তন্ময় ডিব্রা চাল্লাং-য়ের গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহ জেলার ধোবাউড়া থানার ধাইরপাড়া গ্রামে। তরুণ উদ্যোক্তা হিসেবে একজন সফল মাশরুম চাষী। একজন সফল উদ্যোক্তা হয়ে ওঠার গল্প বলেছেন থকবিরিম প্রতিনিধি শাওন রিছিলকে। পাঠক আপনাদের জন্যে তন্ময় ডিব্রা চাল্লাং-য়ের সফল হয়ে ওঠার গল্প প্রকাশ করা হলো- সম্পাদক।
থকবিরিম : আপনি এবং আপনার প্রতিষ্ঠান সর্ম্পকে কিছু বলুন।
তন্ময় ডিব্রা চাল্লাং : ২০১৮ সালের শেষের দিকে আমি মাশরুম চাষ এবং এর বাজারজাতকরণ সর্ম্পকে আগ্রহী হই এবং সাভারের “জাতীয় মাশরুম উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ কেন্দ্র”-এ প্রশিক্ষণ নিয়ে মাশরুম চাষ শুরু করি। প্রথম পর্যায়ে আমি সাভার থেকে মাশরুম নিয়ে এসে ঢাকায় সরবরাহ করতাম। পরবর্তীতে সাভার থেকে বীজ নিয়ে আমার বাবার সহযোগিতায় আমাদের নিজ গ্রাম ধাইরপাড়া, ধোবাউড়া-তে মাশরুম উৎপাদন শুরু করি। মূলতঃ এভাবেই “নিকি’স মাশরুম”- এর যাত্রা শুরু।
থকবিরিম : আমাদের দেশের বেশির ভাগ শিক্ষার্থী পড়ালেখা শেষে চাকরি খুঁজতে ব্যস্ত থাকে, সেক্ষেত্রে আপনি ভিন্ন হলেন কেন?
তন্ময় ডিব্রা চাল্লাং : সত্যি কথা বলতে, আমি নিজেও গতানুগতিক ধারায় ঢাকায় অন্য সবার মতো চাকরি খুঁজেছি, চাকরি করেছি। তবে, চাকরির গন্ডি থেকে বের হয়ে নিজে কিছু একটা করার চেষ্টা ছিল অনেক আগে থেকেই। ভিন্ন বলতে নয়, চেষ্টা করছি নিজের ইচ্ছেটাকে বজায় রেখে মানুষের জন্য তথা নিজের কমিউনিটির জন্য কিছু করার।
থকবিরিম : শুরুটা কেমন? মূলধন কেমন ছিল?
তন্ময় ডিব্রা চাল্লাং : সব কিছুর শুরুটা একটু কঠিনই হয়। অনেক প্রতিকূলতার মধ্যেও আমি মাশরুম চাষের উপর প্রশিক্ষণ নেই এবং প্রাথমিকভাবে ১০,০০০/- (দশ হাজার টাকা মাত্র) মূলধন নিয়ে আমাদের ব্যবসা শুরু করি।
থকবিরিম : আপনার প্রতিষ্ঠান থেকে কী ধরনের সার্ভিস দেওয়া হয়ে থাকে বা কী ধরনের প্রোডাক্ট আপনারা দিয়ে থাকেন?
তন্ময় ডিব্রা চাল্লাং : আমাদের প্রতিষ্ঠানের প্রধান পণ্য হলো মাশরুম। আমরা বিভিন্ন ধরনের মাশরুম সরবরাহ করে থাকি। ফ্রেশ ওয়েস্টার মাশরুম, শুকনো ওয়েস্টার মাশরুম, গুড়ো ওয়েস্টার মাশরুম, মিল্কি মাশরুম, বাটন মাশরুম ইত্যাদি। এছাড়াও যাদের মাশরুম এবং মাশরুম চাষ সম্পর্কে আগ্রহ আছে তাদের আমরা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বিনামূল্যে তথ্য দিয়ে থাকি।
থকবিরিম : গ্রাহক সংগ্রহ হয়ে থাকে কেমন করে?
