আমি আনেক বছর ধরে তেইজে ব্রাদারদের সাথে কাজ করছি। প্রথমে ব্রাদারদের বস্তি এলাকা ও হরিজন পল্লির স্কুলগুলো দেখি। কয়েক মাস দেখার পর ভাল লাগেনি,পরে ব্রাদার গিয়োম তাঁর প্রোগ্রাম আচিক স্কুল দেখতে পাঠালো। আচিক স্কুল মানে গারো মাতৃ ভাষায় শিক্ষা স্কুল। স্কুল বেশি নেই মাত্র বারটি স্কুল, আর বার জন শিক্ষ। সেটা হালুয়াঘাট উপজেলাতেই সীমাবদ্ধ,আর অন্য কোথাও নেই। এই গারো ভাষার স্কুল সপ্তায় ছুটির দিন শুক্রবারের হয়। শিক্ষকদের অনেকে নিজের ভাষা ভাল লাগে, তাই অন্যান্য দিনেও সকালে অথবা বিকেলে ক্লাশ নেয়। দুই বছরের মধ্যে আমি বারটি স্কুল থেকে বাড়িয়ে ৭২টি আচিক স্কুল করি কলমাকান্দা উপজেলা, দুর্গাপুর উপজেলা, ধৌবাওড়া উপজেলা, হালুয়াঘাট ও নালিতাবাড়ি উপজেলায় বেশি ছিল, কিছু আবিমা ও মযমনসিংহ শহরেও ছিল। ক্যাথলিক মিশন স্কুলে, প্রতি স্কুলে এক জন শিক্ষককে ৫০০ শত টাকা বেশি দিয়ে আচিক স্কুল করিয়েছি আর এই সব স্কুল আমাকেই দেখতে হতো।
প্রতি মাসে কম পক্ষে দুইটি সেমিনার হয়, ছোট ছেলে মেয়েদের প্রতিযোগিতা মুলক অংশ গ্রহন ছিল মূল উদ্দেশ। ধর্মীয় গান, বাইবেল পাঠ, গণনা, নাচ রেরে, আজিয়া, সেরেজিং, কবিতা আবৃতি এভাবে আট দশটি আইটেম নিয়ে সেমিনার হয়। উদ্দেশ ছিল ছেলে মেয়েরা মাতৃভাষা শিক্ষার সাথে সাথে বহু লোকের সামনে কথা বলা, নাচ গান করে সাহস বাড়িয়ে তুলা। আর বয়স্ক গারোদেরকেও দেড় দুই ঘন্টা সময় দিতাম, তারা গারোদের পুরনো সংস্কৃতি দেখাতো, এভাবে এক সময় সাংসারেক গারোদের একত্রিত করেছি, ওয়ানগালা অনুষ্ঠান করতে পেরেছি ।
সেমিনারে বেশি টাকা খরচ করিনি দুই আড়াই হাজারে মধ্যেই শেষ করেছি, ডাল মিরামিশ দিয়েই সেমিনার চালাতাম। পরে গ্রাম ঘুরতে গিয়ে দেখি, আনেক গরিব ছেলে মেয়েরা আল্প টাকার অভাবে কলেজ পড়তে পারে না। আমি আচিক টিচার পরিবর্তন করলাম। মেট্রিক পাশ ছেলে মেয়েদের পাঁচ শত টাকা স্টাইপেন্ট দিয়ে সপ্তাহে একদিন শুক্রবার স্কুল চালিয়ে দিলাম। এভাবে শত শত গরিব ছেলে মেয়েদের এইচএস সি ও ডিগ্রি পাশ করিয়েছি। এখনো এই প্রোগাম চালু আছে শেষ হয়ে যায়নি। এই স্টাইপেন্ট পাওয়া ছেলে মেয়েদের নাচ ও গানের ওস্তাদ দিয়ে গান শিখানো হয় যেন তারা ছোট ছেলে মেয়েদের নাচ গান শিখাতে পারে। তারাও যেন কলেজ পড়ার সাথে সাথে নিজেদেরকে গড়ে তুলতে পারে, এটাই আমাদের তেইজে ব্রাদারদের উদ্দেশ।
