পেশা হিসাবে নার্স পেশাকে স্মার্ট বলা হয়। আর নার্স যদি আমাদের গারো কমিউনিটির মধ্যে কেউ হন তাহলে আপনার ভালোলাগার মুহূর্ত জেগে উঠবেই। পেশার বৈচিত্র্যময় জগতে আমাদের মান্দিরাও অলরেডি প্রবেশ করে ফেলেছেন। তিনজন প্রফেশনাল মান্দি নার্সদের সাথে কথা হয়েছে বন্ধুত্বপূর্ণভাবে যা আগে কখনো সম্ভব হয়নি। সাক্ষাতকারের পুরোটাই মান্দি কমিউনিটি চিন্তার গন্ডির সাথে সম্পর্কযুক্ত প্রশ্নগুলো সাজানো হয়েছে। আর এটি একটি সম্পূর্ণ ভার্চ্যুয়াল ইন্টারভিউ। তিনজন মান্দি প্রফেশনাল নার্সদের সাক্ষাৎকার তিনটি পর্বে প্রকাশ করা হবে।তিনজন মান্দি প্রফেশনাল নার্সদের সঙ্গে কথা বলেছেন তরুণ লেখক এবং ব্লগার তপন হাগিদক। আজকে সাইনী চেক্সী ম্র ‘র সাক্ষাৎকার প্রকাশ করা হলো। সাইনী চেক্সী ম্রং ( Shini Chaxi Mrong ) বর্তমানে সিনিয়র স্টাফ নার্স (সরকারি) হিসেবে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, পূর্বধলা, নেত্রকোনায় কর্মরত আছেন।
তপন হাগিদক : বউদি আমার ইকটু ইন্ট্রো দেই সেটা হল এই কনভারসেশন কোন অফিসিয়াল ক্যাটাগরির না। কারণ অফিসিয়াল কথোপকথনে অনেক মনের কথায় উঠে আসে না… আমি একজন অনলাইন ছোটখাটো ব্লগার আর আগে নিউজ লিখতাম….কদিন ফ্রি আছি… আমাদের মান্দিদের আমাদের কমিউনিটির মানুষদের মতামত বা চিন্তাগুলো ভিন্ন আঙ্গিকে তোলে ধরার প্রয়াসে এই সাক্ষাৎকার! তো শুরু করি…
চেক্সী ম্রং : নিশ্চয় কোনো প্রবলেম নাই। আমি তোমার লেখা চিন্তার সাথে পরিচিতি… ফেইসবুকে তো আছিই ( হাসি…)
তপন হাগিদক : প্রথমেই আপনার জায়গা থেকে নার্স হিসাবে অনুভূতির অভিজ্ঞতাগুলো শেয়ার করতে পারেন!
চেক্সী ম্রং : দীর্ঘদিন হয় কাজ করছি। নার্স মূলত মানুষকে সেবা দেওয়ার কাজ। সেবাদানের মধ্যদিয়ে আত্মসন্তুষ্টি আসে। আর সেবার মনোভাব না থাকলে এ পেশা আপনার জন্য না। সেবার মাধ্যমে রোগী সুস্থ হয়ে গেলে মনটা ভালো হয়ে যায়… এই আর কী!
তপন হাগিদক : আমি মূলত আরো মান্দি ২জন নার্সের সাথে কথা বলেছি তাই স্পেসিফিক জিজ্ঞাসা তোমাকে…
চেক্সী ম্রং : হ্যাঁ, যতোটুকু সম্ভব বলবো প্রবলেম নেই। যেহেতু এইটা ফ্রেন্ডলি কোশ্চেন-এ্যান্সার!
