পটভূমি
এই প্রকাশনাটি মূলত আদিবাসী তরুণ লেখকদের প্রবন্ধের একটি সংকলন। করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) মহামারি হেতু লকডাউন সময়কালীন ২০২০ খ্রিস্টাব্দের বিশ্ব আদিবাসী দিবস উদযাপনের সময় দিবসের মূলসুরকে (কোভিড-১৯ মহামারিতে আদিবাসীদের জীবন-জীবিকার সংগ্রাম) ভিত্তি করে যে প্রবন্ধ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছিল, সেই প্রয়াসেরই ফসল এই প্রকাশনা। কারিতাস ময়মনসিংহ অঞ্চল কর্তৃক আয়োজিত এই প্রতিযোগিতাটিতে মূলত বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের আদিবাসী ছাত্র-যুবদের অংশগ্রহণের আহ্বান জানানো হয়েছিল। প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী মোট ১৩ জন যুবকÑযুবতীদের মাঝ থেকে ৩ সদস্য (আদিবাসী) বিশিষ্ট বিচারক মণ্ডলীর দ্বারা নির্বাচিত ১০ শাণিত দর্পণ যুবক-যুবতীদের প্রবন্ধ নিয়ে করা হয়েছে এ বিশেষ প্রবন্ধ সংকলন।
কারিতাস ময়মনসিংহ অঞ্চল ১৯৯০ সাল থেকে বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে পিছিয়ে পড়া প্রান্তিক আদিবাসীদের অধিকার সংরক্ষণ ও জীবন-মান উন্নয়নের লক্ষ্যে বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের প্রত্যন্ত অঞ্চলসমূহে শিক্ষা, কৃষ্টি-সংস্কৃতির উন্নয়ন, সচেতনতা, সক্ষমতা ও নেতৃত্বের বিকাশ এবং জনসংগঠন সমূহ শক্তিশালীকরণে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। বৃহত্তর ময়মনসিংহে আবহমানকাল থেকে বসবাসরত ৮টি আদিবাসী জনগোষ্ঠীর আর্থ-সামাজিক অবস্থা বিভিন্ন প্রেক্ষাপট এবং বঞ্চনার প্রভাবে তুলনামূলক নাজুক। বৈশ্বিক মহামারি এ প্রেক্ষাপটে যেন মরার উপর খরার ঘা হয়ে দাঁড়িয়েছে। যুগে যুগে নানারকম বঞ্চনার শিকার হয়ে অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে থাকা দরিদ্র আদিবাসীদের জীবন-জীবিকাকে চরমভাবে প্রভাবিত করেছে কোভিড-১৯ মহামারি। আদিবাসীদের প্রচলিত ভূমি ভিত্তিক ঐতিহ্যবাহী জীবন-জীবিকা পরিবর্তন হওয়ার ফলে অনেক আদিবাসী জীবিকা নির্বাহে অনানুষ্ঠানিক সেক্টরে বা কর্মক্ষেত্র সমূহের উপর নির্ভরশীল, যারা এই মহামারি দ্বারা বিরূপভাবে প্রভাবিত হয়েছে। কর্মহীন হয়ে পড়া আদিবাসী নারীদের অবস্থা সবচেয়ে বেশি নাজুক, যাদের উপর পুরো পরিবার নির্ভরশীল ছিল। এ আদিবাসী নারীদের অনেকেই বিউটিপার্লারে বা বিভিন্ন বাসা-বাড়িতে গৃহকর্মী বা সহায়তাকারী হিসেবে কর্মরত ছিলেন, যাদের উল্লেখযোগ্য একটি অংশ কর্মহীন, অনিশ্চিত অসহায়তায় নিপতিত হয়েছে। কোভিড-১৯ এর কারণে অর্থনৈতিক সমস্যা ছাড়াও বিভিন্নমূখী সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে আদিবাসীরা। আদিবাসীদের জীবনজীবিকার উপর কোভিড-১৯ মহামারির বহুমাত্রিক বিরূপ প্রভাব বিবেচনায় রেখে জাতিসংঘ ২০২০ খ্্িরস্টাব্দে বিশ^ আদিবাসী দিবসের মূলসুর নির্বাচন করে ‘‘COVID-19 and Indigenous Peoples’ Resilience” বা “কোভিড-১৯ মহামারিতে আদিবাসীদের জীবনজীবিকার সংগ্রাম”। বাংলাদেশ, তথা বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের আদিবসীরা কোভিড-১৯ মহামারির দ্বারা কতভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ও প্রভাবিত তা