Thokbirim | logo

২৬শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | ১১ই ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ

সংবাদ সম্মেলনে আদিবাসী নারী ধর্ষণের সঙ্গে জড়িত অপরাধীর মৃত্যুদণ্ড দাবি

প্রকাশিত : আগস্ট ২০, ২০২১, ১৯:৩১

সংবাদ সম্মেলনে আদিবাসী নারী ধর্ষণের সঙ্গে জড়িত অপরাধীর মৃত্যুদণ্ড দাবি

১৪ আগস্ট সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর থানাধীন সীমান্তবর্তী রাজাই গ্রামে আদিবাসী তরুণীকে (২৩) ধর্ষণের প্রতিবাদে ও ধর্ষকের দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে অনলাইন সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (২০ আগস্ট ২০২১) সকালে বাংলাদেশ হাজং ছাত্র সংগঠন তাদের তাদের ফেসবুক পেইজে এই অনলাইন সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে । সংবাদ সম্মেলনটি সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আশীষ হাজং। মূল বক্তব্য পাঠ করেন যুগ্ম-সাংগঠনিক সম্পাদক অন্তর হাজং।

সংহতি বক্তব্যে আদিবাসী নারী নেটওয়ার্কের সদস্য সচিব চঞ্চনা চাকমা বলেন,  হাজং নারীকে ধর্ষণের ঘটনায় উপযুক্ত বিচার করে অপরাধীর ফাঁসি দেয়া হোক কারণ যতক্ষণ পর্যন্ত ধর্ষকেরা উপযুক্ত শাস্তি না পাবে ততক্ষণ পর্যন্ত এসব ঘটনা ঘটেই যাবে।

আদিবাসী যুব ফোরামের সাংগঠনিক সম্পাদক টনি চিরান বলেন, রাষ্ট্রে আদিবাসী নারীদের নিরাপত্তা নেই কারণ তাদের ওপর নির্যাতনকারীর উপযুক্ত শাস্তি এদেশে সহজে হয় না। এজন্য অপরাধীর সর্বোচ্চ শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে।

আদিবাসী নারীনেত্রী নমিতা চাকমা প্রচলিত আইন মোতাবেক হাজং নারীর মামলার সুষ্ঠু পরিচালনাসহ অপরাধীর উপযুক্ত শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানান।

জাতীয় হাজং সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক সোহেল হাজং বলেন, দেশের প্রচলিত আইনেই ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি হওয়া সম্ভব। কারণ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ এর ৯(১) এ বলা আছে, “যদি কোন পুরুষ কোন নারী বা শিশুকে ধর্ষণ করেন, তাহা হইলে তিনি [মৃত্যুণ্ডে বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডে (সংশোধনী ২০২০)] দণ্ডনীয় হইবেন।” অতএব হাজং নারী ধর্ষণের এ ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে অভিযুক্ত আসামীকে মৃত্যুদ- দেওয়া উচিত যেন পরবর্তীতে আর কেউ এসব ঘৃণ্য কাজ করতে না পারে।

বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের অর্থ-সম্পাদক এন্ড্রু সলমার বলেন, ভিকটিমের পরিবার অত্যন্ত দরিদ্র, নিরীহ ও সহজ-সরল প্রকৃতির। ভিকটিম নিজেও ভালো বাংলা বলতে পারে না। বাংলায় যোগাযোগের জন্য অন্যের সাহায্য নিতে হয়। ভিকটিমের মা প্রতিদিন কাজ করতে যায়। এই পরিস্থিতিতে পরিবারের জন্য মামলা পরিচালনাসহ আর্থিক সহযোগিতা করা প্রয়োজন।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত থেকে আরো সংহতি প্রকাশ করেন বাংলাদেশ জাতীয় হাজং সংগঠনের সভাপতি আশীষ কুমার হাজং, সাধারণ সম্পাদক পল্টন হাজং, বাংলাদেশ আদিবাসী যুব ফোরামের সাধারণ সম্পাদক আন্তনী রেমা, বাংলাদেশ আদিবাসী ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অলিক মৃ, বাদল হাজং, আদিবাসী নেত্রী মল্লিকা চাকমা প্রমুখ।

অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের মূল বক্তব্যে ধর্ষকের ফাঁসিসহ ৭ দফা দাবি পেশ করা হয়। সে দাবিগুলোর মধ্যে ছিল-

১. সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে হাজং নারীকে ধর্ষণের ঘটনাটি নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে অভিযুক্ত আসামীকে দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে

.২ ভিকটিমের মেডিক্যাল রিপোর্ট সঠিকভাবে তদন্ত করা হোক

.৩ দরিদ্র, অসহায় ও হাজং জাতিগোষ্ঠীর এই ক্ষতিগ্রস্ত ভিকটিম ও তার পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে

.৪ ক্ষতিগ্রস্ত নারীর মানসিক অবস্থা জোরদার করণের জন্যে কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে

.৫ ক্ষতিগ্রস্ত দরিদ্র নারী ও তার পরিবারের দৌড়াদৌড়ি/যাতায়াত ও চিকিৎসার খরচসহ পরিবারের ক্ষতিপূরণ এবং মামলা পরিচালনার যথার্থ খরচ প্রদান করতে হবে

.৬ সারাদেশে আদিবাসী নারীদের ওপর সংঘটিত যৌন ও শারীরিক সহিংসতার ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে হবে

.৭ আদিবাসী নারী ও শিশুদের নিরাপত্তার নিশ্চিত করণে সরকারকে একটি বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

উল্লেখ্য, গত ১৪ আগস্ট সকালে রাজাই গ্রামের আব্দুল রাশিদ (৪৫), পিতা আবুল কালাম কর্তৃক এক হাজং তরুণী ধর্ষণের শিকার হয়। ভিকটিম ঘটনার দিন সকালে বাড়ির অদূরে রাজই ছড়াতে গোসল করতে গেলে আগে থেকে উৎপেতে থাকা অভিযুক্ত আব্দুল রাশিদ জোড়পূর্বক ধর্ষণ করে। পরে ঐ দিন রাতেই ভিকটিমের মায়ের অভিযোগে তাহিরপুর থানায় মামলা গ্রহণ করা হয়, মামলা  নং ১২ তারিখ ১৪/০৮/২০২১ খ্রি: ধারা- নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধনী ২০০৩) এর ৯ (১)।

।। বিশেষ প্রতিনিধি, থকবিরিম



 




সম্পাদক : মিঠুন রাকসাম

উপদেষ্টা : মতেন্দ্র মানখিন, থিওফিল নকরেক

যোগাযোগ:  ১৯ মণিপুরিপাড়া, সংসদ এভিনিউ ফার্মগেট, ঢাকা-১২১৫। 01787161281, 01575090829

thokbirim281@gmail.com

 

থকবিরিমে প্রকাশিত কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। Copyright 2020 © Thokbirim.com.

Design by Raytahost