Thokbirim | logo

৭ই আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | ২২শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ

ম্রো আদিবাসীদের নিজেদের জমিতেই থাকতে দিন ।। মানুয়েল চাম্বুগং 

প্রকাশিত : ডিসেম্বর ২৭, ২০২০, ২১:১২

ম্রো আদিবাসীদের নিজেদের জমিতেই থাকতে দিন ।। মানুয়েল চাম্বুগং 

১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ আমি দেখিনি। তবে শুনেছি পাক হানাদার বাহিনীর হাত থেকে এদেশকে মুক্ত-স্বাধীন রাষ্ট্র করার জন্য জাতি, বর্ণ ও ধর্ম নির্বিশেষে এদেশের সর্বস্তরের মানুষ যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। রক্তক্ষয়ী সেই যুদ্ধের একমাত্র উদ্দেশ্য ছিল এদেশের প্রত্যেকেই যেন স্বাধীনভাবে বসবাস করতে পারে। দেশ স্বাধীন হয়েছে ঠিকই কিন্তু দুঃখের বিষয়! স্বাধীনতার ৫০ বছরের পরও ম্রো আদিবাসীদের মতো অনেক আদিবাসী জনগোষ্ঠিদের এখনো স্বাধীন দেশে নিজেদের ভিটেমাটিতে পরাধীন হয়ে বসবাস করতে হয়।

বাংলা ছায়ছবি, হিন্দি বা তামিল সিনেমাগুলোতে দেখা যায় যে, সরকারের কোনো প্রভাবশালী লোকেরা বা কোন ভূমি লোভী ব্যবসায়ীরা গরিব অসহায় বস্তিবাসী, আদিবাসী ও কৃষকের জমি দেশের উন্নয়নের নামে হায়নার মতো জমি দখল করে নেই। কিন্তু আজ বাস্তবেই এধরনের অবৈধ, অন্যায় ও অমানবিক পদক্ষেপ নিতে দেখতে পাচ্ছি।

গত ১৩ ডিসেম্বরের প্রথম আলো প্রত্রিকায় প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী, বান্দারবানের চিম্বুক-থানছি সড়কের পাশে ২০ একর জমিতে ‘ম্যারিয়ট চন্দ্রপাহাড় রিসোর্ট অ্যান্ড এ্যামিউজমেন্ট পার্ক’নামে একটি পাঁচতারা রিসোর্ট নির্মাণের প্রকল্প নিচ্ছে পার্বত্য চট্টগ্রামে অবস্থানরত সেনা কল্যাণ সংস্থা ও সিকদার গ্রুপ। যার কারণে সে অঞ্চলের ৬টি গ্রামের ১১৬টি পাড়ার প্রায় ১০ হাজার ম্রো জনগোষ্ঠী নিজেদের জমি হারাতে বসেছে। ভাবতে অবাক লাগে যেখানে সেনাদের ম্রো বাসিন্দাদের বিভিন্ন বিপদ-আপদ থেকে রক্ষা করার কথা সেখানে তারা উন্নয়নের নামে তাদের উচ্ছেদ করতে যাছে। জনজাতির কণ্ঠের সোশ্যাল মিডিয়ায় বলা হয়েছে এর আগেও কাপ্রু ম্রোপাড়ার ৬০ একর জমি দখলে ২০০ ম্রো ও মারমা পরিবার এবং সেপ্রু পাড়ার ৬০০ একর জমি দখলে ১২৯টি ম্রো পরিবার উচ্ছেদ হয়। এভাবে আমরা দেখি নীলগীরি, নীলাচল, নিলাদ্রি, নীল দিগন্ত, সাইরো, নীল ক্যাফে, ডিমপাহাড়, আলুটিলা, সাজেক, স্বপ্নপুরী, গাজনী অবকাশ, মুধুটিলা ও দোখলা প্রভৃতি আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকায় পার্ক তৈরি করে বছরের পর বছর লাখ লাখ টাকা নিজেদের ভুড়িতে জমাছে পর্যটন কেন্দ্রের কর্পোট কোম্পানির সদস্যরা। আর এদিকে আদিবাসী জনগোষ্ঠীরা যাযাবরের মতো এদিক-সেদিক ঘুরে ঘুরে নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছে। ম্রো আদিবাসী জনগোষ্ঠীর উচ্ছেদমুখী হওয়ার খবর শুনে পার্বত্য এলাকার আদিবাসীদের মনে আজ ভয়, সংশয়, উদ্বিগ্ন কখন যে তাঁদেরকেও উচ্ছেদ হতে হয়। জাতির বিবেকের কাছে আজ প্রশ্ন আদিবাসী ভাইবোনেরা এভাবে বছরের পর বছর উচ্ছেদ হতে হতে এদেশ থেকে বিলীন হয়ে যাবে না তো?

ম্রো আদিবাসীদের এই দুর্দিনে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট করোকমলে অনুরোধ করি, ম্রো আদিবাসী ভাইবোনদেরকে নিজেদের জমিতেই থাকতে দিন; তাদেরকে নিজেদের মতো বাঁচতে দিন।



মান্দি সংস্কৃতিতে খ্রিস্টের জন্মোৎসব উদযাপন ।। মানুয়েল চাম্বুগং

https://www.facebook.com/100101444697668/videos/213456456823577

 




সম্পাদক : মিঠুন রাকসাম

উপদেষ্টা : মতেন্দ্র মানখিন, থিওফিল নকরেক

যোগাযোগ:  ১৯ মণিপুরিপাড়া, সংসদ এভিনিউ ফার্মগেট, ঢাকা-১২১৫। 01787161281, 01575090829

thokbirim281@gmail.com

 

থকবিরিমে প্রকাশিত কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। Copyright 2020 © Thokbirim.com.

Design by Raytahost