চিহ্নিতকরণ, সমস্যাসমূহ মোকাবিলার ক্ষেত্রে নতুন নতুন উদ্ভাবনী চিন্তা এবং প্রয়োজনীয় পরামর্শের সমাবেশ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহ বন্ধ থাকায় কিছুটা হতাশ যুব সমাজ নিজ নিজ এলাকায় থেকে প্রতিনিয়তই আদিবাসীদের নানারকম জীবন-যুদ্ধ ও বঞ্চনার সাক্ষী হচ্ছে। এ অনাকাঙ্খিত অবসর সময়ের যথাযথ ব্যবহার দ্বারা, ছাত্র-যুবদের স্বচ্ছ দৃষ্টিভঙ্গি ও সৃজনশীলতা প্রসূত পর্যবেক্ষণ কোভিড-১৯ মহামারি ও আদিবাসী জীবনের গুরুত্বপূর্ণ দলিল হয়ে উঠতে পারে কালের প্রয়োজনে। সেই উপলব্ধি আমাদের অনুপ্রেরণা দেয় মহামারি প্রভাবিত ৯ আগস্ট ২০২০ খ্রিস্টাব্দ বিশ্ব আদিবাসী দিবসকে উপলক্ষ করে কারিতাস ময়মনসিংহ অঞ্চল এর আলোক প্রকল্পের ব্যবস্থাপনায় বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের আদিবাসী যুবক-যুবতীদের জন্য প্রবন্ধ রচনা প্রতিযোগিতা ও প্রবন্ধ সংকলনের আয়োজন করার।
এ বিশেষ প্রবন্ধ সংকলনে বৃহত্তর ময়মনসিংহের বিভিন্ন প্রান্তের বিভিন্ন আদিবাসী জনগোষ্ঠীর যুবকÑযুবতীদের সক্রিয় অংশগ্রহণ সত্যি অনুপ্রেরনাদায়ক। ঐতিহাসিক এই মহামারী আদিবাসীদের জীবনজীবিকা, সমাজ-সংস্কৃতি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ইত্যাদিতে কী প্রভাব ফেলছে, কীভাবে তারা এর মোকাবিলা করছে, এ সকল কঠিন জীবন অভিজ্ঞতার চালচিত্র কালের সাক্ষী হিসেবে উঠে এসেছে এ দশজন যুব প্রতিনিধিদের লেখনিতে। এই বিশেষ চ্যালেঞ্জ ও তা মোকাবিলায় করণীয় সম্পর্কে এই দশ যুব দর্পনের অভিজ্ঞতার প্রতিফলন, প্রগতিশীল দৃষ্টিভঙ্গি, সুদূর প্রসারী ভাবনা, সুপারিশ ইত্যাদি আদিবাসীদের উন্নয়নে নানাভাবে কাজে আসবে বলে আমাদের বিশ্বাস।
এই প্রকাশনার কাজ সম্পন্ন করার ক্ষেত্রে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহযোগিতার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। বিশেষ কৃতজ্ঞতা তরুণ লেখকদের প্রতি, যাদের লেখনীতে এই প্রকাশনার সফলতা। শ্রদ্ধা ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি বিচারক মণ্ডলীর সদস্য মি. সৃজন রাংসা(সাংমা), মি. মতেন্দ্র মানখিন এবং মি. পরাগ রিছিল-এর প্রতি, যারা তাদের মূল্যবান সময়, শ্রম ও মেধা দিয়ে প্রবন্ধগুলো বিচার-বিশ্লেষণ ও নির্বাচন করেছেন। বিশেষ ধন্যবাদ জানাচ্ছি থকবিরিম প্রকাশনী’কে যারা এই সংকলন প্রকাশে অংশীদার হয়ে সহযোগিতা করেছেন এবং নির্বাচিত ১০টি প্রবন্ধ তাদের অনলাইন পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করার জন্য অঙ্গীকার করেছেন। প্রতিযোগিতার আয়োজক কমিটি এবং কারিতাস ময়মনসিংহ অঞ্চলের সম্পৃক্ত সকল সদস্যদের প্রতি কৃতজ্ঞতা, যাদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় এই আয়োজন সফলতা পেয়েছে।
সংকলনটির অনঅভিপ্রেত সকল ত্রুটি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখার আহ্বান জানাচ্ছি। প্রজন্মের জন্য একটি সুস্থ, নির্মল, ভালোবাসাময় সবুজ পৃথিবী উপহার দিতে আমাদের সকলের দায়িত¦শীল প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকুক।
অপূর্ব ম্র্রং
আঞ্চলিক পরিচালক, কারিতাস ময়মনসিংহ অঞ্চল।
কোভিড-১৯ ‘আদিবাসীদের জীবন জীবিকার সংগ্রাম চলছেই’।। জাডিল মৃ
এক.
বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলে আদিবাসী বলতে গারো, হাজং, কোচ, বানাই, ডালু, বর্মণ প্রভৃতি জাতির বসবাস রয়েছে। তবে সর্বাপেক্ষা সবচেয়ে বেশি বসবাস গারো জাতির। সরকারি গেজেট সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপনে (শনিবার, ২৩ মার্চ ২০১৯) ৫০টি আদিবাসী জাতিগোষ্ঠীর কথা বলা হয়েছে। ফলত, সমতলে ২৮টি জেলায় ৩৫টি আদিবাসী সম্প্রদায়ের ২০ লাখের উপরে বসবাস রয়েছে। তাঁদের মধ্যে ভাইরাসের ফলে নতুন করে আরো পাঁচ লাখের উপরে দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করছে। যেখানে তিনবেলা ভাত খেতে ভাইরাসের ফলে সেখানে একবেলা খেতে হচ্ছে। ২০১৭ সাল থেকে আদিবাসী সম্প্রদায়ের পাঁচটি জাতির ভাষায় প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষাব্যবস্থা চালু করেছে। আবার ক’বছর আগে আদিবাসীদের ৫% কোটা বাতিল করেছে। প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় থেকে অর্নাস পড়ুয়া সমতলের আদিবাসী শিক্ষার্থীরা এককালীন পঁচিশ হাজার টাকা করে পাচ্ছে। আবার সরকার বিভিন্ন সংস্থা বা সংগঠনের মাধ্যমে আদিবাসীদের জন্য বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা দিচ্ছে/প্রদান করছে। কিন্তু এতকিছুর পরেও নামেমাত্র কিংবা লোক দেখানো কার্যক্রমে সত্যিকার অর্থে আদিবাসীরা সুফল ভোগ করছে না। আদিবাসীরা নিজেদের প্রয়োজনে গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন বিষয় যুগের পর যুগ দাবি জানিয়ে আসছে কিন্তু সমস্যা সৃষ্টি হলেও এত বছরেও রাষ্ট্র কর্ণপাত করেনি/করছে না। আদিবাসীদের দুঃখ কষ্ট মনের যন্ত্রণা রাষ্ট্র এখনো ব্ঝুতে পারেনি। সে-ই জন্যই এত সমস্যা সৃষ্টি হলেও রাষ্ট্র কার্যত কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না। কিছু-কিছু পদক্ষেপ নিচ্ছে তবে তা সত্ত্বেও আদিবাসীরা সত্যিকারের অর্থে কোন সু-ফল পাচ্ছে না। এই না পাওয়ার বেদনা আদিবাসীদের পিছিয়ে পড়ার কারণ রাষ্ট্রকেই বহন করতে হবে। এবং এসডিজি (টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা) ২০৩০ সালে যে লক্ষ্যমাত্রা আদিবাসীদের উন্নতি ছাড়া অর্জন সম্ভব নয় ও কাউকে পিছনে ফেলে রাখা যাবে না। ভাইরাসের ফলে বৃহত্তর ময়মনসিং অঞ্চলের আদিবাসীরা যে ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে রাষ্ট্রের সু-দৃষ্টি থাকলে কিছুটা হলেও ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়া যেতো। সুতরাং ভাইরাসের প্রভাবে আরো করুণ অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে, বৃহত্তর ময়মনসিংহে বসবাসরত আদিবাসীরা।
দুই.
