কদিন ধরেই ফেইসবুকে ‘কোদাল মারা কমিটি’ নামে একটি ব্যঙ্গচিত্র সবার ওয়ালে ওয়ালে দেখা যাচ্ছে। কে বা কারা এটি বানিয়েছে, তা জানি না। তবে ছবি দেখে স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে, যে তিনজনের চেহারা স্পষ্ট তারা আদিবাসীদের গুরুত্বপূর্ণ পদের দায়িত্বে আছেন। এমন ব্যঙ্গচিত্র গারো জাতির লোকজন আগে দেখেছে কিনা জানা নাই। তবে খুব আলোচিত-সমালোচিত হয়েছে বলতে হবে। তবে যাদের ব্যঙ্গচিত্র করা হয়েছে তারা আবিমা তথা গারো সমাজের নেতৃত্বে আছেন। ব্যঙ্গ চিত্রে যেভাবে দেখানো হয়েছে সেটি দেখেলে আপনার মনেও প্রশ্ন জেগে উঠবে, কেন এমন ব্যঙ্গচিত্র? বিশেষ করে সমাজের মাথাওয়ালাদের নিয়ে? অবশ্য মাথাওয়ালা বলতে নানাভাবে ব্যাখ্যা করা যায় যে যেমন ভেবে নিবেন। তবে ব্যঙ্গ চিত্র দেখে বলতে পারি, তাঁদের থেকে এমন জঘন্য কাজ কখনই আশা করা যায় না। তবুও তারা কাজটি করেছেন। তবে কেন কোদাল মারা কমিটি রাখা হয়েছে তা আগে জানতে হবে।
ইকো-ট্যুরিজম প্রকল্প বানাম ১৭ কোটি টাকার হিস্যা
১৭ কোটি টাকা ব্যয়ে মধুপুর শালবনে বাস্তবায়ন ইকো-ট্যুরিজম প্রকল্প। প্রকল্পের নাম দেওয়া হয়েছে, ‘স্থানীয় ও নৃগোষ্ঠী জনগনের সহায়তায় মধুপুর জাতীয় উদ্যানের ইকো-ট্যুরিজম উন্নয়ন ও টেকসই ব্যবস্থাপনা প্রকল্প।’ গত ২১ জুলাই রবিবার টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার দোখলা রেস্ট হাউজ প্রাঙ্গনে প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্পর্কে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় জানানো হয়, প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছে ১৭ কোটি ১৭ লক্ষ টাকা। ৮ কোটি টাকা ব্যয়ে অবকাঠামো উন্নয়নের কাজ করবে গণপূর্ত বিভাগ। প্রকল্পের রক্ষণা-বেক্ষনের কাজে নিয়োজিত কমিউনিটি ফরেস্ট ওয়ারকারদের জন্য ৫% হার সুদে ৪ কোটি টাকা ঋন দেবে পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক, তাদের প্রশিক্ষণ এবং পোশাকের জন্য ব্যয় হবে ৩ কোটি টাকা। গাড়ি ক্রয়ের জন্য ১ কোটি ও পশুখাদ্যের বাগান সৃজনের জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ১ কোটি টাকা।
সেই প্রজেক্টির প্রকল্প ৩ মে গারো নেতারা যাকে জনগন আখ্যায়িত করেছে ‘কোদাল মারা কমিটি ’ কোদাল মেরে প্রকল্পটি উদ্বোধন করেন। এখন প্রশ্ন হচ্ছে- কোদাল মেরে প্রকল্প উদ্বোধন করলেন নাকি আদিবাসীদের ‘কবর’ তৈরি করলেন?
মধুপুর জলছত্রে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত
মধুপুর আদিবাসীদের জনপ্রিয়, আস্থাভাজন একটি সংগঠন‘জয়েনশাহী আদিবাসী উন্নয়ন পরিষদ’র সভাপতি কোদাল মারার ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়েছেন। তিনি বলেছেন কোদাল মারা উনার ব্যক্তিগত ব্যাপার। এখন প্রশ্ন জাগে, যদি ব্যক্তিগত ব্যাপার হয়ে থাকে, তাহলে কী কারণে উনাকে কোদাল মারার আহ্বান করা হলো! জদু মধু কিংবা হরিপদকে নয় কেন? মাতৃ সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি ছাড়া উনার কী এমন বিশেষ গুণ আছে, যার কারণে কোদাল মারার আহ্বান পেলেন? তিনি পরবর্তীতে নিজের কাজকে কৌশলগত ভুল বলেছেন। সেটা কী কৌশলগত ভুল নাকি, ইচ্ছাকৃত ভুল তা জাতির কাছে আজ পরিষ্কার হয়ে গেছে যখন তিনি বৃহত্তর স্বার্থকে জলাঞ্জলি দিয়ে সামান্য স্বার্থের জন্য কোদাল মেরে প্রজেক্ট এর শুভ উদ্বোধন করেছেন। মানলাম উনার ব্যক্তিগত ব্যাপার কিন্তু এখন আমজনতার প্রশ্ন হচ্ছে, একজন গারো আদিবাসী তাও একটি সংগঠনের সভাপতি হিসেবে কীভাবে কোদাল মেরে ইর্কো ট্যুরিজমের প্রজেক্ট উদ্বোধন করতে পারলেন?