তন্ময় ডিব্রা চাল্লাং : “নিকি’স মাশরুম” নামে আমাদের একটি ফেসবুক পেইজ এবং গ্রুপ আছে। সেই পেইজ এবং গ্রুপ-এ আমরা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ধরনের পোস্ট দিয়ে থাকি। মূলত সেখান থেকেই আমাদের গ্রাহক তৈরি হচ্ছে। এছাড়াও ক্রয়-বিক্রয় সম্পর্কিত বিভিন্ন ফেসবুক পেইজ ও গ্রুপেও আমরা মাশরুম সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য, মাশরুমের ক্রয়-বিক্রয়ের বিজ্ঞাপণ দিয়ে থাকি। সেখান থেকেও আমরা গ্রাহক পেয়ে থাকি। গ্রাহক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, পরিচিতব্যক্তিবর্গের মাধ্যমেও আমরা অনেক গ্রাহক পেয়ে থাকি।
থকবিরিম : আমাদের দেশের পরিপ্রেক্ষিতে একজন উদ্যোক্তা হওয়া কতটুকু গ্রহনযোগ্য?
তন্ময় ডিব্রা চাল্লাং : ভালো কিছুর গ্রহনযোগ্যতা সব জায়গাতেই রয়েছে। একজন উদ্যোক্তা হিসেবে আমরা যদি ভালো কিছু নিয়ে কাজ করি তাহলে আমরা যে কোন জায়গাতেই আমাদের গ্রহণযোগ্যতা তৈরি করতে পারবো। তার জন্য লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য থাকতে হবে সৎ, সুন্দর, মানুষের উপকারে আসে এমন কিছু। আমি অর্গানিক মাশরুম নিয়ে কাজ করছি, সেবা দিচ্ছি, অর্গানিক মাশরুম পৌঁছে দিচ্ছি সকল গ্রাহকের দোরগড়ায়।
থকবিরিম : এক্ষেত্রে সরকারি সাহায্য কি দেওয়া হয় বা পাওয়া যায়?
তন্ময় ডিব্রা চাল্লাং : মাশরুম চাষের ক্ষেত্রে সরকার থেকে অনেক ধরনের সাহায্য-সহযোগিতার ব্যবস্থা রয়েছে। অনেক ভাগ্যবান উদ্যোক্তা আছেন যারা এই সুবিধাটি পেয়েছেন। ব্যক্তিগত ভাবে আমিও সরকারী সহযোগিতা পাওয়ার আশা রাখি কিন্তু আমি বিশ্বাস করি, নিজ উদ্যোগে মাশরুম খাতে দক্ষতা বৃদ্ধি এবং সাধারন জনগনকে সাশ্রয়ীমূল্যে মাশরুম সরবরাহ করে সেবা প্রদান করলে আমি নিজেকে সার্থক মনে করবো।
থকবিরিম : আপনার প্রতিষ্ঠানের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা এবং ব্যক্তিগত ও প্রাতিষ্ঠানিকভাবে কোন নতুন পদক্ষেপ বা উদ্যোগ আছে কিনা।
তন্ময় ডিব্রা চাল্লাং : ব্যক্তিগত ও প্রাতিষ্ঠানিক ভাবে আমার প্রথম পরিকল্পনা হচ্ছে, আমার নিজস্ব মাশরুম ফার্মের পরিধি বৃদ্ধি করা যা থেকে আমরা প্রতিদিন ২৫-৩০ কেজি মাশরুম উৎপাদন করা সম্ভব। আমাদের দেশে গরম আবহাওয়ার জন্য গ্রীষ্মকালে মাশরুম উৎপাদন অনেক কমে যায়, ফলে মাশরুমের চাহিদা থাকা সত্ত্বেও তার যোগান দেওয়া সম্ভব হয় না। সেই জন্য আমার পরিকল্পনা, হলো, নিজের ফার্ম এমন ভাবে তৈরি করা যাতে সারা বছর মাশরুম যোগান দেওয়া সম্ভব হয়।
থকবিরিম : নিজেকে সফল মনে করি কিনা।
তন্ময় ডিব্রা চাল্লাং : আমি এখন পর্যন্ত নিজেকে সফল মনে করি না। এখনও অনেক পথ পাড়ি দেওয়া বাকি। আমি নিজেকে সেই দিন সফল মনে করবো যেদি আমি আমার নিজের মাশরুম খামারে কমপক্ষে ১০ জনের কর্মসংস্থান তৈরি করে দিতে পারবো।
থকবিরিম : কোভিডে আপনি কীভাবে আপনার প্রতিষ্ঠান চালিয়েছেন?