এত সমস্যা থাকা সত্ত্বেও নতুন করে যোগ হলো ‘করোনা ভাইরাস’। আদিবাসীরা এমনিতেই প্রান্তিক জনগোষ্ঠী হিসাবে পরিচিত। করোনাভাইরাসের ফলে আরো প্রান্তিক হতে বাধ্য হচ্ছে। সমতল আদিবাসীদের মধ্যে প্রায় ৭৮ শতাংশ দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করে। দেশে দারিদ্র্যের জাতীয় গড় হার যেখানে ২০ দশমিক ৫ শতাংশ। সেখানে আদিবাসীদের হার অনেকটা আরোও বেশি। সমতলে বসবাসরত আদিবাসীদের দারিদ্র্যের হার ৮০ শতাংশ এবং পাহাড়ে বসবাসরত আদিবাসীদের দারিদ্র্যের হার ৬৫ শতাংশ। বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলে বেশিভাগ আদিবাসী সাধারণত দরিদ্র ও প্রান্তিক খেটে খাওয়া, কৃষক না হয় দিনমজুর। আবার অনেকেই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে আগে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কাজ করতো। যেমন-গার্মেন্ট, ড্রাইভার, সেলস পারসন, বিউটিপার্লার, গৃহপরিচারিকা, সিকিউরিটি গার্ড ইত্যাদি নিম্ন আয়ের অনানুষ্ঠানিক খাতে যুক্ত ছিল। এদের মধ্যে এখন প্রায় ৭২ শতাংশ বেকার হয়ে পড়েছে। যারা আবার চাকুরিতে বহাল আছে তাঁরা আবার ২০ শতাংশ আংশিক বেতন পাচ্ছে। কিন্তু অনেকেই আবার ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ও লকডাউনের ফলে বাইরে কাজে যেতে পারেনি। যেহেতু কাজে যেতে পারেনি তাই ইনকামের রাস্তা বন্ধ। এমনিতেই আদিবাসীদের অর্থনীতি অবস্থা খুবই দুবর্ল। ফলে ইনকাম না থাকার কারণে আদিবাসীদের অর্থনৈতিক ভিত্তি আরো দুর্বল হয়ে পড়েছে। যারা শহরে কাজ করতো তাঁদের অনেকের চাকরি চলেগেছে কিংবা শহরে টিকতে না পেরে গ্রামে চলে এসেছে। গ্রামে এসেও কিছু করবে সেটারো কোন উপায় নেই। বিশেষ করে যে আদিবাসীরা এখনো গ্রামে যৌথ পরিবার হিসাবে থাকে, সেই পরিবারে দিনদিন চাপ বাড়ছে। কারণ হঠাৎ করে এত জন (৩/৪/৫/৮/৯) মানুষ গ্রামে এসে দীর্ঘ দিনের অবস্থান, ইনকাম ছাড়া। স্বাভাবিক ভাবে চাপ তো হবেই। কারণ যাদের কিছু জমানো টাকা ছিল, সেটাও শেষ। ফলে এক অনিশ্চিত জীবনের দিকে ধাপিত হচ্ছে বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের আদিবাসীরা।
তিন
কোভিড-১৯ এ কমবেশি সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কিন্তু যেটুকু প্রণোদনা-সাহায্য পাওয়ার কথা আদিবাসীদের একটা বড় অংশ সেইটুকু পাইনি। আবার যারা আদিবাসী শিক্ষার্থী তাঁরা আরো বেশি করে বিপাকে পড়েছে কারণ অনেকের হাতে ল্যাপটপ, কম্পিউটার, স্মার্টফোন, নোটবুক কিংবা অন্যান্য ডিভাইস নেই। সে-ই গুলো থাকলেও নেটওয়ার্কের আওতায় নেই, আবার অনেকের ডেটা কেনার সামর্থ্য নেই। এ-দিকে আবার অনেক আদিবাসী এলাকায় রয়েছে অপর্যাপ্ত আইটি সরঞ্জাম, অপর্যাপ্ত ইন্টারনেট সংযোগ ও মাঝেমধ্যে বিদ্যুতের অভাবও।