এই কাজ করতে গিয়ে আনেক খারাপ ব্যবহারও পেয়েছি।ধনীরাও স্টাইপেন্ট চায়, না দিলে মেজাজ দেখিয়ে চলে যায়। সবাইকে দেওয়াও সম্ভব নয় সীমিত টাকার মধ্যে কাজ করতে হয়। মাঝে মাঝে আমাকে সামনে নিয়ে প্রশংসা করে। আবার তাদের মধ্যে থেকেই বলে, সে কি তার বাবার টাকা দেয় নাকি। আমি কথা বলি না নীরবে সব হজম করি। নীরবে থাকতে থাকতে এখন নীরবতাকেই ভাল লাগে। এক সময় তুরা জেলায় গভঃ কলেজের প্রিন্সিপালের সাথে দেখা করেছিলাম উদ্দেশ ছিল ,তার লেখা বই নেওয়া। চা পান করতে করতে তিনি বললেন, গারোদের নিয়ে কাজ করতে চাও, প্রচুর ধৈর্য ও নীরবতা লাগবে, তুমি একটা কিছু লেখ, না জেনে খারাপ সমালোচনা করবে। সমাজের জন্যে ভাল কাজ কর, বলবে কে বলেছে এই সব বাজে কাজ করতে, যারা এরকম বলবে তারা কিন্তু কিছুই লিখবে না কিছুই করবে না। আজ দীর্ঘদিন কাজ করার পর তার কথায় বার বার বেশি মনে পরে, অবশ্য এই ধরনের লোক বেশি নেই। কিন্তু এই ধরনের লোক কথা বললে আর দশজন ভাল লোক নীরবতা পালন করে, তাদেরকে একাই একশতের মত লাগে।
‘১ সেপ্টেম্বর শুক্রবার থকবিরিম-এর যুগপূর্তি উৎসব অনুষ্ঠান’
: এক এক করে বার বছরে পদার্পণ করলো গারো সাহিত্যের পত্রিকা ......বিস্তারিত
-
আজ লেখক ও চিন্তক আলবার্ট মানকিন-এর স্মরণসভা ও স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠান
: মধুপুর গড়াঞ্চলের আদিবাসী নেতা, চিন্তাবিদ, লেখক, সমাজকর্মী, এনজিও কর্মী আলবাট...
-
গুলশান বনানী ওয়ানগালা ২১ অক্টোবর শনিবার
: গুলশান বনানী ওয়ানগালা ২১ অক্টোবর শনিবার আদি সাংসারেক গারো জাতিগোষ্ঠীর...
-
১ সেপ্টেম্বর শুক্রবার থকবিরিম-এর যুগপূর্তি উৎসব অনুষ্ঠান
: এক এক করে বার বছরে পদার্পণ করলো গারো সাহিত্যের পত্রিকা ...
-
রে রে : হায়রে আমার কাঞ্জিয়া ।। নীলু রুরাম
: সমর সাংমার রেরে নিয়েই শুরু করি তবে একটু আলাদা। আমাদের...
-
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের নিরাপদ ব্যবহার ।। জাডিল মৃ
: এক. সময় স্রোতের সাথে আবাহমান ছুটে চলা প্রযুক্তির উন্নতি, মানব...
-
বর্তমান সময়ের তুমুল জনপ্রিয় শিল্পী দিশন অন্তু রিছিলের জন্মদিন আজ
: বর্তমান সময়ের তুমুল জনপ্রিয় শিল্পী দিশন অন্তু রিছিলের জন্মদিন আজ।...
‘আজ লেখক ও চিন্তক আলবার্ট মানকিন-এর স্মরণসভা ও স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠান’
: মধুপুর গড়াঞ্চলের আদিবাসী নেতা, চিন্তাবিদ, লেখক, সমাজকর্মী, এনজিও কর্মী আলবাট......বিস্তারিত
‘১ সেপ্টেম্বর শুক্রবার থকবিরিম-এর যুগপূর্তি উৎসব অনুষ্ঠান’
: এক এক করে বার বছরে পদার্পণ করলো গারো সাহিত্যের পত্রিকা ......বিস্তারিত