তপন হাগিদক : তুমি তো জব করছো উপজেলা কমপ্লেক্সে সরকারি নার্স হিসেবে সেখানকার ভালোমন্দের কথা, করোনাকালীন সময়ের অভিজ্ঞতা এবং বর্তমান পরিস্হিতি জানতে চাই…
চেক্সী ম্রং : অভিজ্ঞতা বলতে কী করোনাকালীন সময়ে প্রথমে কোন ইক্যুয়েপমেন্ট গ্লাবস, মাস্ক স্পেশাল এপ্রোন ছাড়াই ডিউটি করতে হয়েছে। নার্সদের জব ভয় পেলে ত চলবে না তাইনা? বেতন নিয়ে ঝামেলা হয়েছিল, একমাসের বেতন আরেকমাসে পেয়েছি। আবার আমার সম্পর্কে একটা গুজবও রটেছিল আমি নাকি করোনায় আক্রান্ত! এলাকাবাসী আমাকে আমার পরিবারকে লকডাউনে রাখতে চেয়েছিল কিন্তু মনোবল ভাঙেনি সবই ঠিকঠাক রেখেছিলাম। কিন্তু কাউকেই কোন অভিযোগ করিনি। সত্যটা আমিই জানি… একজন প্রফেশনাল নার্স ত আর জেনেশুনে কাউকে বিপদে ফেলতে পারে না এই আর কী!
তপন হাগিদক : আদিবাসী গারো হিসাবে কখনো কর্মক্ষেত্রে ছোটখাটো হেনস্হা শিকার হয়েছো?
চেক্সী ম্রং : আসলে কী এটা নতুন কিছু না। আমি যখন বাড়ির কারো সাথে মান্দি ভাষায় কথা বলি তখন হয়ত পাশের কেউ কিছু বললে কখনো বিরক্ত হই আর আমি আবার তা সঙ্গে সঙ্গেই উপযুক্ত কিছু জবাব দিই, নিজের ভাষা ত না? কেমন পরিস্থিতি হয় তুমিও জানো… আর পরিবেশ হচ্ছে নিজের কাছে। এগুলার সাথে লড়াই করে নিজের সুন্দর পরিবেশ ঠিক করে নিতে হয়। মানিয়ে নিজেকে সেবিকা হিসাবে আত্নপ্রকাশ করতে হয়। আর যা খারাপ তা দূরে রাখতে হয়।
তপন হাগিদক : নার্স মানেই ব্যস্ততা, সেবা জানি, আবার ছেলেদের নেগেটিভ পুরুষ চিন্তার পাশাপাশি… এই ধরেন অতীতে যখন এত মান্দিরা এই সেবার মত মহান পেশায় আসেনি যিনারা ছিলেন তাঁদের নাকি ডাক্তারদের সাথে রাত কাটায় টাইপের প্যাঁচে হেনস্তা শুনতে হত ইগুলা সম্পর্কে মতামত…
চেক্সী ম্রং : তখন মানে আমাদের থেকে সিনিয়রদের অনেক পুরুষতান্ত্রিক কথা সহ্য করতে হত এটা সত্য। এখন ত আর নাই তাইনা? নার্স মানেই এখন সন্মানের পেশা, সেবার পেশা। আগে এত সুযোগ সুবিধা ছিলো না কম ছিল। এখন নার্স মানেই সেকেন্ড ক্লাস মর্যাদা আগে থার্ড ক্লাস ছিল, এখন ত ডাক্তারের পরেই তাইনা? সরকার বুঝতে পেরেছে থার্ড ক্লাস থেকে সেকেন্ড ক্লাস করেছে সেবার মান মর্যাদা বাড়িয়ে দিয়েছেন।