দীর্ঘদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার ফলে এরি মধ্যে অনেক বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ, স্কুল অনলাইনে ক্লাশ-পরীক্ষা নিচ্ছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো শিক্ষার্থীদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে নানা কার্যক্রম হাতে নিচ্ছে। কিন্তু আদিবাসী শিক্ষার্থীরা কতটুকু সুবিধাভোগ করছে, সেটা ভাবনার বিষয়। সারা দেশে টেলিভিশন ক্লাসে অংশ নিতে না পারা শিক্ষার্থী রয়েছে ৫৬ শতাংশ। সবচেয়ে বেশি ৭৫ শতাংশ আদিবাসী শিক্ষার্থী সংসদ টেলিভিশনের ক্লাসে অংশ নিচ্ছে না, নিতে পারছে না। সুতরাং আদিবাসী শিক্ষার্থীরা যে পড়াশুনায় পিছিয়ে যাচ্ছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। শিক্ষার্থীরাও অনিশ্চিত জীবনের দিকে ধাবিত হচ্ছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ কিংবা উন্নয়ন বলো করোনাভাইরাসের মধ্যে শিক্ষাদীক্ষার জন্য আদিবাসী শিক্ষার্থীরা যে সু-ফল ভোগ করছে না, সেটা বাস্তবেই দেখা যাচ্ছে।
চার
করোনাকালীন সময়ে বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলে বসবাসরত আদিবাসীদের জন্য, আদিবাসী সংগঠনগুলো বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন ভাবে সাহায্য সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল। করোনাকালীন সময়ে আদিবাসী সংগঠনগুলো অন্যের সাহায্যের আশায় বসে থাকেনি বরং নিজেদের উদ্যোগে মানবিক চিন্তা ও বিবেকবোধ থেকে নিজেদের জন্য জাতির জন্য কাজ করেছে নিরলস। সংগঠনগুলো যে যেমন যতটুকুই পেরেছে ততটুকুই উজাড় করে দিতে চেষ্টা করেছে। যে সংগঠনগুলো আগাম ভবিষ্যত সম্পর্কে সর্তক হয়ে উদ্যোগী ও সাহায্য করেছিল। সে-ই সব সংগঠনগুলো না বললেই নয়। যেমন-কারিতাস ময়মনসিংহ অঞ্চল, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম, আইপিডিএস, বাগাছাস, বাহাছাস, হাজং জাতীয় সংগঠন, Mandi Youth Volunteers of Abima to combat covid 19, প্রমোদ মানখিন ফাউন্ডেশন, মাস্টার এপ্রিল বনোয়ারী কল্যাণ ট্রাস্ট, হরিপদ রিছিল ট্রাস্ট, থকবিরিম, গারো ব্যাপ্টিস্ট কনভেনশন (জিবিসি), ব্যাপ্টিস্ট ওয়ার্ড এলায়েন্স (বিডাব্লিউএ) ইত্যাদি।
কঠিন বাস্তব সংগ্রামের মধ্য দিয়ে আদিবাসীরা নিজেদের জীবনকে স্বাভাবিক পরিচালনার চেষ্টা করছে। মূলধারা জাতি থেকে আদিবাসী সম্প্রদায়ের করোনায় আক্রান্ত তুলনামূলক কম। কারণ আদিবাসীরা তাঁদের জীবনাচরণ, মূল্যবোধ, সামাজিক প্রথা, খাদ্যাভ্যাস, পরিশ্রম, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ও সম্মিলিত প্রয়াসের মাধ্যমে সচেতনতার কারণেই সফলতার সাথে করোনা ভাইরাস মোকাবেলা করছে। কোভিড-১৯ এর ফলে অনেকেই এমন কাজ করতে বাধ্য হচ্ছে যারা কোনদিন সেই কাজ করেনি। যেমন-ছোটবেলা থেকে যে পার্লারে কাজ করেছে, যা’র এখন কলাবাগান/আনারস বাগানে কাজ করতে হচ্ছে। জীবনের তাগাদায়। এমন পরিস্থিতির জন্য কেউ প্রস্তুত ছিল না। ভাইরাস আমাদেরকে যেমন ক্ষতিগ্রস্ত করেছে তেমনি কিছু শিক্ষণীয় বিষয় বুঝতে সাহায্য করেছে। যেমন- বেঁচে থাকার জন্য বেশি কিছুর প্রয়োজন নেই। ফরমালিনমুক্ত শাক-সবজি কিংবা মাছ-মাংস খেতে হবে। সবসময়ই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে। নিজেকে ভালো মতো বুঝা