Thokbirim | logo

৭ই আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | ২২শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ

আদিবাসী যুব উদ্যোক্তাদের সফল মিলনমেলা ।। জাডিল মৃ

প্রকাশিত : নভেম্বর ২২, ২০২০, ২০:৪২

আদিবাসী যুব উদ্যোক্তাদের সফল মিলনমেলা ।। জাডিল মৃ

প্রথম

আপনারা অনেকেই নিশ্চিয় অবগত আছেন যে, গত ১৯-২০ নভেম্বর কারিতাস ময়মনসিংহ অঞ্চল প্রাঙ্গণে বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের আদিবাসী যুব উদ্যোক্তাদের সমাবেশ শেষ হলো। সমাবেশে অংশগ্রহণকারী উদ্যোক্তাগণ ৭০ জনের মতো রেজিস্ট্রেশন করেছিলেন। কিন্তু রেজিস্ট্রেশন ছাড়াও আরো অনেক উদ্যোক্তাগণ উপস্থিত ছিলেন। যারা সমাবেশে সহভাগিতার জন্য অংশগ্রহণ করেছিলেন। নতুন পুরাতন মিলিয়ে অনেক উদ্যোক্তাদের স্টল ছিল। যা রীতিমতো সফল এবং সাড়া জাগানো একটি সমাবেশ। প্রথমবারের মতো উদ্যোক্তা সমাবেশ হলেও আয়োজকদের কোন কমতি ছিল না। উনারা চেষ্টা করেছেন যেন উদ্যোক্তা সমাবেশ সফল হয়। আমি নিশ্চিতভাবে বলতে পারি, সমাবেশটি যেমন সফল হয়েছে; তেমনি বৃহত্তর ময়মনসিংহ যুব আদিবাসীদের অনুপ্রেরণার আরেকটি নাম হচ্ছে উদ্যোক্তা সমাবেশ-২০২০।

আমার কাছে কিছু একটা কমতি লেগেছিল তবুও সর্বোপরি সবকিছুই ভালো লেগেছে।এখানে “মাতগ্রিক” প্লাটফর্মকে ধন্যবাদ দিতেই হয়। কারণ মাতগ্রিক এর কারণে গারো আদিবাসী যুব উদ্যোক্তাগণ একটা সুযোগ পেয়েছে যার কারণে এত উদ্যোক্তা তৈরি হতে পেরেছে।

দ্বিতীয়

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব গারো জাতির জন্য এক বিশেষ শিক্ষণীয় সময় এবং গুরুত্বপূর্ণ উপলদ্ধির জায়গা তৈরি হয়েছে। কারণ গারো জাতির মধ্যে সরকারি/বেসরকারি চাকরি এবং কৃষির দিকে মনোযোগ ছিল বেশি। কিন্তু ভাইরাসের ফলে অনেক কিছুর মধ্যে উপলদ্ধি তৈরি হয়েছে যে, উদ্যোক্তা এবং ব্যবসার সাথে জড়িত না হলে টিকে থাকা যাবে না। সুতরাং করোনাভাইরাসের আগে গুটিকয়েক যে উদ্যোক্তা ছিলেন কিংবা যারা ব্যবসার সাথে জড়িত ছিলেন তাদের চাইতে মানে এই ক’মাসে(ভাইরাস) গারো উদ্যোক্তা দ্বিগুন হয়েছে।যদিও উদোক্তা হয়েছেন, নিজেদের আত্মকাশ ঘটাছেন সেটা নিঃসন্দেহে ভালো উদ্যোগ। তবে হ্যাঁ, জরুরি বিষয় হচ্ছে টিকে থাকা। আমার সবসময়  প্রত্যাশা থাকবে যাদের উদ্যোক্তা হিসাবে আত্মপ্রকাশ ঘটেছে, তারা যেন টিকে থাকে এবং যারা নতুন উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য পথ বাড়াছেন এবং নতুন উদোক্তা হতে চাইছেন যেন সকলে তাদের প্রতি সাহায্য সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন।

কমবেশি অনেক উদ্যোক্তাকে অনলাইনে তাদের কার্যক্রম দেখেছি বাস্তবে দেখার সুযোগ হলো যা আত্মতৃপ্তির খোড়াক জুগালো।