তন্ময় ডিব্রা চাল্লাং : কোভিডের সময়ে নিজস্ব ও সরকারি স্বাস্থ্যবিধি মেনে আমরা আমাদের পণ্য প্যাকেজিং ও ডেলিভারি দিয়েছি। আমরা আমাদের ডেলিভারি ভাইদের সহযোগিতায় সকল প্রকার স্বাস্থ্যবিধি মেনেই আমরা আমাদের কাজ চালিয়েছি এবং এখনও চালিয়ে যাচ্ছি।
থকবিরিম : পেশার উন্নতির জন্য তরুনদের কাছে আপনার পরামর্শ কী ?
তন্ময় ডিব্রা চাল্লাং : যে কোন কাজ শুরু করতে গেলে আগ্রহ ও ইচ্ছাশক্তি প্রয়োজন। নিজের ইচ্ছাশক্তি পাশাশাশি আমি যে কাজ বা যে পেশায় থাকি না কেন সেই কাজকে ভালোবাসতে হবে, সম্মান করতে হবে। তাহলেই একদিন না একদিন উন্নতি সম্ভব।
‘জীবনের যত অম্ল-মধুর স্মৃতি।। নীলু রুরাম’
: ইতিহাস কথা বলে আমি গারো ব্যাপ্টিস্ট কনভেনশন (জিবিসি) পরিচালিত জয়রামকুড়া......বিস্তারিত
-
শারিরীক প্রতিবন্ধী বসুদেব ত্রিপুরা দম্পতির পাশে “বাংলাদেশ ত্রিপুরা যুব সংসদ”
: খাগড়াছড়িতে অসহায় শারিরীক প্রতিবন্ধী বসুদেব ত্রিপুরার পাশে দাঁড়ালেন সদ্য গঠিত...
-
শুভ জন্মদিন কবি জেমস জর্নেশ চিরান
: জেমস জর্নেশ চিরান বাংলাদেশি গারো সাহিত্যাঙ্গনে পরিচিত এক নাম। স্বাধীনতা...
-
শিক্ষাবিদ ও নেত্রী আগস্টিনা চিছাম আর নেই
: ধোবাউড়া উপজেলার ভালুকাপাড়া সেন্ট তেরেজা’স হাই স্কুলের শিক্ষিকা শিক্ষাবিদ ও...
-
আজ গারো জাতিসত্তার বিশিষ্ট লেখক ও গবেষক সুভাষ জেংচামের জন্মদিন
: আজ ২০শে জুন(সোমবার) ২০২২ গারো জাতিসত্তার বিশিষ্ট লেখক ও গবেষক ...
-
লামায় রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ কোম্পানি কর্তৃক ক্ষতিগ্রস্ত ৪০ পরিবারকে ত্রাণ বিতরণ
: লামায় রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ কোম্পানি কর্তৃক ক্ষতিগ্রস্ত ত্রিপুরা ও ম্রো ৪০...
-
বাংলাদেশ কাথলিক বিশপ সম্মিলনী’র(সিবিসিবি) সুবর্ণ জয়ন্তী আজ
: দেশের কাথলিক বিশপদের প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ কাথলিক বিশপ সম্মিলনী (সিবিসিবি) সুবর্ণ...
‘শারিরীক প্রতিবন্ধী বসুদেব ত্রিপুরা দম্পতির পাশে “বাংলাদেশ ত্রিপুরা যুব সংসদ”’
: খাগড়াছড়িতে অসহায় শারিরীক প্রতিবন্ধী বসুদেব ত্রিপুরার পাশে দাঁড়ালেন সদ্য গঠিত......বিস্তারিত
‘জীবনের যত অম্ল-মধুর স্মৃতি।। নীলু রুরাম’
: ইতিহাস কথা বলে আমি গারো ব্যাপ্টিস্ট কনভেনশন (জিবিসি) পরিচালিত জয়রামকুড়া......বিস্তারিত