আর এই পেশা ত ধৈর্যের পেশা সংযমের পেশা। মেয়েদের সব পেশার ক্ষেত্রে কিছুটা লড়াই করতে হয়। রুরিরাঙদে সে যেই হোক মান্দি মিচিক হলে ইকটু চান্স নিয়েই দেখতে চায়। সতর্ক থাকতে হয়! তবে আশপাশ ঠিক রেখে নিজে ঠিক থাকলে অভিযোগের কোন সুযোগ নেই। তবে অতীতের সব ভূল ধারনা সঠিক নয়। চুয়া দঙআ মানুষের প্রেম পিরিতি এগুলা মানুষের অভিরুচির ব্যাপার। তবে হ্যাঁ, ভূল পথে হাঁটা যাবে না।
তপন হাগিদক : তুমি ত সেবিকা এবং সংসারী একজন। নার্সরা এতো ব্যাস্ততার পরেও কীভাবে …সংসার সামলায়…(এক ফেইসবুক ফ্রেইন্ডের জিগ্যাসা)
চেক্সী ম্রং : দ্যাখো সব পেশার একটা সৌন্দর্য আছে। এই পেশার সুবিধার সাথে কিছু অসুবিধাও আছে। সেবার কাজে নাইট ডিউটিতে যেতে হয় আবার বাচ্চা থাকলে ব্রেস্ট ফিডিং এর মত একটা ব্যাপার আছে। তখন হয়ত কষ্ট! কিন্তু একজন সংসারী হিসাবে হাসবেন্ড যদি হেল্পফুল ম্যাচুউর হয় তাইলে কথাই নেই। আর স্ত্রী হিসাবে মানসিক শারিরীক ব্যাপারটা একজন নার্স অন্যদের চাইতে ভালোই জানেন। মানে স্ত্রী হিসাবে নার্সই সেরা! সংসারী হিসাবেও তাই। যাঁরা নার্সের প্রেমে ডুবছে.. নিশ্চিন্তে বিয়ে করে ফেলো…. (হাসি)
মানে সব পেশার মতোই তুখোড় সংসারী হতে ত কোন বাঁধা দেখি না! যা দেখছি ভালোই ত চলছে ঠিকঠাক। বরং অন্যান্য পেশার থেকেও নার্সরাই সংসারে হ্যাপি দেখি আমি!
তপন হাগিদক : মান্দিদের কোন নার্সিং সংগঠন আছে? থাকলে এই সম্পর্কে জানতে চাই আর না থাকলেও সেটা সম্পর্কে মতামত পরিকল্পনা প্রভৃতি বলতে পারো…
চেক্সী ম্রং : না মান্দিদের কোন নার্সিং এসোসিয়েশন নেই। তবে থাকা উচিত। কেন উচিত তুমি নিজেও জানো….. ব্যাপারটা হল কী এখনো বেশিরভাগ মান্দি নার্সরাই জুনিয়র বয়সের দিক থেকে। ওরা ফ্যাশন গেটআপ আর খাবার-দাবার নিয়েই পড়ে থাকে। আমার থেকে অনেক সিনিয়র, আমরা সবাই মিলে খুব শিগ্রই একটা মান্দি নার্সিং এসোসিয়েশন খোলার সিদ্ধান্ত আছে। যেখানে আমরা সবাই যেন বিপদে আপদে গেটটুগেদার করতে পারি।
তপন হাগিদক : এই পেশায় আসতে হলে একজন স্টুডেন্টের সবচাইতে কী গুণ থাকা দরকার?
