Thokbirim | logo

৭ই আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | ২২শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ

ওয়ানগালায় কীভাবে সাসাত সওয়া এলো ।। রেভা. মণীন্দ্রনাথ মারাক

প্রকাশিত : অক্টোবর ২৯, ২০২০, ১৪:০৩

ওয়ানগালায় কীভাবে সাসাত সওয়া এলো ।। রেভা. মণীন্দ্রনাথ মারাক

অতিকালের কথা। সে অ-নে-ক অ-নে-ক দিন আগের কথা। তখন এ সুন্দর পৃথিবী ছিলো না। এমতাবস্থায় সৃষ্টিকর্তা তাতারা-রাবুগা মনে মনে একটা কিছু করার চিন্তা করলেন। তিনি একটা সুন্দর পৃথিবী সৃষ্টি করার সংকল্প গ্রহণ করলেন। আর তাঁর এ সংকল্পকে প্রকাশ করে তিনি নস্তু-নপান্তকে বললেন এবং মুষ্ঠি বালি দিয়ে তাঁকে পৃথিবী গড়তে আদেশ দিলেন। নস্তু-নপান্তে সে আদেশ বাস্তবায়নে যথাক্রমে মাচি ও চিপং নকমা-বালপং গিতেলের সাহায্য নিলেন। কিন্তু তাঁরা অগাধ জলাধিতল থেকে মাটি এনে নস্তু-নপান্তুকে দিতে পারলেন না। অবশেষে নস্তু-নপান্ত চিচিং বারচিংকে অগাধ জলাধিতলে পাঠালেন। আর তিনি, সেখান থেকে মাটি এনে নস্তু-নপান্তুকে দিলেন। আর নস্তু-নপান্তু সেই মাটি দিয়ে এ পৃথিবী-মানে ও পিলতে-কে সৃষ্টি করলেন। মানে হলো পৃথিবীর স্থলভাগ ও পিলতে হলো পৃথিবীর জলভাগ। এই স্থলভাগ ও জলভাগ নিয়েই হলা আমাদের পৃথিবী। কিন্তু তখন পৃথিবীর স্থলভাগ ছিলো ভেজা, স্যাঁতসেঁতে ও টলমলে নরম। সমুদ্রের বিপুল জলরাশি অর্থাৎ পৃথিবীর জলভাগ ছিলো, নিশ্চল ও নিস্তরঙ্গ। সবকিছ্ইু ঘোর অন্ধকার নিমজ্জিত ছিলো। পৃথিবী ছিলো শ্রীহীন ও প্রাণিহীন। তাই নিজের নির্মিত এ অবস্থা দেখে নস্তু-নপান্তু খুশি হতে পারলেন না। সে কারণে তিনি পৃথিবীকে শুষ্ক, শক্ত, মজবুত, সুন্দর ও প্রাণবন্ত করে তুলতে সৃষ্টিকর্তা তাহারা-রাবুগার কাছে আকাশে সূর্য এবং চন্দ্র দেবতাকে নিয়োগ করতে ও পৃথিবীতে বায়ু প্রবাহের জন্য পবন দেবতাকে নিয়োগ করতে প্রার্থনা জানালেন। তাতারা-রাবুগা সে প্রার্থনা শুনলেন। তিনি সূর্য দেবতাকে আকাশে থেকে কিরণ দিয়ে, আলো-দিয়ে ও তাপ দিয়ে-ভেজা সেঁতেসেঁতে ও টলমল নরম-মাটিকে শুষ্ক, শক্ত এবং মজবুত করতে ও জল-স্থলে বায়ু-প্রবাহে পবন দেবতা সাহায্য করতে আদেশ দিলেন।

