আমি ছাত্র হিসেবে ভাল নই। পরীক্ষার মানদন্ডে লোকেরা যাকে বলে এই টেনেটুনে পাশ করেছে আর কি।
আমাদের এলাকার কথায়, “টাইনা মাইন্না পাশ।” সারা জীবন একা একাই পড়েছি ডিগ্রী পর্যম্ত।
আর্থিক দৈন্যতায় আমার কপালে প্রাইভেট পড়ার সুযোগ হয়নি। আমি গণিতে কাঁচা
তখনকার দিনে অঙ্কের টিচার প্রতিদিন অঙ্কের বাড়ির কাজ, মানসাঙ্ক এগুলো দারুণ ভয় পেতাম। বেশি রকম ভয় পেতাম সরল অঙ্ক, সুদকষা, শতকরা, অনুপাত ইত্যাদি বাড়ির কাজ ভুল হলে ক্লাশে বেঞ্চের উপর দাঁড়িয়ে থাকতে হতো। যখন বিরিশিরি পি সি নল হাই স্কুলে গেলাম সেখানে গণিতে আরো বিপত্তি।
অমরনাথ বিশ্বাস আমাদের অঙ্কের টিচার। তখন তিনি ধোপদুরস্ত টগবগে যুবক। অঙ্ক একবারের বেশি বুঝান না। কোন ছাত্র যদি বলে, স্যার, ভাল করে বুঝি নাই। তখন বলত যারা বুঝেছে তাদের কাছে বুঝে নাও। বলত, আবদুল হাই, তোতার কাছে বুঝে নাও।
এটাই স্যারের নির্দেশ। এরা দুজন আবার মিশুক নয়। হাই চুপচাপ থাকে। তোতা একটু আলাদা ধরনের যাকে বলে নাক উঁচা প্রকৃতির।
অমর স্যার তখন ইস্ট্রি করা সাদা শার্ট ও সাদা ধুতি পড়তেন। তখনকার আমলে সুভাষ স্যার ছাড়া প্রায় সব টিচারাই ধূতি পড়তেন। এই যেমন অশ্বিনী বাবু, বকুল বাবু, প্রাণকুমার বাবু, মিনি বাহাদুর, পন্ডিত, প্রধান শিক্ষক হিতেন্দ্র আরেং প্রমুখ।
বিরিশিরি হাই স্কুলে আমি ৬ষ্ঠ ও ৭ম শ্রেণি পড়াশুনা করেছি। পৌলদা আমার এক কি দু’বছরের সিনিয়র।
সপ্তম শ্রেশিতে পড়ার সময় কথা উঠছে, যদি ভাল রেজাল্ট করি তবে বান্দুরা সেমিনারিতে পাঠাবেন পাল পুরোহিত ফাদার টবিন সিএসসি। নাম রয়েছে আমার ও ইগ্নেসিয়াস দাওয়া। কারণ আমরা প্রতিদিন সকালে মিসায় সেবক হতাম। বার্সিক পরীক্ষা দিলাম। আমার অঙ্ক বিষয় ভাল হয়নি। পরীক্ষার পর পরই কথাটি চাউর হয়ে গেছে, এবার খুবই কড়াকড়ি হবে ফলাফল প্রকাশে। রেজাল্টের দিন প্রধান শিক্ষিক ফলাফল ঘোষণা করছে। সবাই উদগ্রীব। সতের নম্বরে আমার নাম ঘোষণা করল।ফলাফলে গণিতে ক্রশ করেছি। আমিই শেষ ব্যক্তি সপ্তম শ্রেণিতে।
ইগ্নেসিয়াস দাওয়া অকৃতকার্য ক্লাশ এইটে। আমি জানি আমার আর সেমিনারিতে যাবার সুযোগ নেই। হয়তো আর পড়াশুনা করা হবে না। কারণ বাবাকে হারিয়েছি যখন আমি তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ি। ঈশ্বরের কি লীলা। একদিন সন্ধ্যায় ঘুমাচ্ছি, এমন সময় রাতে সুধীর মানখিন আমাদের বাড়িতে এসে ডাকতে লাগল আমার দুলাভাইকে।
– লুথর বাড়িতে আছ নাকি?
