নতুন একটি সাইকেলের প্রত্যাশায় ব্রুস দিন গুনে। তার পুরনো সাইকেলটি চালানোর সময় ঠকঠক, খটখট শব্দ করায় সে আর এটি চালাতে স্বাছন্দ্যবোধ করে না। পড়ন্ত বিকেলে খোলামাঠে বসে সীমাহীন আকাশের দিকে তাকিয়ে সে মনে মনে বলে, স্কুলের বন্ধুদের মতো আমারও একটি নতুন সাইকেল দরকার। কিন্তু পরক্ষণেই চিন্তা করে নতুন সাইকেল কিনার জন্য সে কোথেকে টাকা পাবে। তার মায়ের কাছে তো বেশি টাকা নেই। হাতে যথেষ্ট টাকা না থাকা সত্ত্বেও একদিন সে শহরের বিভিন্ন জায়গায় সাইকেলের দোকানে যায় সাইকেলের দাম জানার জন্য। সাইকেলের সবচেয়ে কম দাম কোন সাইকেলের জিজ্ঞেস করে সে জানতে পারলো সাইকেলের সবচেয়ে কম দাম হচ্ছে ১০০ ডলার। সাইকেলের দাম শুনে সে জিব্বা কামড়িয়ে দোকান থেকে বের হয়। বাড়িতে যাওয়ার পথে সে চিন্তা করে, ১০০ ডলার জোগার করতে তার বছরের পর বছর লেগে যাবে।
একবার কনকনে শীতের ভোরে শহরের দিকে ব্রুস তার পুরনো সাইকেল চালিয়ে মায়ের দোকানের দিকে যাচ্ছিল। সারা রাস্তায় ঘন কুয়াশা ও তুষারের বিস্তরণ। যার কারণে সে অনেক সর্তকতার সাথে ধীর লয়ে সাইকেল চালায়; যাতে পিছিলে পরে না যায়। তার মায়ের দোকানে পৌঁচ্ছার কিছু দূর আগে রাস্তার এক পাশে তুষারে ঢাকা কি জানি একটি জিনিস পড়ে থাকতে দেখতে পায় সে। দেখতে যেন মানিব্যাগের মতো। সাইকেল থেকে সে লাফ দেয় এবং কুড়িয়ে এনে দেখলো সত্যি সত্যিই মানিব্যাগ। মানিব্যাগটি খুলে ব্যাগভর্তি টাকা দেখে হতবাক হয়। টাকাগুলো গুনতে আরম্ভ করলো। পাঁচ ডলার, দশ ডলার, বিশ ডলার এভাবে গুনে গুনে সে অবশেষে ১০০ ডলার পেল।
একশ ডলার! তার পছন্দের সাইকেল কেনার জন্য যে ডলারের প্রয়োজন ছিল। এখন এই টাকা দিয়ে সে নতুন সাইকেল কিনতে পারবে। আসলে কি সে কিনতে পারবে?
তার ভিতরের মানুষটা তাকে বার বার বলল, “না, এই টাকা অন্য কারোর, টাকা হারিয়ে যে মানুষটা অনেক কষ্ট পাচ্ছে। পুলিশের কাছে এখনই টাকাগুলো নেওয়া উচিত তোমার।” বিবেকের তাড়নায় সে টাকাগুলো পুলিশের কাছে নিয়ে যায়। সেই পুলিশও ব্রুসকে পুলিশ ইন্সপেক্টরের কাছে নিয়ে গিয়ে বলল, “স্যার এই সৎ বালকটি কুরিয়ে পাওয়া মানিব্যাগভর্তি টাকা নিয়ে এসেছে।”
ইন্সপেক্টর অতি যত্নের সাথে মানিব্যাগ খুলে দেখলো মানিব্যাগের ভিতরে ঠিকানাসহ নাবিকের পোশাকে পরিহিত এক যুবকের ছবি।
ইন্সপেক্টর বলল, “অসংখ্য ধন্যবাদ ব্রুস, তোমার এ সৎ কাজের জন্য। আশা করছি খুবই শিগগির আমরা মানিব্যাগের মালিককে খুঁজে পাবো।” ব্রুস পুলিশকে ধন্যবাদ দিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিল। মনে কিছুটা কষ্ট পেল বিড় বিড় করে বলতে লাগলো যে, এতগুলো টাকা হাতের নাগালে পেয়েছিলাম; এক নিমিশেই চলে গেল। কিন্তু অন্যদিকে চিন্তা করে সে মনে আনন্দপোলব্ধি করলো যে সে সঠিক কাজই করেছে পুলিশের কাছে টাকা ফেরত দিয়ে।
গল্পটা এখানেই শেষ নই। পরের দিন সকালে পুলিশ ব্রুসকে ফোন করে জানাল যে তারা মানিব্যাগের মালিককে খুঁজে পেয়েছে। মানিব্যাগের মালিক হচ্ছে একজন নাবিক যুবক। যে নাকি সারারাত সমুদ্রে দায়িত্ব পালন করে বাড়িতে ফিরছিলেন। এমন সময় সে নিচে দেখতে পায় কি যেন হামাগুড়ি দিয়ে পালাচ্ছে। সেটি দেখার জন্য সাইকেল থেকে নামার সময় তার মানিব্যাগটি পড়ে যায়। মানিব্যাগটি ফিরে পেয়ে সে তোমার প্রতি অনেক কৃতজ্ঞতা জানালো।
ব্রুসও হৃদয়ে অনেক আনন্দ পেলো। নিজেকে ধিক্কার দিয়ে সে বলল, “ইস্ নাবিক যুবকের সেই হারানো টাকা দিয়ে আমি নতুন একটা সাইকেল কিনতে চেয়েছিলাম, ছি! যদি কিনেই ফেলতাম তাহলে বোকামী হয়ে যেতো। টাকাগুলো ফেরত দিয়ে আহা অন্তরে কতই না আনন্দ লাগছে। যদি বিবেকের নির্দেশনায় এই ভাল কাজ না করতাম তাহলে প্রতিটিক্ষণে অন্তরে অশান্তিতে আমাকে ভোগতে হতো।”
দু’য়েক সপ্তাহের পর ব্রুস স্থানয়া রটারি ক্লাবে দুপুরের আহারের জন্য নিমন্ত্রণ পেল। সে কোনো মতেই বিশ্বাস করতে পারছে না যে কেনইবা তাকে এত বড় আপ্যায়নের জন্য ডাকা হচ্ছে। তার মাকে সে বলল, “মা, এখানে মনে হয় কিছু ভুল হচ্ছে। নামের ক্ষেত্রে ভুলবোঝাবুঝি হয়েছে। এটা মনে বাবার নিমন্ত্রণ পত্র। পূর্ণবয়স্ক ব্যাক্তিরা তাদের সাথে খাওয়ার জন্য কেনই বা একজন বালককে চাচ্ছে?