সূর্য দেবতা সালজং নতুন সৃষ্টি পৃথিবীকে নগ্ন-উলঙ্গ ও অসহায় অবস্থায় দেখলেন। মনে তাঁর করুণার উদ্রেক হলো। কারণ তখনো পৃথিবীর উপরিভাগের মাটি শক্ত হয়নি, পাথরের গঠন হয়নি, পাহাড়-পর্বত গড়ে উঠেনি, গিরিশৃঙ্গের উদ্ভব হয়নি, তৃণ-বৃক্ষাদি জন্মায়নি তখনো বৃষ্টি বর্ষেনি, নদী, খাল-বিলের সৃষ্টি হয়নি। এসব দেখে সূর্যদেবতা সালজং বেশ-ভূষনে সজ্জিত হয়ে তাঁর দূতদের ও সঙ্গী-সাথীদের, ‘চলো আমরা সারা পৃথিবী পরিভ্রমণ করে স্থলভাগের মাটি শক্ত করি, পাহাড়-পর্বত করি, তৃণ-লতাগুল্ম-বৃক্ষরাজিতে পূর্ণ করি। জলভাগে আঘাত করে তরঙ্গ উঠাই, সচল করি। পৃথিবীকে সুশোভিত ও সৌন্দর্যমণ্ডিত করি।’ এভাবে কথা বলে, যুক্তি করে তাঁরা পৃথিবীকে পূর্ণতাদানের জন্য বেরুলেন। নজারিক-নদংদিল ধাত্রী মায়ের মতো পৃথিবীর যত্ন নিলেন, গরাংপা-পিতরাংপা দু-ভাই প্রস্তুরাদি ছিটিয়ে দিলেন। নরেচিরে কিমরে বকরে বৃষ্টি এনে পৃথিবীর বুকে বর্ষালেন। পৃথিবীর চারকোন থেকে বায়ু এসে পৃথিবীকে আবৃত করলেন। এভাবে দেব-দেবীদের পারষ্পরিক সাহায্য-সহযোগিতায় পৃথিবীর মাটিতে স্থল সৃষ্টি করলেন, উপরিভাগের মটি শক্ত করলেন। পাহাড়-পর্বত, গিরিশৃঙ্গ সৃষ্টি করলেন। মাটিতে প্রস্তুর, লৌহ ও অন্যান্য ধাতুর উদ্ভব ঘটালেন। পৃথিবীর পরিভাগে তৃণ-বৃক্ষরাজি জন্মালেন, ঝোপ জঙ্গল, প্রস্রবন, ঝর্না, নদ-নদী, খাল-বিল, জলাভূমি প্রভৃতি সৃষ্টি করলেন। সাগরজলে আঘাত করে তরঙ্গ ও স্রোতের সৃষ্টি করলেন। কালক্রমে-খেচর, ভূচর ও জলচর সবপ্রাণির আবির্ভাব ঘটালো। পৃথিবীর নানা সমারোহে সৌন্দর্যমণ্ডিত হয়ে পরিপূর্ণ হলো।

পৃথিবীর সুন্দর ও পরিপূর্ণরূপ দেখে সূর্যদেবতা নিজেও আনন্দিত হলেন। এখন পৃথিবী পূর্ণাঙ্গ রূপ লাভ করলো। ভূচর, খেচর ও জলচর সব প্রাণির বিচরণ ক্ষেত্র ও আবাস-স্থল হলো। সব প্রাণির ভোজন-পানের জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্য ও পানীয়ের আর  কোনো অভাব রইলো না। তাই সূর্যদেবতা সালজং-এর মনে কতো শান্তি ও স্বস্তি। এভাবে পৃথিবীর পরিপূর্ণ সুন্দর রূপ দেখে শান্তিতে, স্বস্তিতে ও তৃপ্তিতে তাঁর দিন চলে যায়, মাস চলে যায়, বছরও চলে যায়। একদিন হঠাৎ করে মনে পড়ে গেল তাঁর ছোটভাই-বামিন, রাচা-সজন পিতেলের কথা। বেশ অনেক দিন হলো-তাঁর সঙ্গে ছোট ভাইয়ের কোনো দেখা সাক্ষাৎ নেই। তাই একদিন সাজ-সজ্জা করে তাঁর ছোট ভাইয়ের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ করতে গেলেন। কিন্তু সে সময়ে তাঁর ছোট ভাই-সামিন-রাচা-সজন গিতেল বাড়িতে ছিলেন না। তিনি কৃষি কাজের জন্য মাঠে গিয়েছিলেন। সূর্যদেবতা মিসি-চিপিনপা-সালজং না’দাংপা তা জেনে তাঁর ছোট ভাই রামিন-রাচা-সজন গিতেলকে ডেকে আনবার জন্য তাঁর স্ত্রীকে মাঠে পাঠালেন। তাঁর স্ত্রী মাঠে গিয়ে তাঁর স্বামীকে তাঁর বড় ভাইয়ের আগমনের কথা জানালেন, তাঁর দাদা (বড় ভাই) তাঁর সঙ্গে দেখা করতে এসেছেন। কিন্তু বামিন রাচা-সজন গিতেল কৃষিকাজে এতো ব্যস্ত ছিলেন যে, তিনি এ সময়ে বাড়িতে আসতে চাইলেন না। স্ত্রীকে বললেন, যেন তাঁর বড় ভাই মিসি চিপিনপা-সালজং না۰দাংপাকে অপেক্ষা করতে বলেন, থেকে যেতে বলেন। তাঁর স্ত্রী রামিন রাচা-সজন গিতেলকে জিজ্ঞেস করলেন-তাঁকে দিয়ে আদর-আপায়ন করবো। কাজে মগ্ন থাকায় ও অনেক কথাবার্তা হওয়ায় হঠাৎ বিরক্ত হয়ে বলে-ফেললেন- যাও, শুষ্ক গো-বিষ্ঠা পুড়ে তার ধূপে তাঁকে আদর-আপ্যায়ন কর। তার স্ত্রী আর কথা বলতে চাইলেন না, তাঁকে রাগাতে চাইলেন না। স্বামীর কথা মতো তাড়াতাড়ি বাড়িতে এলে শুষ্ক গো-বিষ্ঠা এনে সূর্যদেবতা মিসি চিপিনপা-সালজং না’দাংপার সন্মুখে রেখে পুড়ে দিলেন।