এসেই বলল, জর্জকে কালই ঢাকা যাইতে হইবে।
দিদি বলল, কেমনে যাইব, কোন প্রস্তুতি নাই!
কেন চিন্তা নাই। ঢাকায় গিয়ে সব কেনাকাটা করে বান্দরায় পাঠানো হবে। ফাদার সব ব্যবস্থা করেছেন।
এই প্রথম রেল গাড়িতে চড়া। হয়তে আটান্ন বা উনষাট দশকের কথা জিন্দাবাহারে সুধীর’দা নিয়ে গেলেন। বাজার থেকে যাবতীয় জিনিসপত্রাদি কিনে দিলেন জিন্দাবাহারের ম্যানাজার। তিনি কালিগঞ্জের লোক। পরদিন রওনা দিলাম বান্দুরা।
এই প্রথম লঞ্চে চড়া। সুধীর’দা আমাদের বান্দুরা পর্যন্ত নিয়ে এলো। আমার সাথে পিটার গোদল রেমা।
শুরু হল সম্পূর্ণ ভিন্ন পরিবেশে, নতুন আঙ্গিকে ধর্মীয় জীবন। পবিত্র বাইবেল বলে, “অনেকেই আহুত, অল্পই মনোনীত।”
রাণীখং, ৬ আগষ্ট, ২০২১
বিকেল ১৮:৪১
চলবে…
‘১ সেপ্টেম্বর শুক্রবার থকবিরিম-এর যুগপূর্তি উৎসব অনুষ্ঠান’
: এক এক করে বার বছরে পদার্পণ করলো গারো সাহিত্যের পত্রিকা ......বিস্তারিত
-
১ সেপ্টেম্বর শুক্রবার থকবিরিম-এর যুগপূর্তি উৎসব অনুষ্ঠান
: এক এক করে বার বছরে পদার্পণ করলো গারো সাহিত্যের পত্রিকা ...
-
রে রে : হায়রে আমার কাঞ্জিয়া ।। নীলু রুরাম
: সমর সাংমার রেরে নিয়েই শুরু করি তবে একটু আলাদা। আমাদের...
-
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের নিরাপদ ব্যবহার ।। জাডিল মৃ
: এক. সময় স্রোতের সাথে আবাহমান ছুটে চলা প্রযুক্তির উন্নতি, মানব...
-
বর্তমান সময়ের তুমুল জনপ্রিয় শিল্পী দিশন অন্তু রিছিলের জন্মদিন আজ
: বর্তমান সময়ের তুমুল জনপ্রিয় শিল্পী দিশন অন্তু রিছিলের জন্মদিন আজ।...
-
বীর মুক্তিযোদ্ধা দেবতোষ যেত্রা আর নেই
: হালুয়াঘাট উপজেলার ৪নং সদর ইউনিয়নের কালিয়ানীকান্দা গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা পাস্টার...
-
কেনিয়ার কৃষকরা হাতি তাড়াচ্ছে মৌমাছি দিয়ে
: কেনিয়ায় হাতির তাণ্ডব থেকে ফসল রক্ষায় ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছে কৃষকরা।...
‘১ সেপ্টেম্বর শুক্রবার থকবিরিম-এর যুগপূর্তি উৎসব অনুষ্ঠান’
: এক এক করে বার বছরে পদার্পণ করলো গারো সাহিত্যের পত্রিকা ......বিস্তারিত
‘১ সেপ্টেম্বর শুক্রবার থকবিরিম-এর যুগপূর্তি উৎসব অনুষ্ঠান’
: এক এক করে বার বছরে পদার্পণ করলো গারো সাহিত্যের পত্রিকা ......বিস্তারিত