চেক্সী ম্রং : নার্সিং পেশায় আসতে হলে সবচাইতে বড় প্রয়োজন সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার এবং সেবা করার মনোভাব। যাঁর সেবার মনোভাব নেই, কোর্স শেষ পড়া শেষ করে শুধু চাকুরি নিবে দরকার নেই এই পেশায় আসার। নার্স পেশা আপনার জন্য না! মানে সেবা দিলে ভালোবাসা পাওয়া যায় আর তাঁর ক্যারিয়ার মজবুত হয়। ভালো ইন্সটিটিউট দেখে ভর্তি হওয়া কাজ শেখা, যেহেতু এখনের নার্সিং সিলেবাস ইংলিশে সব যথেষ্ট ভালো স্টুডেন্ট হওয়া চাই।
তপন হাগিদক : আঙনাদে যতোটুকু দরকার ছিল সিঙআনি হঙজক… নাম্মি দংবো…
চেক্সী ম্রং : দে নাংকোবা মিত্তেলা।
আরো নিউজ
নার্স হতে হলে ডেডিকেটেড মনোভাব আর পরিশ্রমী হতে হবে ।। মৌরী চিসিম
ব্রাদার গিউম পেলেন নেদারল্যান্ড রাজার বিশেষ সম্মাননা ‘অ্যাওয়ার্ড অব দ্যা কিং’
খা সাংমা খা মারাক ব্রাদার গিউম ।। মতেন্দ্র মানখিন
https://www.facebook.com/thokbirim/videos/782974379102661
লেখক ও মানবাধিকারকর্মী সঞ্জীব দ্রং
ব্রাদার গিউমের বাংলাদেশে বসবাসের সময় ৪০ বছর পূর্ণ হলো এই বছর। দীর্ঘ চল্লিশ বছর ধরে ব্রাদার বাংলাদেশের মানুষজনদের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। সেই কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ এই প্রথম বাংলাদেশে অবস্থানরত নেদারল্যান্ডবাসী ব্রাদার গিউম নেদারল্যান্ড রাজার বিশেষ সম্মাননা পুরস্কার অ্যাওয়া্র্ড অব দ্যা কিং’ পেলেন। সেই সম্মাননা প্রাপ্তি নিয়ে কথা বলছেন বিশিষ্ট লেখক ও মানবাধিকারকর্মী সঞ্জীব দ্রং
Gepostet von Thokbirimnews.com am Freitag, 9. Oktober 2020
https://www.youtube.com/watch?v=ofoFOstHm3c&feature=emb_title
‘১ সেপ্টেম্বর শুক্রবার থকবিরিম-এর যুগপূর্তি উৎসব অনুষ্ঠান’
: এক এক করে বার বছরে পদার্পণ করলো গারো সাহিত্যের পত্রিকা ......বিস্তারিত
-
১ সেপ্টেম্বর শুক্রবার থকবিরিম-এর যুগপূর্তি উৎসব অনুষ্ঠান
: এক এক করে বার বছরে পদার্পণ করলো গারো সাহিত্যের পত্রিকা ...
-
রে রে : হায়রে আমার কাঞ্জিয়া ।। নীলু রুরাম
: সমর সাংমার রেরে নিয়েই শুরু করি তবে একটু আলাদা। আমাদের...
-
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের নিরাপদ ব্যবহার ।। জাডিল মৃ
: এক. সময় স্রোতের সাথে আবাহমান ছুটে চলা প্রযুক্তির উন্নতি, মানব...
-
বর্তমান সময়ের তুমুল জনপ্রিয় শিল্পী দিশন অন্তু রিছিলের জন্মদিন আজ
: বর্তমান সময়ের তুমুল জনপ্রিয় শিল্পী দিশন অন্তু রিছিলের জন্মদিন আজ।...
-
বীর মুক্তিযোদ্ধা দেবতোষ যেত্রা আর নেই
: হালুয়াঘাট উপজেলার ৪নং সদর ইউনিয়নের কালিয়ানীকান্দা গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা পাস্টার...
-
কেনিয়ার কৃষকরা হাতি তাড়াচ্ছে মৌমাছি দিয়ে
: কেনিয়ায় হাতির তাণ্ডব থেকে ফসল রক্ষায় ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছে কৃষকরা।...
‘১ সেপ্টেম্বর শুক্রবার থকবিরিম-এর যুগপূর্তি উৎসব অনুষ্ঠান’
: এক এক করে বার বছরে পদার্পণ করলো গারো সাহিত্যের পত্রিকা ......বিস্তারিত
‘১ সেপ্টেম্বর শুক্রবার থকবিরিম-এর যুগপূর্তি উৎসব অনুষ্ঠান’
: এক এক করে বার বছরে পদার্পণ করলো গারো সাহিত্যের পত্রিকা ......বিস্তারিত