ব্রুসের মা তাকে বলল, “আমি মনে করি এখানে কোনো ভুলবুঝাবুঝি নেই। নিমন্ত্রণপত্রে সুস্পষ্ট তোমার নাম লেখা আছে। তোমার সেখানে যাওয়াই ভাল।”
ব্রুস আসলে জানতো না যে তার বিষয়ে পুলিশ ইন্সপেক্টর এক ব্যবসায়ীকে জানিয়েছিল এবং সেই ব্যবসায়ীও অন্যজনকে বলেছে এভাবে বলতে বলতে অনেকে বড় বড় ব্যবসায়ীরাই ব্রুসের বিষয়ে জানতে পারলো। তারপর তারা একত্রে সিদ্ধান্ত নিল ব্রুসকে জনসম্মুখে পুরষ্কৃত করবেন তার এই মহৎকর্মের জন্য। অতএব তারা তাকে চমৎকার মধ্যাহ্ন প্রীতিভোজের উপহার দিল এবং ছোট্ট একটা খামে বিশ ডলার বকশিস দিল। পরের দিন সব খবরের কাগজের প্রথম পৃষ্ঠায় ব্রুসের ছবিসহ শিরোনামে ছাপা হলো শহরের মধ্যে সবচেয়ে সৎ বালক।
মূল: আংকেল আর্থার
একজন ভালো মনের মানুষ ব্রাদার গিয়োম ।। কিউবার্ট রেমা
ব্রাদার গিয়োমের সাথে যত মধুর স্মৃতি ।। রঞ্জিত রুগা
https://www.facebook.com/100101444697668/videos/782974379102661
https://www.youtube.com/channel/UCIN1jWNhsu6FJvLX6wdQABg
‘১ সেপ্টেম্বর শুক্রবার থকবিরিম-এর যুগপূর্তি উৎসব অনুষ্ঠান’
: এক এক করে বার বছরে পদার্পণ করলো গারো সাহিত্যের পত্রিকা ......বিস্তারিত
-
১ সেপ্টেম্বর শুক্রবার থকবিরিম-এর যুগপূর্তি উৎসব অনুষ্ঠান
: এক এক করে বার বছরে পদার্পণ করলো গারো সাহিত্যের পত্রিকা ...
-
রে রে : হায়রে আমার কাঞ্জিয়া ।। নীলু রুরাম
: সমর সাংমার রেরে নিয়েই শুরু করি তবে একটু আলাদা। আমাদের...
-
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের নিরাপদ ব্যবহার ।। জাডিল মৃ
: এক. সময় স্রোতের সাথে আবাহমান ছুটে চলা প্রযুক্তির উন্নতি, মানব...
-
বর্তমান সময়ের তুমুল জনপ্রিয় শিল্পী দিশন অন্তু রিছিলের জন্মদিন আজ
: বর্তমান সময়ের তুমুল জনপ্রিয় শিল্পী দিশন অন্তু রিছিলের জন্মদিন আজ।...
-
বীর মুক্তিযোদ্ধা দেবতোষ যেত্রা আর নেই
: হালুয়াঘাট উপজেলার ৪নং সদর ইউনিয়নের কালিয়ানীকান্দা গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা পাস্টার...
-
কেনিয়ার কৃষকরা হাতি তাড়াচ্ছে মৌমাছি দিয়ে
: কেনিয়ায় হাতির তাণ্ডব থেকে ফসল রক্ষায় ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছে কৃষকরা।...
‘১ সেপ্টেম্বর শুক্রবার থকবিরিম-এর যুগপূর্তি উৎসব অনুষ্ঠান’
: এক এক করে বার বছরে পদার্পণ করলো গারো সাহিত্যের পত্রিকা ......বিস্তারিত
‘১ সেপ্টেম্বর শুক্রবার থকবিরিম-এর যুগপূর্তি উৎসব অনুষ্ঠান’
: এক এক করে বার বছরে পদার্পণ করলো গারো সাহিত্যের পত্রিকা ......বিস্তারিত