Thokbirim | logo

২৬শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | ১১ই ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ

১৯৬৪ সালের রায়ত ।। শিকড় হারানো এক নির্মম ট্র্যাজিডি, কালো ইতিহাস ।।  সরোজ ম্রং

প্রকাশিত : সেপ্টেম্বর ২১, ২০২০, ১১:১৩

১৯৬৪ সালের রায়ত ।। শিকড় হারানো এক নির্মম ট্র্যাজিডি, কালো ইতিহাস ।।  সরোজ ম্রং

পূর্ব প্রকাশের পর…

এভাবে গারোদের  লাল তাজা রক্তে রঞ্জিত হয় পানিহাটা পেকামারীর সবুজ পাহাড়। আহতদের  অসহায় ক্রদন আর আহাজারিতে ৬ই ফেব্রুয়ারির পড়ন্ত বিকেল বেদনায় ভারী হয়ে উঠে। আহত ও মুমূর্ষুদের বেয়নেট খুঁচিয়ে হত্যা করা হয়। এই হত্যাকাণ্ডে ঠিক কতজন নিহত হয়েছিলেন তার সঠিক তথ্য নেই। কেউ বলছেন ১৮ জন কেউ বলছেন ১৯ জন কেউ বলছেন কম হলেও ২৫ জন। দেবীপুর গ্রামের করুন দিও জানিয়েছেন এক সপ্তাহর পর দুর্ভেদ্য পাহাড় থেকে দুজনের গলিত লাশ পাওয়া গিয়েছিল তাদের নাম ও ঠিকানা জানা যায়নি। হেমার্সন হাদিমা তার পুস্তিকায় ১৬ জনের নাম লিপিবদ্ধ করেছেন। প্রত্যক্ষদর্শী করুন দিও  নিহত তিনজনের তথ্য দিয়েছেন আর এই তিনজন হচ্ছে পলার মা ও অন্যদুজন উল্লেখিত দুজনের লাশ তাহলে সংখ্যা দাঁড়াচ্ছে ২১ জন। নিহতরা হলেন-

১. অনুপমা দিও

২.দিপ্তী দিও(বয়স ২বছর)

৩. সুধামনির রাকসাম

৪. স্বর্ণমনি রাকসাম

৫. শয়নি রাকসাম

৬. মসলা দিও

৭. থসানের স্ত্রী নামরীয়া

৮. উষাবালা রাসভর

৯. শনমনি নেংওয়া

১০. ফনিভুষন রাকসাম

১১. সুগেন্দ্র রাকসাম

১২. দধিরাম নাফাত

১৩.  মাফাল চিসিম

১৪. সুধীর চাম্বুগং

১৫. জ্ঞানেন্দ্র দিও

১৬. বিশ্বনাথ বাসভর

১৭. অখেন্দ্র রাকসাম

১৮. ভক্তি রাকসাম

১৯. শিশু পালা রিচিলের মা

২০. অজ্ঞাত

এইসব লাশ ট্রাকে এনে ময়মনসিংহের সম্ভেুাগঞ্জে পুরনো ব্রম্মপুত্র ফেরিঘাটের পঞ্চাশ গজ দক্ষিণে বালুচড়ে গণকবর দেখা হয়েছিল বলে জানিয়েছেন হেমার্সন হাদিমা ও প্রত্যক্ষদর্শী প্রবীন ব্যক্তি। সাবেক বৃহত্তর ময়মনসিংহের উত্তরাঞ্চল আদিবাসীদের জন্য ব্রিটিশ ভারত সরকার কর্তৃক সংরক্ষতি (১৯৩৫ ভারত শাসন আইন) এই  আংশিক শাসন বহির্ভূত এলাকায় এই যে ৬ই ফেব্রুয়ারি আদিবাসী হত্যাকাণ্ড সরকার সৃষ্ট একপেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা  ছিল আদিবাসীদের  অস্তিত্ব ও মেরুদণ্ড ভেঙে গুড়িয়ে দিয়ে সংখ্যালঘু করণের ঘৃণ্য  নির্লজ্জ এক নীলনকশা। এই নীলনকশার শিকারে পরিণত হয়েছিল আদিবাসীরা।

আদিবাসীদের  হাজার বছরের ইতিহাসে এ ছিল শেকড় হারানো এক নির্মম ট্র্যাজিডি,  এক কালো অধ্যায়, এক কালো ইতিহাস। এই ইতিহাস ভোলা যায় কি? ভুলতে দেয়া যায় কি? এই ৬ই ফেব্রুয়ারি  আদিবাসী হত্যা ও সংখ্যালঘুকরণের দিবস হিসেবে পালন করা যায় কিনা? ছাত্র যুবক শিক্ষক সাংবাদিক আদিবাসী সুশীল সমাজ ও বিদগ্ধ পাঠকদের  কাছে প্রশ্ন থাকলো।

।।সমাপ্ত

লেখক পরিচিতি : সরোজ ম্রং গারো সম্প্রদায়ের লেখক ও চিন্তক। 

আরো লেখা…

ময়মনসিংহ ধর্মপ্রদেশের জন্মকথা ।। ফাদার শিমন হাচ্চা

১৯৬৪ সালের রায়ত ।। গুলিতে মা-মেয়ের পিঠ ঝাঁজরা হয়ে যায় ।।  সরোজ ম্রং

একান্ত আলাপে বাসন্তী রেমা- ‘আমি জীবনেও এই জমিতে গাছ লাগাতে দিবো না’

https://www.facebook.com/thokbirim/videos/1163701897348748

সামাজিক বনায়নের নামে আদিবাসীদের নিজ বাসভূমি থেকে উচ্ছেদ ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে দ্বিতীয় দিনের বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ।

Gepostet von Thokbirimnews.com am Mittwoch, 16. September 2020




সম্পাদক : মিঠুন রাকসাম

উপদেষ্টা : মতেন্দ্র মানখিন, থিওফিল নকরেক

যোগাযোগ:  ১৯ মণিপুরিপাড়া, সংসদ এভিনিউ ফার্মগেট, ঢাকা-১২১৫। 01787161281, 01575090829

thokbirim281@gmail.com

 

থকবিরিমে প্রকাশিত কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। Copyright 2020 © Thokbirim.com.

Design by Raytahost