Thokbirim | logo

৭ই আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | ২২শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ

করোনায় পাহাড়ি আদিবাসীদের সংকটময় জীবন যাপন

প্রকাশিত : এপ্রিল ২৪, ২০২১, ১৭:৫৫

করোনায় পাহাড়ি আদিবাসীদের সংকটময় জীবন যাপন

মহামারি দীর্ঘদিন ধরে চলার কারণে পাহাড় ও সমতলের আদিবাসীরাও নিজেদের প্রচলিত প্রথা ভেঙে বের হতে বাধ্য হয়েছেন। তার মধ্যে ব্যতিক্রম নয় খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা। পাহাড়ে খাদ্য সংকট নতুন কিছু নয়।বান্দরবানে থানচি, রুমা, সাজেক খাগড়াছড়ি মায়ুংকপাল মতো আরো অনেক দুর্গম এলাকাগুলোতে প্রতি বছর একটি নির্দিষ্ট সময়ে খাদ্যাভাব দেখা যায়। জুমের ফলন আশানুরূপ না হলে, দুর্গম অঞ্চলে বসবাসকারীদের জীবন আরও কঠিন হয়ে পড়ে। আমরা যারা শহরে বসবাস করি, তাদের পক্ষে সেটা চিন্তা করা প্রায় অসম্ভব। এমনও অনেক দুর্গম অঞ্চল রয়েছে যেখানে প্রতি কেজি চাল নিতে (হেডলোড) ৪০-৫০ টাকা খরচ করতে হয়। প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া বিভিন্ন প্যাকেজের সুবিধা দিয়ে থাকলেও তারা যে বঞ্চিত হবেন, তা সহজে অনুমান করতে পারি। কারণ, দুর্গম এলাকায় বসবাসকারী জুমচাষিসহ শ্রমজীবী পরিবারগুলোর অনেকেই প্রয়োজনীয় শর্ত পূরণ করতে ব্যর্থ হবেন।
কারণ যারা পাহাড়ের যেসব ইউনিয়ন পরিষদের জনপ্রতিনিধি আছেন তারা দুর্গম এলাকায় গিয়ে খোঁজ নিতে রাজি নয়। তাই তাদের সুবিধামতো আত্মীয় স্বজনদের হাতে চলে সরকারি ত্রাণগুলো।
দুর্গম পাহাড়ে সরকার ঘোষিত করোনাকালের খাদ্য-সহায়তাসহ আর্থিক সুবিধাদি জুমচাষিদের হাতে পড়ার চিন্তা কল্পনায় সম্ভব।

এছাড়া পাহাড়ের আদিবাসী সমাজে নারী – পুরুষরা বেশ পরিশ্রমী। অধিকাংশ সমাজে নারীরা খাদ্য সংগ্রাহক ও বিক্রেতা। নারীদের খাদ্য সংগ্রহের জন্য বনে-জঙ্গলে কিংবা ছড়ায় ছড়ায় ঘুরতে হয়। একইভাবে সংগৃহীত নানা ফলমূল বিক্রির লক্ষ্যে নারীদেরই বাজারেও ছুটতে হয়। মানুষ ও যানবাহনের স্বাভাবিক চলাফেরার অভাবে উৎপাদিত পণ্যদ্রব্য পানির দরে বিক্রি হতেও দেখা গেছে। তাছাড়া পাহাড়ে অনেক পাড়া আছে পানি সংগ্রহের জন্য পাহাড়ের পর পাহাড় পাড়ি দিতে হয়। কারণ পার্বত্য অঞ্চলে এ খরা রোদে অনেক জায়গায় পানি সংকট এক বড় সমস্যা।

অন্যদিকে পাহাড়ের তরুণদের বেকারত্ব বেড়ে যাচ্ছে। এবং করোনায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় বিভিন্ন স্কুল কলেজের পড়ুয়া ছেলেরা বিভিন্ন অনলাইন গেইম ফ্রি ফায়ার মতো আরো নানাভাবে আসকক্ত হয়ে পড়ছে।

পাহাড়ে এখন শুধু খাদ্য সংকট নয়, পানীয় জলের সংকটও একটি স্থায়ী সমস্যার রূপ নিচ্ছে। পাহাড়ের অপরিকল্পিতভাবে পর্যটন স্থাপন করে , মহামূল্যবান পানির উৎস প্রাকৃতিক ছড়া ও ঝরনাগুলোর যত নেওয়ার পরিবর্তে ছড়ায় থাকা পাথরগুলোকে অবাধে উত্তোলন করার ফলে, পানির উৎসগুলো এখন মারাত্মক হুমকিতে রয়েছে। আদিবাসীদের জীবন মানেই নিত্যদিনের সংগ্রাম করে জীবন যাপন করা। মহামারী তাদের জীবন সংগ্রামকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। নারীদের আরও ঝুঁকির মুখে ফেলেছে। এখন জুমে ফলন ফলার সময়। এসময় বাজারে চাল, ডাল বিভিন্ন নিত্যদিনের জিনিসপত্র দাম বেড়ে যাওয়ায় পাহাড়ের মানুষকে আরো শঙ্কায় ফেলে দিয়েছে। কারণ কোনকিছু বিক্রি করে বাজারে ক্রয় করার মতো পরিস্থিতি এখন নেই। এ মহামারী পাহাড়ের মানুষকে আরো সংকটময় করে তুলবে।
এ সংকটময় সময়ে পাহাড়ে আদিবাসীরা সরকারের কাছে আকুল আবেদন জানিয়েছেন যে যেন দুর্গম এলাকায় এলাকায় সরকারি সহায়তা গুলো পৌঁছে যায় এবং যেসব এলাকায় পানি সংকট সেখানে পানির ব্যবস্থা করা হয়।

।। আদিত্য ত্রিপুরা, খাগড়াছড়ি।

।। কভার প্রচ্ছদ তিতাস চাকমা।



করোনাকালীন তিনটি কবিতা ।। মতেন্দ্র মানখিন

একজন ভালো মনের মানুষ ব্রাদার গিয়োম ।।  কিউবার্ট রেমা




সম্পাদক : মিঠুন রাকসাম

উপদেষ্টা : মতেন্দ্র মানখিন, থিওফিল নকরেক

যোগাযোগ:  ১৯ মণিপুরিপাড়া, সংসদ এভিনিউ ফার্মগেট, ঢাকা-১২১৫। 01787161281, 01575090829

thokbirim281@gmail.com

 

থকবিরিমে প্রকাশিত কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। Copyright 2020 © Thokbirim.com.

Design by Raytahost