আজ বাবা হরিপদ রিছিলের জন্ম জয়ন্তী। বাবার জন্ম ও মৃত্যু পাশাপাশি। যেমন বলা হয়ে থাকে জন্মিলে মরিতে হইবে । আজ জন্ম তো কাল মৃত্যু। বাবার জীবনচক্রে তাই ছিল। ১০৬তম জন্মবার্ষিকী পালন হয়ে গেলো আর পরেরদিন প্রথম সকালেই মৃত্যু হলো। তাই এদিনটা অন্যরকম আলাদা।
১০৬ পার হয়ে ১০৭ এর প্রথম দিবসে নিজের মত করে বিছানায় শুয়ে চিরবিশ্রামে চলে গেলে তুমি বাবা। পরিবারের কাউকে চলে যাওয়ার ক্ষণ সময়টা জানতে দিলে না। একা একা নিজের মত করে বিশ্রাম নিলে। ১০৭ এ পা দিয়ে প্রথম সূর্যের তাপ ও মাটির গন্ধ শুঁকে ঘরের ভিতর বিশ্রামে গিয়ে চিরবিশ্রাম—শান্তির বিশ্রাম-ই —নিয়ে নিলে!! এ দিন আমরা ভুলতে পারিনি–ভুলতে পারবো না।
বাবার কয়েকটি বিষয় আমাকে বেশি করে নাড়া দেয়। একবার কে বা কারা যেন আমাদের বিরুদ্ধে নালিশ নিয়ে এসেছিল বাবার কাছে যে, আমরা খারাপ লোকদের সাথে চলাফেরা করি মিশি ইত্যাদি ইত্যাদি। বাবা শুনে বলেছিলো, শুধু কুৎচিয়া মাছ দেখেছেন!! এ মাছ বরাবরই কাদামাটিতে-ই থাকে কিন্তু তার গায়ে কি কোন কাদা লাগে-??? কাদা নেই তো গায়ে–নাকি!! এ থেকে কি শিখি আমরা–‘নিজে ভাল হলে খারাপ কারও সাথে মিশলেও কাদা গায়ে লাগে না বা খারাপ হয়ে যায় না।’ আমি অবাক হয়ে গিয়েছিলাম এ কথা শুনে। এখন ভাবি বাবা কত বড় মনের মানুষ ছিলেন। আমাদেরকে রাগ না করে বরং এ শিক্ষা-ই দিয়ে গেলো। সবার সাথেই মিশতে হয়। ধনী-গরিব, জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল মানুষের সাথে মিশলে কোন ক্ষতি নেই।
সততা ছিল বাবার একটি শক্তিশালী দিক। এই সততার কারণেই সামাজিক কমিটিগুলিতে কোষাধ্যক্ষ-এর দায়িত্ব নিতে হয়েছে অনেকবার। লোভ নামক বস্তু লোভী বানাতে পারেনি কখনো। ন্যায়বোধ নীতিবোধ তাঁকে আস্তেপৃষ্টে ধরে রেখেছিল। লোক দেখানো, নিজেকে বড় করে ভাবা, অহংবোধ এসবের কোন কিছুই ছিল না। খালি পায়ে শহর বন্দর ঘুরেছেন।
আরেকটি কথা না বললেই নয়। কোন কাজ কালকের জন্য বা কিছুক্ষণ পর করবো বলে পার পাওয়া যেতো না। আজকের কাজ আজকেই বা এখনের কাজ এখনই করতে হতো। একবার আমাদের এলাকায় ‘চি রুপ্পা’ অর্থাৎ ‘পানিতে ডুবে থাকা’ নামক এক বিচার ব্যবস্থা হওয়ার কথা ছিল। এটা ছিল আমাদের জখমকুড়ার খামাল দীঘিতে। বাবা বরাবরই আগের রাতেই কালকের কী কাজ হবে তা সকলকে দায়িত্ব বন্টন করে দিতো। চাকর ও ছেলেমেয়েদেরকেও সে দায়িত্ব থেকে বাদ দিতো না। সন্ধ্যার খাওয়া শেষে আমার দাদাদেরকে কাজের কথা বললো “কাল সকালে তোমরা সকলে এই সামনের জমিটা চাষ করবে।” কিন্তু এদিকে সকলের ইচ্ছা—–‘চি রুপ্পা’ বিচার দেখার। সাধারণত এধরনের বিচার ভোরেই হয়ে থাকে। কী করবে কী করবে— কাজও সারতে হবে আবার বিচারও দেখতে হবে। হালচাষ বাদ দিয়ে তো যেতে পারবে না কেউ। সিদ্ধান্ত হলো রাত দু’টা থেকে চার’টা পর্যন্ত চাষ করে তবেই যাবে। তাই হলো। রাতে চাষ শেষ করে– ভোরে সকলে সেই খামাল দীঘিতে হাজির। এদিকে সকালে উঠে বাবা দেখে চাষ হয়ে গেছে–। নিয়মের সময়ের কোন হেরফের হওয়ার সুযোগ দেওয়া হতো না। অনেককিছু বলার থাকলেও আজ এ পর্যন্তই থাক।
পরিশেষে বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গানের মত বলতে পারি—‘তুমি আমাদের পিতা, তোমায় পিতা বলে যেন জানি, তোমায় নত হয়ে যেন মানি—।’
‘১ সেপ্টেম্বর শুক্রবার থকবিরিম-এর যুগপূর্তি উৎসব অনুষ্ঠান’
: এক এক করে বার বছরে পদার্পণ করলো গারো সাহিত্যের পত্রিকা ......বিস্তারিত
-
১ সেপ্টেম্বর শুক্রবার থকবিরিম-এর যুগপূর্তি উৎসব অনুষ্ঠান
: এক এক করে বার বছরে পদার্পণ করলো গারো সাহিত্যের পত্রিকা ...
-
রে রে : হায়রে আমার কাঞ্জিয়া ।। নীলু রুরাম
: সমর সাংমার রেরে নিয়েই শুরু করি তবে একটু আলাদা। আমাদের...
-
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের নিরাপদ ব্যবহার ।। জাডিল মৃ
: এক. সময় স্রোতের সাথে আবাহমান ছুটে চলা প্রযুক্তির উন্নতি, মানব...
-
বর্তমান সময়ের তুমুল জনপ্রিয় শিল্পী দিশন অন্তু রিছিলের জন্মদিন আজ
: বর্তমান সময়ের তুমুল জনপ্রিয় শিল্পী দিশন অন্তু রিছিলের জন্মদিন আজ।...
-
বীর মুক্তিযোদ্ধা দেবতোষ যেত্রা আর নেই
: হালুয়াঘাট উপজেলার ৪নং সদর ইউনিয়নের কালিয়ানীকান্দা গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা পাস্টার...
-
কেনিয়ার কৃষকরা হাতি তাড়াচ্ছে মৌমাছি দিয়ে
: কেনিয়ায় হাতির তাণ্ডব থেকে ফসল রক্ষায় ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছে কৃষকরা।...
‘১ সেপ্টেম্বর শুক্রবার থকবিরিম-এর যুগপূর্তি উৎসব অনুষ্ঠান’
: এক এক করে বার বছরে পদার্পণ করলো গারো সাহিত্যের পত্রিকা ......বিস্তারিত
‘১ সেপ্টেম্বর শুক্রবার থকবিরিম-এর যুগপূর্তি উৎসব অনুষ্ঠান’
: এক এক করে বার বছরে পদার্পণ করলো গারো সাহিত্যের পত্রিকা ......বিস্তারিত