তৃতীয়

কারিতাস ময়মনসিংহ অঞ্চল প্রাঙ্গণে যে সমাবেশটি হলো, যে স্টলগুলো দেখেছিলাম সব স্টলে যাওয়া চেষ্টা করেছিলাম। প্রথমেই খাবার এর কথা বলি, Nicky’s mushroom এর কথা। Nicky’s mushroom এর স্বত্বাধিকারী ডিব্রা দার সাথে ফেইসবুকে পরিচয়। বাস্তবে তার মাশরুম নিয়ে কার্যক্রম দেখলাম, মাশরুমের যাবতীয় উপকার সম্পর্কে জানলাম, সেখানেই মাশরুম খেলাম। খুবই দারুণ ও চমৎকার উদ্যোগ। ক’টা যে মাশরুম খেয়েছি হিসাব নেই। কাবেরী স্ন্যাকস এর কর্ণারে নানা ধরনের বিস্কুট খেলাম আরো খেলাম মুয়া বেশ চমৎকার লেগেছে। তবে আফসোস থেকে গেল যদি গরম গরম খেতে পারতাম আরো মজা হতো।

 

Protima Rongma এর Food factory এর আলুর চপ খেলাম, আবার বড়া তাড়াতাড়ি দিয়েছিলেন বলে সিদ্ধ ঠিকমত হয়নি। চা’টাও খেলাম কিন্তু বেশি খেতে পারলাম না। তবে হ্যাঁ, Cheery’s Kitchen এর চা এবং কফি দু’টোই ভালো ছিল। আবার অনেকেই ফ্রেশ মসলা নিয়ে কাজ করছে দাম কম, নিশ্চয় প্রশংসার দাবিদার।

চতুর্থ

অনেকগুলো অর্গানিক শাক-সবজি ফ্রেশ দোকানের নমুনা দেখলাম। এখন তো সারবিষ ছাড়া শাক-সবজি পাওয়া দু্ষ্কর। নিত্যপ্রয়োজন টাকা দিয়ে কিনে যদি বিষ খেতে হয় তাহলে কেমন লাগবে! যারা ফ্রেশ শাক-সবজি নিয়ে কাজ করছে তাদেরকে নিঃসন্দেহে ধন্যবাদ দিতেই হয়।

এবং ট্রেডিশনাল অনেক শাক-সবজি দেখলাম। সত্যিই ভালো লেগেছে।

এছাড়াও Smilsak এর নামে যুব উদ্যোক্তার টি-শার্ট দেখলাম। খুবই সুন্দর টি-শার্টগুলো।

 

অনেকগুলো কাপড়ের দোকান দেখলাম, হস্তশিল্পের দোকান দেখেছি, সত্যিই স্বপ্নের মতো লেগেছে গারো যুব উদ্যোক্তাদের কার্যক্রম দেখে। পরিশেষে যার কথা না বললেই নই,”আপসান” এর কথা।

গারো উদ্যোক্তাদের মধ্যে যার কথা প্রথমেই মুখে যথারীতি নিজেদের ইউনিক পণ্য নিয়ে হাজির হয়েছিলেন। আপসান এগিয়ে যাচ্ছে নিজগুণে, অনেকেই তা অনুসরণ ও অনুপ্রেরণা যোগাছে।

পরিশেষে কিছু কথা বলতে চাই, “ব্রিং” নামে সম্প্রতি নতুন ব্যান্ড তৈরি হয়েছে। যে ব্যান্ডটি  গান ও মিউজিক দিক দিয়ে অনেক উন্নতি সাধনের চেষ্টা করে যাচ্ছে। আশার কথা হচ্ছে, প্রতিভাবান অনেক নতুন মুখ সামনের সারিতে আসছে। এই ব্যান্ডের অর্ক নামের ছেলেটির বাঁশির শুনে ফিদা হয়েগেছি। ব্যক্তিগতভাবে আমি গারোদের মধ্যে সাইয়ন দার বাঁশির মতো কারোর বাঁশির সুর পছন্দ হয়নি। তবে এখন আমি অর্ক ছেলেটির ভক্ত হয়েগেছি। অর্কের বাঁশির সুর আমাকে মুগ্ধ করেছে। আশা রাখি সে অনেকদূর যাবে। উদ্যোক্তা সমাবেশ সফল হয়েছে, ভবিষ্যতে আরো যেন বড় পরিসরে হয় এই কামনা করি।



 




সম্পাদক : মিঠুন রাকসাম

উপদেষ্টা : মতেন্দ্র মানখিন, থিওফিল নকরেক

যোগাযোগ:  ১৯ মণিপুরিপাড়া, সংসদ এভিনিউ ফার্মগেট, ঢাকা-১২১৫। 01787161281, 01575090829

thokbirim281@gmail.com

 

থকবিরিমে প্রকাশিত কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। Copyright 2020 © Thokbirim.com.

Design by Raytahost