উচিত, বুঝতে হবে। সবাই একে অপরের পরিপূরক। টাকাই সবকিছু নয়। সুস্বাস্থ্যই সুখ ও শক্তি এবং সবার প্রতি কৃতজ্ঞ থাকা উচিত এবং একে অপরকে সম্মান দেওয়া উচিত। সেটা মানুষ হোক আর প্রকৃতি। সর্বাপেক্ষা প্রকৃতির প্রতি বেশি করে শ্রদ্ধাভরে সকল মানুষের কৃতজ্ঞ থাকা উচিত। প্রকৃতিকে ক্ষতি করা যাবে না। সুতরাং বলতেই পারি, আদিবাসীদের সনাতন জীবনবোধ জীবনাচরণ সম্পর্কে নতুন করে ভাবতে বাধ্য করেছে। আদিবাসীরা যে প্রকৃতির সাথে সম্পৃক্ত ও প্রকৃতির সান্নিধ্য লাভ করেছে, সেটা নতুন করে ভাবতে বাধ্য করেছে। প্রকৃতির প্রতি যে সবসময়ই কৃতজ্ঞ থাকা উচিত তা আদিবাসীদের কাছে নতুন কিছু নয়। যা আজ দেশ কিংবা পৃথিবীর মানুষ আদিবাসীদের কৃতজ্ঞতা, জীবনবোধ, জীবনাচরণ, মূল্যবোধ, বিবেকবোধ সম্পর্কে বুঝতে পারছে। অনেক ক্ষেত্রে পুরানো ধ্যানজ্ঞান যে কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা করোনা ভাইরাস আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে। সে-দিক দিয়ে আদিবাসীদের সনাতন ধ্যানজ্ঞান এগিয়ে। এবং দেশ কিংবা বিশ্ববাসীকে পথ দেখায়।
পাঁচ
এই করোনাকালীন সংকট মুহূর্তে বৃহত্তর ময়মনসিং অঞ্চল আদিবাসীদের জীবন কাটছে অনিশ্চয়তায়। অনেকের পড়াশুনা শেষ হয়নি, অনেকের চাকরি চলে গেছে, আয়ের পথ বন্ধ, কোথাও সাহায্য মিলছে না আবার কিছু করবে তাও উপায় নেই। সেইজন্য সরকারি বেসরকারি সাহায্য প্রয়োজন। এই দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা সমাধানে বৃহত্তর ময়মনসিংহে বসবাসরত আদিবাসীদের জন্য কিছু পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে। যেন করোনাভাইরাসের ফলে অর্থনীতি ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে পারে। এবং স্বাভাবিক জীবনের দিকে যেতে পারে। সেই জন্য কিছু সুপারিশ।
উপায় সমূহ-
১. স্বল্প সুদে আদিবাসীদের জন্য দীর্ঘস্থায়ী ঋণের ব্যবস্থা করা।
২. আদিবাসীদের জন্য বিভিন্ন ধরনের স্বল্প মেয়াদি কোর্স বা ট্রেনিং এর সুযোগ করে দেওয়া। যেমন-মোবাইল সার্ভিসিং, বিভিন্ন মেশিন সার্ভিসিং, দেশি তাঁতের কাজ, গরু-ছাগল-হাঁস-মুরগি পালন, পোশাক তৈরি, মাশরুম চাষ, মৌমাছি চাষ ইত্যাদি।
৩. শিক্ষিত আদিবাসীদের (বেকার) জন্য বিভিন্ন ধরনের আইটি (ফ্রিল্যান্সিং) সম্পর্কিত বিনামূল্যে ট্রেনিং এ ব্যবস্থা করা। যেমন-গ্রাফিক্স ডিজাইন, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, অ্যাপস ডেভেলপমেন্ট, ডিজিটাল মার্কেটিং, কন্টেন্ট রাইটিং, ব্লগিং, ইউটিউবিং ইত্যাদি।
৪. পশু চিকিৎসক, হোমিওপ্যাথি, ফার্মেসি ইত্যাদি চিকিৎসা সম্পর্কিত ট্রেনিং এ ব্যবস্থা করা।
৫. আদিবাসী এলাকায় স্থানীয় সমিতি বা মাইক্রো ক্রেডিট তৈরি করতে সহায়তা করা। যাতে মহাজন বা সুদখোর থেকে উচ্চ সুদে টাকা ধার নিতে না হয়।
৬. অতি দরিদ্র শিক্ষার্থীদের জন্য ফোন, ল্যাপটপ বা অন্যান্য ডিভাইস বিনামূল্যে প্রদান বা সুদহীন ঋণের ব্যবস্থা করা। অথবা এককালীন বা দীর্ঘস্থায়ী বৃত্তি (ভাতা)ব্যবস্থা করা।
