Thokbirim | logo

৭ই আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | ২২শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ

Jajong Namma /  জাজং নাম্মা ।। জাডিল মৃ

প্রকাশিত : ডিসেম্বর ০৯, ২০২০, ২১:৫৯

Jajong Namma /  জাজং নাম্মা ।। জাডিল মৃ

ডিসেম্বর মাস। পুরোদমে ব্যস্ত থাকতে হয়। ব্যস্ততা না থাকলেও এদিক- সেদিক করলেই সন্ধ্যা নেমে আসে। এ কদিন তো রৌদ ওঠার নামগন্ধ নেই। সকালে  ঘনকুয়াশা থাকে আবার সারাদিন কুয়াশায় ভরা থাকে। প্রচন্ড শীত না হলেও শীত যে পড়ছে তা টের পাওয়া যাচ্ছে। বর্তমান সময়ে প্রত্যেকটা মানুষ কোন না কোন কাজে ব্যস্ত। বসে থাকার বাও নেই। সুতরাং কারো সাথে বসে যে এক কাপ চা খাবো তার কোন উপায় নেই।

স্ব-উদ্যোগে দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে প্রতিদিন চুনিয়া গ্রামে যেতে হয়। প্রতিদিন দুপুর কিংবা বিকালবেলা যাই। যাওয়ার পথে একটি নতুন দোকান দেখতে হয়। দোকানটি দেখে ভালো লাগে। শীতের জামাকাপড়, চকলেট, বিস্কুট, কপি আরো অনেক কিছু আছে। কেন ভালো লাগে সেটাই পরে আলোচনা করছি। এই দোকানটি অনেক ছোট তবে খুবই পরিপাটি। দোকানের মালিক অর্থাৎ যিনি স্ব-উদ্যোগে দোকানটি পরিচালনা করছেন তিনি একাধারে কবি বিশেষ করে নারীদের অধিকারের পক্ষে কথা বলেন। তিনি পূর্ণিমা নকরেক। যার বাড়ি চুনিয়া গ্রামেই। চুনিয়া গ্রামেই শতবর্ষীয় সাংসারেক ধর্মের অনুসারী খামাল (পুরোহিত)  জনিক নকরেক এখনো বেঁচে আছেন। আবার কবি রফিক আজাদের চুনিয়া গ্রামকে নিয়ে লেখা বিখ্যাত কবিতাও আছে যা আপনারা সবাই কম-বেশি জেনেছেন, পড়েছেন । কিংবা চুনিয়াতেই সাংসারেক ধর্মবলাম্বীদের অরিজিনাল ‘ওয়ান্না বা ওয়ানগালা হয়। যা-হোক,চুনিয়া গ্রামকে নিয়ে অনেক কিছুই লেখা যায়।

পূর্ণিমা নকরেক এর কথা বলছিলাম। আমি হঠাৎ করে আজকে তার দোকানে নামলাম। কিছু না বলেই কটা ছবি তুললাম। প্রথমেই প্রশ্ন ছুঁড়ে দিলাম এখানে কেন? উত্তরে বললো,”এখান থেকেই শুরু করছি ভবিষ্যতে দেখা যাবে কী হয়!” আবার প্রশ্ন করলাম কেন উদ্যোগটা নিতে গেলে বা কে পরামর্শ দিলো? উত্তরে বললো,”আমি নিজেই স্বউদ্যোগে কিছু করার চেষ্টা করছি”। সব উত্তর শুনে ভালো লাগলো। সবচেয়ে ভালো লাগার জায়গাটা কোথায়(?) ভালো জায়গাটা হচ্ছে ‘সাহস’। চুনিয়া একটি পরিচিত গ্রাম তবে যেহেতু কাছেই পীরাগাছা, দোখলা, তে’মাথা বাজারেই নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস পাওয়া যায়। তাই গ্রামে এমন দোকান চলবে না বললে ভুল হবে কী? তবে যে সাহস দেখিয়েছেন তা বাহবা পেতেই হবে। আরো ভালো লাগার জায়গাটা হচ্ছে কিছুদিন আগেও ব্যবসা কিংবা উদ্যোক্তা হলে গারো পুরুষদের জয়জয়কার ছিল। এখন সময় পাল্টাচ্ছে গারো নারীদের ব্যবসার বা উদ্যোক্তা হওয়ার দিক দিয়ে অনেকটা এগিয়ে।

গারো জাতির মধ্যে ব্যবসার দিক দিয়ে যদি সফল হয় তাহলে বলতে হবে পার্লার ব্যবসা। নিজস্ব সংগঠন আছে। ফলে পার্লার ব্যবসা বাড়ছে। অনেকে করোনার জন্য টিকতে পারেননি। তবুও অনেকেই তা কাটিয়ে উঠেছে। এই যে নারীরা ব্যবসার দিকে আসছে তা আমি ইতিবাচক হিসাবে দেখি। কারণ একজন নারী কিংবা মা সন্তানকে  উদ্যোক্তা হতে,ব্যবসায়ী হতে যে বুদ্ধি পরামর্শ ও সার্বিক তত্বাবধান করতে পারে বাবা হয়তো সময় নাও দিতে পারে(গারো জাতির ক্ষেত্রে বলছি)। এবং মায়ের হাতেই ভালো মন্দের ভার থাকে সবেচেয়ে বেশি।

দিদি যে দোকানটি নাম দিয়েছেন ‘জাজং নাম্মা’, সেই দোকানটি চাঁদের মতো করে চুনিয়া গ্রামেই শুধু নয় সব গ্রামে,উপজেলা,জেলা সারা পৃথিবীতেই যেন আলো দেয়। এই গারো জাতির মধ্য থেকেই বড় বড় উদ্যোগটা ব্যবসায়ি ছড়িয়ে পড়ুক সারা পৃথিবীতে এই কামনা করি। চাঁদের মতো করে গারো জাতি আলো ছড়িয়ে দিক এমন উজ্জ্বল আলো যেখানে জাজং নাম্মা’ মতো করে ইতিবাচক হয়ে থাকুক সারাটা বছর এই সুন্দর পৃথিবীতে।



 




সম্পাদক : মিঠুন রাকসাম

উপদেষ্টা : মতেন্দ্র মানখিন, থিওফিল নকরেক

যোগাযোগ:  ১৯ মণিপুরিপাড়া, সংসদ এভিনিউ ফার্মগেট, ঢাকা-১২১৫। 01787161281, 01575090829

thokbirim281@gmail.com

 

থকবিরিমে প্রকাশিত কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। Copyright 2020 © Thokbirim.com.

Design by Raytahost