সূর্যদেবতা মিনি চিপিনপা-সালজং না’দাংপা ছোট ভাইয়ের স্ত্রীর এসব কা- দেখে হতবাক হয়ে গেলেন। আগুনে পোড়ে ঐ শুষ্ক গো-বিষ্ঠার ধুপ তাঁর চোখে-মুখে লাগাতে লাগাতে তিনি ভাবলেন তাঁর ছোট ভাই বামন রাচা-সজন গিতেল তাঁকে অপেক্ষা করতে বলে, বাড়িতে থেকে যেতে বলে তাঁর স্ত্রীকে দিয়ে তাঁকে অপমানই করেছে। এই অপমানবোধ তাঁকে ভীষণ পীড়া দিল। তাই আর এক মুহূর্তও তাঁর ছোট ভাইয়ের বাড়িতে থাকতে চাইলেন না। তিনি ভীষণ রেগে সেখান থেকে অন্যত্র চলে গেলেন।

মিসি চিপিনপা-সালজং না’দাংপা চলে গেলেন। কিন্তু চলার পথেও ভীষণ অপমানের জ্বালায় মনের ক্ষোভে সংবরণ করতে পারলেন না। তাই পথে যেতে যেতে তাঁর ছোট ভাই বামিন রাচা-সজন গিতেলকে অভিশাপ দিতে লাগলেন। তিনি তাঁর ছোট ভাইকে এই বলে অভিশাপ দিলেন-“বামিন রাচা-সজন গিতেল, আমার প্রতি তুমি এ কী করেছ? জগতের প্রত্যেক মানুষ যুগে যুগে তোমার এ কাজের নিন্দা করবে। তোমাকে তারা ঘৃণা করবে। তুমি এ জীবনে অধঃপতিত হবে। তোমার বড় ভাইকে তুমি মর্যাদা দাওনি। তোমার উন্নতি ও প্রতিষ্ঠা আর হবে না। আমার প্রতি তুমি যা করেছো, তার চাইতে তুমি অপমানিত হবে, লাঞ্জিত হবে। জলের বুগা (জলের দেবতা) তোমাকে টেনে, নিবে তোমার হাড় মাংস খাবে। আমি তোমাকে এ অভিশাপ দিচ্ছি।