অন্যদিকে কোদাল মারা কমিটির আরেক সদস্য যিনি মাতৃ সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক, তাঁর সম্পর্কে নতুন করে কী বলবো! তিনি তো লোকের মুখে মুখে উচ্চারিত এক নাম। জনশ্রুতি আছে তিনি তো নয় -ছয় লেনদেনের সমন্বয়কারী। কোন অনুদানের টাকা, সমাবেশর টাকা, সেমিনার, সালিস, জমিজমা, কমিশন সবকিছুর টাকা দেখাশোনা তার মাধ্যমেই হয়। কমিশন কমিশন খেলায় তো দারুণ দক্ষ। কিন্তু কী এক জাদুবলে ছাড় পেয়ে বড়বড় পদ আকড়ে থাকেন, বড়ই আশ্চর্য্য লাগে।
কোদাল মারা কমিটির আরেক মহিলা সদস্য যিনি মধুপুর আদিবাসীদের গর্ব। ইতিমধ্যে যিনি সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছিলেন, তিনি এমন কাজটি করবেন তা কেউ কল্পনা করতে পারেন নাই। কিন্তু তিনিও জনসাধারণের মুখে চুনকালি দিয়ে কোদাল মারা কমিটির সঙ্গে যুক্ত হয়ে গেলেন আর কোদাল মেরে কলঙ্কিত হয়ে গেলেন।
এখন ছোট মনে বড় প্রশ্ন জাগে, তাহলে আমরা কাদেরকে বারবার নির্বাচিত করছি! যাদের কাছ থেকে আমরা অনেক বেশি প্রত্যাশা করছি, যাদেরকে আশা ভরসায় রাখি, তারাই যদি এমন কাজটি করেন তাহলে কাদের কাছে আমরা যাবো? কোন নেতাদের আমরা ভরসা করবো?
পরিশেষে বলতে চাই, ইকো-পার্ক, ইকো-ট্যুরিজম, জাতীয় উদ্যানের এর নামে আদিবাসীদের উচ্ছেদ, বনের রক্ষার দাবিতে যে সংগঠনটির জন্ম, সেই সংগঠনের নেতারা যখন সেই ইকো-ট্যুরিজমের পক্ষে কথা বলে, কোদাল মেরে উদ্বোধন করে তখন সংগঠনের আদর্শ নিয়ে, সভাপতিদের নীতি আদর্শ নিয়ে প্রশ্ন জাগে। আমজনতার বুঝতে বাকি থাকে না, সংগঠনের যে নীতি আদর্শ সেই নীতি আদর্শ থেকে তারা কতটা দূরে সরে গেছে। আজকে একটি ব্যঙ্গচিত্র চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে সবার ওয়ালে ওয়ালে। কোদাল মারার ব্যঙ্গচিত্রটি একটি সাধারণ চিত্র নয়, এটি একটি সংগঠনের নীতি নির্ধারকদের বাস্তব কিন্তু করুণচিত্রটিই তুলে ধরেছেন শিল্পী।
গারো ভাষায় জেগে ওঠার গান -হাই আনচিং খ্রেংনা
প্রমোদ মানকিন স্মরণে কবি মতেন্দ্র মানখিনের কবিতা
করোনায় পাহাড়ি আদিবাসীদের সংকটময় জীবন যাপন
করোনায় কেমন যাচ্ছে আদিবাসীদের জীবন
করোনাকালীন তিনটি কবিতা ।। মতেন্দ্র মানখিন
একজন ভালো মনের মানুষ ব্রাদার গিয়োম ।। কিউবার্ট রেমা
https://www.youtube.com/watch?v=eUFX7tTvm0U&t=24s
ttps://www.youtube.com/watch?v=WtVe7pOQaQ8&t=182s
‘১ সেপ্টেম্বর শুক্রবার থকবিরিম-এর যুগপূর্তি উৎসব অনুষ্ঠান’
: এক এক করে বার বছরে পদার্পণ করলো গারো সাহিত্যের পত্রিকা ......বিস্তারিত
-
রাত পোহালেই উদযাপিত হতে যাচ্ছে গারো জনগোষ্ঠীর উৎসব ওয়ানগালা
: রাত পোহালেই উদযাপিত হতে যাচ্ছে গারো জনগোষ্ঠীর সামাজিক সাংস্কৃতিক ও...
-
আজ লেখক ও চিন্তক আলবার্ট মানকিন-এর স্মরণসভা ও স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠান
: মধুপুর গড়াঞ্চলের আদিবাসী নেতা, চিন্তাবিদ, লেখক, সমাজকর্মী, এনজিও কর্মী আলবাট...
-
গুলশান বনানী ওয়ানগালা ২১ অক্টোবর শনিবার
: গুলশান বনানী ওয়ানগালা ২১ অক্টোবর শনিবার আদি সাংসারেক গারো জাতিগোষ্ঠীর...
-
১ সেপ্টেম্বর শুক্রবার থকবিরিম-এর যুগপূর্তি উৎসব অনুষ্ঠান
: এক এক করে বার বছরে পদার্পণ করলো গারো সাহিত্যের পত্রিকা ...
-
রে রে : হায়রে আমার কাঞ্জিয়া ।। নীলু রুরাম
: সমর সাংমার রেরে নিয়েই শুরু করি তবে একটু আলাদা। আমাদের...
-
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের নিরাপদ ব্যবহার ।। জাডিল মৃ
: এক. সময় স্রোতের সাথে আবাহমান ছুটে চলা প্রযুক্তির উন্নতি, মানব...
‘রাত পোহালেই উদযাপিত হতে যাচ্ছে গারো জনগোষ্ঠীর উৎসব ওয়ানগালা’
: রাত পোহালেই উদযাপিত হতে যাচ্ছে গারো জনগোষ্ঠীর সামাজিক সাংস্কৃতিক ও......বিস্তারিত
‘১ সেপ্টেম্বর শুক্রবার থকবিরিম-এর যুগপূর্তি উৎসব অনুষ্ঠান’
: এক এক করে বার বছরে পদার্পণ করলো গারো সাহিত্যের পত্রিকা ......বিস্তারিত