Thokbirim | logo

২৬শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | ১১ই ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ

ড. রবিন্স বার্লিং ও গারো ভাষার বৈচিত্র্য ।। দিনলিপি।। তর্পণ ঘাগ্রা

প্রকাশিত : জানুয়ারি ১২, ২০২১, ১৬:৪৬

ড. রবিন্স বার্লিং ও গারো ভাষার বৈচিত্র্য ।। দিনলিপি।। তর্পণ ঘাগ্রা

ড. রবিন্স বার্লিং সম্পর্কে  লেখা শেষ হয়নি, আর একটুক না লিখলে অপূর্ণতা থেকে যাবে। ‘তোমাদের গারো আচিক ভাষা খুবই ভাল, এখনো নামের ভাষার মূল বা আসল ইতিহাস খোঁজে পাওয়া যায়। যেমন মা এই শব্দটিকে গারোরা আমা বলে। কেন আমা বলে, আলদো মিকথাংআনা আমা বলে। এভাবে বিড়ালকে গারো ভাষায় মেংগ নাম দিয়েছে, কেন এরকম নাম দিয়েছে,  মেং মেং ডাকে, ডাক শুনে তার নাম গারোরা মেংগ নাম  দিয়েছে। আরো বলা যায় জিলমা জিলমা দংআনা দও-জিলমা, নিনা চিরংআনা দও-চিরং এভাবে ভাষা থেকে মূল আংশ খোঁজে পাওযা যায়। তিনি বলেন, খোঁজে দেখুন পৃথিবীর আধীকাংশ ভাষা এরকম মূল খোঁজে পাওযা যায় না।

তিনি দুঃখ করে বলেন, আমি বাংলাদেশের গারোদের আচিক  ভাষায় প্রশ্ন করি, তারা উত্তর দেয় না, তাকিয়ে থাকে। এত ভালো, সুন্দর মায়ের ভাষাকে তারা মূল্য দেয় না। আর শিক্ষিত গারোরা, আমি গারো ভাষায় বলি আর তারা ইংরেজিতে  উত্তর দেয়। জাতির  ভাষা সংস্কৃতির মা বাবা আছে কিন্তু  নিজের ভাষা হারিয়ে বাংলা ইংরেজি ভাষার মা বাবাকে আমার বললে হবে না। নিজেরটি ঠিক রেখে শত জাতির ভাষা শেখা যায়। আমাকে বলেন, ব্রাদার গিয়োম ভালো মানুষ, তার সহযোগিতায় মায়ের ভাষা শেখাতে চেষ্টা করো।

আরও মূল্যবান কথা তিনি বলেছেন, প্রাচীন গারো রাজা নকমারা খুবই দূরদৃষ্টি সম্পন্ন ছিলো। হাজার বছর পর গারোদের আবস্থা কী হবে। এই সকল ভালোভাবে চিন্তা ভাবনা করে ভূমি সম্পতির আইন কানুন তৈরি করেছে। তারা সম্পদগুলো ব্যক্তি সম্পত্তি করেনি মাহারি  সম্পত্তি করেছে। মেঘালয়ে এখনো গারোদের সম্পত্তি মাহারি সম্পত্তি। মাহারি সম্পত্তি ইচ্ছে করলেই বিক্রি করা যায় না। এই মাহারি সম্পত্তি বিক্রি যোগ্য নয়, যার কারণে গারোদের এক শতাংশ জমি নষ্ট হয় না, হারিয়ে যায় না। এই নিয়ম না থকলে কবে মেঘালয়ের গারোরা এিপুরা রাজ্যের মত হয়ে যেত বললেন।

গারো হিলসের গারোদের জমি জমা মাহারির কাজ থেকে সন পাত্তা মেয়াদি পাত্তা নিয়ে জমি ভোগ করতে হয়, মাহারির সম্পত্তি গারো ছাড়া অন্য জাতি নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। মাহারি সম্পতি বিক্রি করতে চাইলে সব মাহারি একত্রে বসে, সবার সন্মতি নিয়ে বিক্রি করতে হয় আর সেই মাহারির সবাই বিক্রির  টাকা পয়সা ভাগ পাবে, দিতে বাধ্য। আমি ঘুরে দেখলাম অনেক চালাক মারোওয়ারি, বিহারি গারো মেয়েকে বিবাহ করে স্ত্রীর নামে জমি পাত্তা কিনে ব্যবসা করতে দেখেছি। কিন্ত এই নিয়ম কতদিন চলবে, কাশমিরেও কাশমিরবাসীদের জন্যে এরকম আলাদা নিয়ম ছিল।

গত বছর সরকার সব নাগরিকের জন্যে সমান অধীকার করে দিয়ে দিয়েছে। যদি এই নিয়ম মেঘালয় রাজ্যে আসে তাহলে গারোরা কী পারবে  নিজেদের সম্পদ রক্ষা করতে। নাকি জমি বিক্রি করে বিশটি ওয়াক মেরে ছেলে মেয়েদের বিয়ে দিবে, জমা জমি  বিক্রি করে লক্ষ টাকা খরচ করে মিমাংকাম, জন্ম বাষির্কী পালন করবে জানি না।



 




সম্পাদক : মিঠুন রাকসাম

উপদেষ্টা : মতেন্দ্র মানখিন, থিওফিল নকরেক

যোগাযোগ:  ১৯ মণিপুরিপাড়া, সংসদ এভিনিউ ফার্মগেট, ঢাকা-১২১৫। 01787161281, 01575090829

thokbirim281@gmail.com

 

থকবিরিমে প্রকাশিত কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। Copyright 2020 © Thokbirim.com.

Design by Raytahost