এভাবে পথ চলতে চলতে মিসি চিপিনপা-সালজং না‘দাংপা এসে পৌঁছালেন আ۰গিংসাক গারো সা۰আতাল অঞ্চলে। তারপর ঐ অঞ্চলের কাপেরা গিংগারাপা সুউনদি জেংজেংগি নামক স্থানের আয়ে মেসালি সিংসালি তৎমারি নাম্নী এক গরিব বিধবার বাড়িতে এসে উঠলেন। এ বিধবার ‘দতি বা দৎনি’ নাম্নী এক পূর্ণ যৌবনা সুন্দরী নারী যুবতী কন্যা ছিলো। তাদের সংসারে কোনো পুরুষ মানুষ ছিলো না। মা-ঝিয়ের সংসার। তারা খুব গরিব ছিলো। তাদের দিন অতি কষ্টে চলতো। তাদের ঘর ছিলো ভগ্ন-প্রায়। ঘরের চালটি ছিলো শুষ্ক কলাপাতার ছানি। ঘরের বেড়া ছিলো ভাঙা দাড়ির। সুতরাং এ জীর্ণ কুটিরেই ছিলো তাদের বসবাস। তারা বনের ফল, ফুল, আলু ইত্যাদি খেয়ে জীবনধারণ ও জীবনযাপন করতো। এমন অসহায় গরিব পরিবারে এ নবাগত অতিথি-মিসি চিপিনপা-সালজং না’দাংপা ছিলেন সম্পূর্ণভাবে অপরিচিত ব্যক্তি। দেবতা যে এমন মানব বেশে তাদের বাড়িতে অতিথিরূপে এসেছেন, তা তারা জানতে পারেনি। আর জানার কথাও নয়। এখন এ নবাগত অপরিচিত অতিথিকে কী নিয়ে আদর আপ্যায়ন করবে। তাঁকে আদর-আপ্যায়ন করার মতো শক্তি-সামর্থ তাদের নেই। কিন্তু গরিব হলেও তাদের জীবন ছিলো পবিত্র ও নিষ্কলঙ্ক। মিসি চিপিনপা-সালজং না’দাংপা তা জানতেন। তিনি তাদের প্রতি করুণাবিষ্ট হলেন এবং আয়ে মেসালি তৎমারি কিংমারিকে বললেন-‘আজ আমি তোমাদের অতিথি হব, তোমাদের ঘরেই রাত্রি যাপন করবো।’ ঘরে যুবতী মেয়ে পুরুষবিহীন সংসার, জীর্ণকুটির, অপরিচিত অতিথি এ কীভাবে সম্ভব? এসব ভাবে আয়ে মেসালি তৎমারি কিংমারি। তারা মায়ে-ঝিয়ে পরামর্শ করে। কারণ, মনে আছে দ্বিধা-সংকোচ, লোক-লজ্জা ও লোক-নিন্দার ভয়। তাই আয়ে মেসলি সিংসালি তৎমারি কিংমারি বিনয়ের সঙ্গে মিসি চিপিংপা-সালজং না’দাংপাকে বললেন-‘আমরা গরিব মানুষ, আমরা আপনাকে কী খেতে দেবো? আমাদের বাড়ি-ঘর নেই। একটি মাত্র ঘর, তাও অর্ধভগ্ন। চালে শুষ্ক কলাপাতার ছানি, ভাঙা দাড়ির বেড়া, দেখতে খুবই বিশ্রী। আমরা আপনাকে কোথায় থাকতে দেবো? থাকতে আপনার খুব অসুবিধে হবে, কষ্ট হবে। তাছাড়া এখানে কোনো পুরুষ মানুষ নেই। পুরুষ মানুষ থাকলে আলাপ-সালাপ করে কোনো রকমে রাত কাটিয়ে দিতে পারতেন। তাই কোনো ধনী লোকের বাড়িতে গেলেই বোধ হয় আপনার সবদিক দিয়ে সুবিধে হতো।’ মিসি চিপিনপা-না’দাংপা তাদের মনের ভাব ও চিন্তা জেনে বললেন-‘আমি আজ তোমাদের এখানেই থাকবো, কষ্ট ও অসুবিধে হলেও তোমাদের সঙ্গে রাত্রিযাপন করবো। তোমরা আজ তোমাদের ও কী পান করাবে এ নিয়ে কোনো চিন্তা করো না। আমি জানি, তুমি বিধবা, গরিব ও তোমার মেয়ে দৎসি পিতৃহীনা ও যুবতী। তোমাদের বাড়িঘর তেমন ভালো নয় ঠিকই কিন্তু মানুষ হিসেবে তোমরা খুবই ভালো। আমার জন্যে কিছু ভাবতে হবে না। আমাকে তোমাদের ভয়ের কোনো কারণও নেই। আমি ঘুমাবো না, রাতে জেগেই থাকবো। শুধু আমার সামনে তোমার পাশের জঙ্গল থেকে গং জাদিল, রে۰চিম গাছের গোড়ার রস, আগরু, দং ক্রেং বলরাসিন, বলচা۰পাত, বলগিন্দে-এসব এনে পোড়া দিয়ে রাখো। এসবের আপ্যায়িত হয়ে আমি রাত কাটিয়ে দেবো।’

আমার আগমনের চিহ্ন দেখতে পাবে বাতাবী লেবুর ফুলে, আমের ফুলে, প্রকৃতির জীবন্ত সমারোহে। তখনো তোমরা আমার আশীর্বাদ পাবে। তোমরা যাবতীয় খাদ্য-শস্য ও ফল-মূল সব পাবে। মনের সুখে পানাহার করতে পারবে। আর যখন তোমরা ঐসব আশীর্বাদ পাবে, তখন এই যে ঋতুতে এই যে সময়ে আমি তোমাদের বাড়িতে আতিথ্য গ্রহণ করলাম, আপ্যায়িত হলামÑএমন সময়েই আমাকে ডাকবে, আতিথ্য দান করবে। এখন যেভাবে আমাকে ধূপ-নৈবেদো আপ্যায়িত করেছ তদ্রুপ তোমাদের ঘরের মালজুরীতে আমাকে ধূপ নিয়ে আপ্যায়িত করবে। তা করলে তোমাদের মঙ্গল হবে অভাব-অনটন থাকবে না। সুস্থ দেহ-মন নিয়ে থাকতে পারবে, আনন্দ-আহ্লাদ করতে পারবে।