৯. নতুন উদ্যোক্তাদের জন্য স্বল্প সুদে পুঁজির ব্যবস্থা করা।
১০. যারা হত দরিদ্র তাঁদের জন্য এক বা দুই (অধিক) মাসের জন্য রেশনের ব্যবস্থা করা।
১১. আদিবাসী প্রতিবন্ধী বৃদ্ধ শারীরিক সমস্যায় জর্জরিত তাদের জন্য বিনামূল্যে ঔষুধের ব্যবস্থা করা।
১২. অংশীদারিত্ব (প্রতিষ্ঠান এবং ব্যক্তি) ভিত্তিতে গরু, ছাগল, ভেড়া, হাঁস-মুরগি ইত্যাদি পালন করা যেতে পারে। যেন স্বাবলম্বী হয়ে উঠে।
১৩ স্বল্প সুদে যানবাহন ক্রয়ের ব্যবস্থা করা (ভ্যান, অটো, সিএনজি ইত্যাদি)।
সর্বোপরি, এইসব পদক্ষেপ নিশ্চিত ভাবেই ভাইরাসের ফলে আদিবাসীরা যে ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে, তা কিছুটা হলেও লাঘব করবে। কেন না পরিবারে একজনের আয় থাকলে কিছুটা হলেও পরিবারের জন্য অনেক উপকার হয়। সেটা যদি দুর্যোগ কিংবা সংকটাপন্ন সময়ে হয় তাহলে তো কথাই নেই। সুতরাং প্রত্যেক পরিবার থেকে একজন হলেও ইনকামের উৎসের জন্য সুযোগ করে দেওয়া উচিত, সুযোগ করে দেওয়া যেতে পারে।
ছয়
বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের আদিবাসীরা অনিশ্চিত জীবনের দিকে ধাবিত হচ্ছে বিধায় আদিবাসীদের সুরক্ষা ও উন্নয়নের জন্য সরকারি ও বেসরকারি সংস্থাদের এগিয়ে আসতেই হবে। কারণ ভাইরাসের ফলে আদিবাসীদের অবস্থা এমনিতেই নাজুক, এমন অবস্থায় দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা ও সাহায্য ছাড়া উত্তরণ সম্ভব নয়। এবং সাহায্য সত্যিই জরুরি হয়ে পড়েছে। করোনার সময়ে বিশেষ করে নারীরা নিজেদের পেশা পরিবর্তন করছে। আগে কোন এক স্কুলে পড়াতো, এখন রান্না করে হোম ডেলিভারি দিচ্ছে/নতুন কিছু করে উদ্যোক্তা হচ্ছে। আবার কেউ কেউ সবজি বিক্রি করছে। কেউবা পার্লারের কাজ বাদ দিয়ে গ্রামে গ্রামে দিনমজুরি দিচ্ছে। করোনা ভাইরাস সবকিছুই লণ্ডভণ্ড করে দিয়েছে। করোনাভাইরাসের সময়ে বনবিভাগের অত্যাচারেও গারো আদিবাসীরা ভালো নেই। ক’দিন ধরে মধুপুরে বসবাসরত গারো আদিবাসীদের উচ্ছেদের পাঁয়তারা চলছে। নতুন করে বনবিভাগ ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হচ্ছে। আবার নেত্রকোণায় গারো আদিবাসী ডিসের লাইন কেটেছে বলে মিথ্যা সংবাদ প্রচার করেছে। বিরিশিরি সিমসাং নদী (সোমেশ্বরী) নদীর পার ভাঙন ধরছে। ফলে অনেক গারো গ্রাম বিলুপ্তির পথে। এই রকম বৃহত্তম ময়মনসিংহ করোনার সময়েও অসংখ্য উল্লেখ্যযোগ্য ঘটনা ঘটছে। যা ফোকাস হয় না, মিডিয়াতে তেমন আসে না। সবদিক দিয়ে বৃহত্তর ময়মনসিং অঞ্চলে বসবাসরত আদিবাসীরা সত্যই ভালো নেই।
কিন্তু এখন এই করোনাকালীন সময়ে শত সমস্যা ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও বেঁচে থাকার জন্য, পেটের দায়ে, সুরক্ষা ছাড়া আদিবাসীদের জীবন জীবিকার সংগ্রাম চলছেই।
তথ্যসূত্র-
১. সাম্প্রতিক-ক্ষুদ্র-নৃ-গোষ্ঠী-সংক্রান্ত-গেজেট’-২০১৯
২. শিক্ষক প্রশিক্ষণ ছাড়াই ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের মাতৃভাষায় শিক্ষা কার্যক্রম শুরু/বাংলা ট্রিবিউন/
৩. কোটা বাতিলে নতুন জটিলতা/প্রথম আলো/
৪. করোনাকালে আদিবাসী দিবস ও জীবন/প্রথম আলো/
