Thokbirim | logo

৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

জীবনের যত অম্ল-মধুর স্মৃতি।। সেদিনের কথা-২য় পর্ব।। নীলু রুরাম

প্রকাশিত : আগস্ট ০৭, ২০২১, ১৮:৪৮

জীবনের যত অম্ল-মধুর স্মৃতি।। সেদিনের কথা-২য় পর্ব।। নীলু রুরাম

ষাট দশকের (১৯৬০) কথা

বান্দুরা সেমিনারির দক্ষিণে বান্দুরা বাজার। সেমিনারির পশ্চিমে বয়ে গেছে ইছামতি নদী। এ নদী খুব সম্ভব জয়পাড়ায় প্রবাহিত হয়ে পদ্মায় মিলিত হয়েছে। এ নদীতে এক বিখ্যাত মাছ পাওয়া যেত আমাদের সময়। মাছটি দেখতে ঠিক হালের  সরপুতির মত দেখতে। নামটা ভুলে গেছি। আমাদের নৈমদ্দিন বাজারে এক খাচি এ মাছ নিয়ে আসত। বান্দুরা বাজার দু’ভাগে বিভক্ত। ইছামতি নদীর পূব ও পশ্চিমে। পূব বাজারের চেয়ে বাজারের দিনে পশ্চিম বাজার দারুণ জমে। তবে খাবারের ও মিষ্টির জন্যে পূব বাজারের সুখ্যাতি রয়েছে। সেমিনারি উত্তরে রয়েছে যথাক্রমে ব্রাদার হাউস, বয়েজ হোষ্টেল, বান্দুরা হাই স্কুল, প্রাইমারি স্কুল। সেমিনারি হাসনাবাদ ধর্মপল্লির আওতাধীন। পশ্চিমে দেওতলা গ্রাম। বান্দুরা হাইস্কুলটি আসলে গোবিন্দপুর গ্রামে অন্তর্গত। অনেকে তখন বান্দুরা গোবিন্দপুর হাইস্কুলও বলত।

####

নতুন জীবন। প্রথম দিনেই বাগানে ডিউটি। এখানে অফিসিয়ালি এটাকে “অবিডিয়েন্স” বলে। পুরাতন সেমিনারিয়ানরা বলছে, এখানে যা বলবে তা-ই করতে হবে।

কোন পাল্টা প্রশ্ন করা যাবে না

আমি জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে বললাম, কেন?

ভারাক্কিচালে বলল,  এখানে ফাদার যদি বলে, চারাটি উল্টা রোপন করতে হবে তুমি সেভাবেই করবে।

প্রশ্ন করলে পরিচালক বলবে, তোমার আহ্বান নেই। এটাই এখানে নিয়ম। রেক্টর যা বলবে সেটাই করতে হবে।

সেমিনারি দু’ভাগে বিভক্ত। ষষ্ঠ-সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত এপোস্টলিক। সপ্তম শ্রেণি থেকে দশম পর্যন্ত সেমিনারি।

রোববারে সবাইকে ধুতি পরতে জত। প্রথম প্রথম পরতে পারতাম না। পরে রপ্ত করেছি। তখনই রপ্ত করলাম বিভিন্ন ধরনের কৌশল ধূতি পরার। আমরা যখন সবাই ধূতি পরে হাসনাবাদ, গোল্লা ও তুইতাল ধর্মপল্লির পালকীয় পার্বণে শোভাযাত্রায় যোগদান করতাম। এটাই ছিল বান্দুরা সেমিনারির জাতীয় পোষাক।

#####

ভর্তি হওয়ার জন্যে স্কুলে গেলাম। প্রধান শিক্ষক ব্রাদার হোবার্ট সিএসসি আমাকে জিজ্ঞেস করলেন আমি কোন ক্লাশে ভর্তি হব। আমি তাঁকে জানালাম আমি ক্লাশ সেভেন পাশ করে এসেছি। যখন তখন ব্রাদার খসখস করে স্লিপে লিখে দিলেন, Promoted to class VIII.

আমি বললাম, ব্রাদার, আমি ক্লাস সেভেন রিপিট করতে চাই!

আশ্চর্য্ হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে বললেন, Why!

আমি বললাম, I want learn English more.

Okay.

লিখলেন,  Admit to class VII.

আমি আবার সপ্তম শ্রেণিতে ভর্তি হলাম।

তা না হলে আমি যেরুম ডি’কস্তার ক্লাশমেট হতাম। আমাকে কয়েক মাস এপোস্টলিক শাখায় থাকতে হয়েছিল।

একই শ্রেণিতে সহপাঠী পেলাম সেমিনারিতে যথাক্রমে, মাইকেল গমেজ, বেনেডিক্ট ক্রুজ, ভিক্টোর বৈরাগী, গাব্রিয়েল কস্তা, যোসেফ ডি’কস্তা,  ক্লেমেন্ট রোজারিও রক গমেজ পিটার রোজারিও গাব্রিয়েল মান্দা, মার্কুশ মনীন্দ্র নকরেক।

সেমিনারিতে এসে বাড়তি বিষয় যোগ  হল। আমাদের লাতিন  ভাষা শিখতে হবে। শুরু হল, Mensa Mense Mensa (Table) । ক্রমাগত সিসেরো, সিজারের ইউরোপ বিজয়। গল জাতির উপর সিজারের বিজয় ও কর্তৃত্ব বিষয়ে পড়তে লাগলাম। ম্যাট্রিক পরীক্ষায় লাতিন পরীক্ষা দিলাম।

###

তখম ম্যাট্রিক পরীক্ষা দিতে হত ঢাকা শহরে গিয়ে। আমরা রমনায় থেকে পগোজ হাইস্বুলে পরীক্ষা লিখেছি। লাতিন পরীক্ষাও দিয়েছি। শোনেছি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এক খ্রিষ্টান প্রফেসর নাম মি: রবার্ট লাতিন পেপার দেখতেন। তিনিই প্রশ্ন করতেন।

রাণীখং,  দুপুর ১৪:৩৯, ৭ জুলাই, ২০২১

চলবে…



 




সম্পাদক : মিঠুন রাকসাম

উপদেষ্টা : মতেন্দ্র মানখিন, থিওফিল নকরেক

যোগাযোগ:  ১৯ মণিপুরিপাড়া, সংসদ এভিনিউ ফার্মগেট, ঢাকা-১২১৫। 01787161281, 01575090829

thokbirim281@gmail.com

 

থকবিরিমে প্রকাশিত কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। Copyright 2020 © Thokbirim.com.

Design by Raytahost