আয়ে মেসালি সিংসালি তৎমারির বাড়িতে মিসি চিপিনপা-সালজং না’দাংপা আতিথ্য গ্রহণ, রাত্রিযাপন, আদর-আপ্যায়ন, আশীর্বাদ এবং প্রতি বছর তাঁর পুনঃআগমন ও আশীর্বাদের প্রতিশ্রুতি, তাঁর সম্মানার্থে ওয়ানগালার নিদের্শ দান-পাড়া-প্রতিবেশীরাও জানতে পারলো। তাদের অবস্থার পরিবর্তন দেখেও লোকদের বিশ্বাস হলো। তাই পরের বছর ফিরে এলে, সঠিক ঋতু উপস্থিত হলে গ্রামের লোক সবাই মিলে চিপিনপা-সালজং না’দাংপার নিদের্শ অনুসারে দিন তারিখ নির্ধারণ করে ঘরের মালজুরীতে Trumalo Changsimalo, Nokjangchio warimo, অর্থাৎ ঘরের মাঝখানে তাঁরই স্মরণার্থে-নতুন খাদ্যশষ্য ও ফলমূল দিয়ে ভক্ষ-নৈবেদ্য, নতুন অনুষ্ঠান করলো। কালক্রমে তা অন্যান্য অঞ্চলের গারোদের দ্বারা গৃহিত ও পালিত হলো। আর এভাবে দূর অতীত থেকে গারোদের বার্ষিক র্উৎসব ওয়ানগালা গৌরবময় মহিমামণ্ডিত ঐতিহ্যের ধ্বজা তুলে ধরে চলতে চলতে এখন বর্তমান অবস্থায় এসে পৌঁছালো।



লেখক পরিচিতি

গারো সম্প্রদায়ের জ্ঞানতাপস, পণ্ডিতজন রেভা. মণীন্দ্রনাথ মারাক জন্মগ্রহণ করেন ১৯৩৭ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি। বর্তমনে তিনি দুর্গাপুর থানাধীন নিজ বাড়ি বিরিশিরির পশ্চিম উৎরাইল গ্রামে বসবাস করছেন।  দুই ছেলে  এক মেয়ে। স্ত্রী প্রতিভা দারিংও একজন শিক্ষক ছিলেন। বর্তমানে অবসরে আছেন। রেভা. মণীন্দ্রনাথ মারাকের অনেক লেখা বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। উনার ‘বিরিশিরি মিশিন এবং ব্যাপ্টিস্ট মণ্ডলীর ইতিহাস’ একটি গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক গ্রন্থ।

পণ্ডিতব্যক্তি রেভা. মণীন্দ্রনাথ মারাক

লেখক মণীন্দ্রনাথ মারাক



ওয়ানগালার তাৎপর্য ও গুরুত্ব || রেভা. মণীন্দ্রনাথ মারাক

ওয়ানগালার ইতিহাস ।। রেভা. মণীন্দ্রনাথ মারাক

দওক্রো সুআ রওয়া বা ঘুঘু পাখির নাচ ।। তর্পণ ঘাগ্রা

বাসন্তী রেমার নতুন জীবনের সূচনা, তৈরি হচ্ছে দোকান ও পাঠাগার

শুভ বিজয়া দশমী ।। প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হল দুর্গাপূজা

নভেম্বরে নতুন গান ‘সালনি থেং’সুয়ে’ নিয়ে আসছে গারো ব্যান্ড দল-ব্লিডিং ফর সার্ভাইভাল

https://www.youtube.com/watch?v=OUjpZh56QXk




সম্পাদক : মিঠুন রাকসাম

উপদেষ্টা : মতেন্দ্র মানখিন, থিওফিল নকরেক

যোগাযোগ:  ১৯ মণিপুরিপাড়া, সংসদ এভিনিউ ফার্মগেট, ঢাকা-১২১৫। 01787161281, 01575090829

thokbirim281@gmail.com

 

থকবিরিমে প্রকাশিত কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। Copyright 2020 © Thokbirim.com.

Design by Raytahost