভাবেবিদ্যমান।আত্মীয়তার সম্পর্ক ভালো রাখবার জন্য গারোরা সামাজিকতাকে অত্যন্ত গুরুত্ব দেয় এবং গোত্রগত বন্ধনও খুবই সমৃদ্ধ।
খাবার খেয়ে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিলাম , গ্রামের সবাই খেতে বসছে এক এক করে। বাড়ির দিকে রওনা হব বলে বিদায় নিচ্ছি এইসময় পরিচয় হল সেই গ্রামের নকমা বা গাঁও বুড়ো অর্থাৎ গারো সমাজের প্রধান একনিষ্ঠ ব্যাক্তির সাথে। উনার নাম বেঞ্জামিন মারাক, বয়স আনুমানিক ষাট ছুঁইছুঁই করছে। নকমা সাধারণত গ্রামের মানুষদের দ্বারা নির্বাচিত হন এবং সমাজ ও গ্রামের সাধারণ মানুষ সবার সমস্যা সমাধান করে থাকে, সালিশিস ভার ব্যবস্থা ও বিচার করেন এবং তার মতামতকেই সর্বোত্তম হিসেবে ধরা হয়। যেহেতু উনি সমাজের সন্মানীয় ব্যাক্তি তাই উনাকে খুতুপ বা পাগড়ি পরানো হয়েছে সাথে যুক্ত করা হয়েছে মোরগের লেজের পালক দিয়ে তৈরি দোহমি।তাঁর পরনে ছিল সাদা ধুতি। ধুতি পরার চল আছে গারো সমাজে এবং তাঁরা এটিকে মার্জিত পোশাক মনে করে। উনি আমার কাছে জানতে চাইলেন আমাদের গ্রামেও নকমা আছে কিনা। উনি আরও জানতে চাইলেন উত্তর বঙ্গের মান্দিরা অর্থাৎ গারোরা নিজেদের সংস্কৃতি ধরে রেখেছে কিনা এবং নিজেদের ভাষা, গান,নাচ এসব চর্চা এবং গারো রীতিনীতি সঠিকভাবেপালন করে কিনা, আমি যথাযথ উত্তর দিলাম তাকে। তাঁকে জানালাম আমাদের উত্তরবঙ্গে এখন একটাই প্রধান সমস্যা সেটা হল ঐতিহ্যিক মাতৃসমাজ ক্রমশ হারিয়ে যাচ্ছে। বর্তমান প্রজন্মের অনেক ছেলেমেয়েরাই এখন মায়ের পদবির বদলে বাবার পদবি ব্যবহার করে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সরকারি অফিসের কর্মচারীরা অনেকেই গারোদের মাতৃতান্ত্রিক সমাজের ব্যাপারে অবগত নন তাই দরকারি কাগজপত্রে পিতা এবং সন্তানের পদবি এক করে লিখে দেন। এতে কাগজপত্র ঠিক করবার জন্য তাঁদের হয়রানিও হতে হয়, এই কারনেও অনেকে পিতামাতাই সন্তানের জন্য পিতার পদবি ব্যবহার করে। উনি আরও অনেক কিছুই বললেন কিন্তু আমি অনেক কথাই বুঝে উঠতে পারিনি। শেষে ক্ষমা চেয়ে বললাম আমি ঠিক পারি না গারো বলতে, বেশ দুঃখ ও আক্রোশের সাথে বললেন নিজের ভাষা বলতে না পারাটা কিন্তু লজ্জার, নিজের জাতি ও নিজের ভাষাকে অবহেলা করা ঠিক না। আমি নির্লজ্জের মত মাথা নেড়ে জানালাম যে আচ্ছা শিখে নেব খুব তাড়াতাড়ি। একটা প্রণাম ঠুকে বিদায় নিলাম।
চলবে…
কভার ছবি ব্লেজিং ব্লেজ চিরান।
লেখক পরিচিতি : সঙ্গীতা এম সাংমা কোচবিহার জেলার পুটিমারি গ্রামের বাড়ি। মাতা – নন্দিতা সাংমা পিতা – সঞ্জীব কুমার চিসিম। তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করছেন।
‘১ সেপ্টেম্বর শুক্রবার থকবিরিম-এর যুগপূর্তি উৎসব অনুষ্ঠান’
: এক এক করে বার বছরে পদার্পণ করলো গারো সাহিত্যের পত্রিকা ......বিস্তারিত
-
১ সেপ্টেম্বর শুক্রবার থকবিরিম-এর যুগপূর্তি উৎসব অনুষ্ঠান
: এক এক করে বার বছরে পদার্পণ করলো গারো সাহিত্যের পত্রিকা ...
-
রে রে : হায়রে আমার কাঞ্জিয়া ।। নীলু রুরাম
: সমর সাংমার রেরে নিয়েই শুরু করি তবে একটু আলাদা। আমাদের...
-
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের নিরাপদ ব্যবহার ।। জাডিল মৃ
: এক. সময় স্রোতের সাথে আবাহমান ছুটে চলা প্রযুক্তির উন্নতি, মানব...
-
বর্তমান সময়ের তুমুল জনপ্রিয় শিল্পী দিশন অন্তু রিছিলের জন্মদিন আজ
: বর্তমান সময়ের তুমুল জনপ্রিয় শিল্পী দিশন অন্তু রিছিলের জন্মদিন আজ।...
-
বীর মুক্তিযোদ্ধা দেবতোষ যেত্রা আর নেই
: হালুয়াঘাট উপজেলার ৪নং সদর ইউনিয়নের কালিয়ানীকান্দা গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা পাস্টার...
-
কেনিয়ার কৃষকরা হাতি তাড়াচ্ছে মৌমাছি দিয়ে
: কেনিয়ায় হাতির তাণ্ডব থেকে ফসল রক্ষায় ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছে কৃষকরা।...
‘১ সেপ্টেম্বর শুক্রবার থকবিরিম-এর যুগপূর্তি উৎসব অনুষ্ঠান’
: এক এক করে বার বছরে পদার্পণ করলো গারো সাহিত্যের পত্রিকা ......বিস্তারিত
‘১ সেপ্টেম্বর শুক্রবার থকবিরিম-এর যুগপূর্তি উৎসব অনুষ্ঠান’
: এক এক করে বার বছরে পদার্পণ করলো গারো সাহিত্যের পত্রিকা ......বিস্তারিত