৫. ‘ক্ষুদ্রনৃগোষ্ঠীর আত্ম-অধিকার অস্বীকারের মানে, নিজেদের অধিকার অস্বীকার’/ডেইলি স্টার/
৬. ‘ক্ষুদ্র জাতিসত্তার মানুষের দাবি বাজেটে উপেক্ষিত’ /প্রথম আলো/
৭. জাতীয় হাজং সংগঠন/আচিক নিউজ টুয়েন্টি ফোর/
৮. শ্রীবরদীতে হতদরিদ্রদের মাঝে আর্থিক সহায়তা প্রদান-কারিতাস/আজকের টাঙ্গাইল/
৯. কোভিড-১৯ মহামারিতে হাজং পরিবারের জন্য সহায়তা/ আচিক নিউজ টুয়েন্টি ফোর/
১০. করোনায় গারো পরিবারে পৌঁছে যাচ্ছে বাগাছাসের ভালোবাসা/জনজাতিরকণ্ঠ /
১১. মধুপুরে দিনমজুরি করে চলছেন বিউটিশিয়ানরা/ইত্তেফাক/
১২. আদিবাসী ৫ লাখ নতুন দরিদ্র/প্রথম আলো/
১৩. সমতলের ৯২ % আয় কমেগেছে/সমকাল/
১৪. ৭৫ শতাংশ আদিবাসী ক্লাশ করতে পারছে না/হিল ভয়েস/
১৫. বর্ষ-১৮, সংখ্যা ৫৫, জুলাই-২০২০ (জিবিসি নিউজ লেটার)
১৬. পেশা পরিবর্তন/ডেইলি স্টার/
১৭. উচ্ছেদের পাঁয়তারা /আবিমা টাইমস২৪/
১৮. কলাগাছ কর্তন/আচিক নিউজ২৪/
১৯. ডিস কাটার মিথ্যা সংবাদ প্রচার
২০. সোমেশ্বরী নদী ভাঙ্গনে প্রথম ধাপ/থকবিরিম /
২১. আদিবাসী মানবাধিকার কর্মী সহায়িকা /কাপেং ফাউন্ডেশন/
লেখক পরিচিতি
জাডিল মৃ : টাঙ্গাইল জেলার মধুপুর থানার থানারবাইদ গ্রামের তরুণ লেখক ও ব্লগার জাডিল মৃ জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে মানব সম্পদ বিভাগে ৪র্থ বর্ষে পড়ালেখা করছেন।
## দশটি নিবন্ধ ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হবে। আজ প্রকাশিত হলো প্রথম স্থান বিজয়ী জাডিল মৃ’র নিবন্ধ।
‘১ সেপ্টেম্বর শুক্রবার থকবিরিম-এর যুগপূর্তি উৎসব অনুষ্ঠান’
: এক এক করে বার বছরে পদার্পণ করলো গারো সাহিত্যের পত্রিকা ......বিস্তারিত
-
রাত পোহালেই উদযাপিত হতে যাচ্ছে গারো জনগোষ্ঠীর উৎসব ওয়ানগালা
: রাত পোহালেই উদযাপিত হতে যাচ্ছে গারো জনগোষ্ঠীর সামাজিক সাংস্কৃতিক ও...
-
আজ লেখক ও চিন্তক আলবার্ট মানকিন-এর স্মরণসভা ও স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠান
: মধুপুর গড়াঞ্চলের আদিবাসী নেতা, চিন্তাবিদ, লেখক, সমাজকর্মী, এনজিও কর্মী আলবাট...
-
গুলশান বনানী ওয়ানগালা ২১ অক্টোবর শনিবার
: গুলশান বনানী ওয়ানগালা ২১ অক্টোবর শনিবার আদি সাংসারেক গারো জাতিগোষ্ঠীর...
-
১ সেপ্টেম্বর শুক্রবার থকবিরিম-এর যুগপূর্তি উৎসব অনুষ্ঠান
: এক এক করে বার বছরে পদার্পণ করলো গারো সাহিত্যের পত্রিকা ...
-
রে রে : হায়রে আমার কাঞ্জিয়া ।। নীলু রুরাম
: সমর সাংমার রেরে নিয়েই শুরু করি তবে একটু আলাদা। আমাদের...
-
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের নিরাপদ ব্যবহার ।। জাডিল মৃ
: এক. সময় স্রোতের সাথে আবাহমান ছুটে চলা প্রযুক্তির উন্নতি, মানব...
‘রাত পোহালেই উদযাপিত হতে যাচ্ছে গারো জনগোষ্ঠীর উৎসব ওয়ানগালা’
: রাত পোহালেই উদযাপিত হতে যাচ্ছে গারো জনগোষ্ঠীর সামাজিক সাংস্কৃতিক ও......বিস্তারিত
‘১ সেপ্টেম্বর শুক্রবার থকবিরিম-এর যুগপূর্তি উৎসব অনুষ্ঠান’
: এক এক করে বার বছরে পদার্পণ করলো গারো সাহিত্যের পত্রিকা ......বিস্তারিত