আমি উদ্বাস্তু হতে চাই না ।। থিওফিল নকরেক
(মধুপুরের আদিবাসীদের ভূমি অধিকার রক্ষার্থে)
ওরা বলে আমি সাত হাজার বছর ধরে আছি
বন, পাহাড়, নদী ও ঝর্না
সবকিছুই আমি হাজার বছর ধরে অভ্যস্ত
মাটিকে আমি ‘মা’ হিসেবে ডাকি
মা’ও আমার ডাকে সাড়া দিয়েছে
সে হাজার বছর ঠাঁই দিয়েছে আমায়।
সাতচল্লিশে দেশ ভাগ হয় কেন?
আমি জানতে পারি নাই
দেশ ভাগ আবার কী?
কেন এভাবে ভাগ হলো জানা নাই?
আমি জানি আবিমা বনে আছি
এটাই আমার ঠিকানা
আজীবন লালিত হয়ে বেঁচে থাকবো
আমার মায়ের কোল সেটা জানা।
আমাকে বাস্তুচ্যূত করে ১৯৬১ তে
কাকরাইদ কৃষি খামারের নামে
তখনো আমি কিছু বলতে পারিনি
আমি ছিলাম মূর্খ ও নিরক্ষর
উচ্ছেদ করেছে আমায় নামে বেনামে।
আমার জুম কেড়ে নেয় রসুলপুর-কমলাপুরে
আমাকে ফেলে টেলকি, জলই ও রাজবাড়ির আস্তাকুড়ে
কোনো কিছুই পাইনি ক্ষতিপূরণ হিসেবে
তখনো কিছুই বলতে পারিনি প্রতিবাদে।
জাতীয় উদ্যান ঘোষণা করে পাকি সরকার
সবকিছু কেড়ে নেয় আমার ডাকাতের মতো
আদিবাসীদের আবাস ভূমি তাদের দরকার
আবাসভূমি ধ্বংস করা হয় সরকারি ফরমানে
তখনো আমি কিছু বলতে পারিনি ভয়ে
আমি তখন মরে যাই যন্ত্রণা ও অপমানে।
স্বৈরাচারী সরকার অধ্যাদেশে জমি কাড়ে
রেকর্ডিয় ভিটেভূমি রাতের অন্ধকারে দখল করে,
বনভূমি নামে বেদখল করে বহু একর ভূমি
গাছ কেটে বিরান করে আমাদের পল্লি জননী,
বন্দুকের নল তাক করে জঙ্গলবাহিনীর দল আমারই দিকে
তর্জন-গর্জন করে হত্যার হুমকি দিয়ে আমায় করে ফিঁকে।
দু হাজার দু’য়ে ইকো-পার্ক ও জীববৈচিত্র্য নামে
ভয়ার্ত উচ্ছেদ শুরু হয় আমাদেরই গ্রামে
দেশের হাজার মানবাধিকারকর্মী ভিড়ে আমার কাতারে
সংবাদপত্র ও মিডিয়া দৌড়ে আসে রক্ষা করতে আমারে
সেবারকার মতো পিছিয়ে যায় সরকার বাহাদুর
হুমকি দিয়ে বলে ‘দেখবো তোমরা বাঁচবে কতদূর’।
আমাকে আবার জঙ্গলবাহিনীর দল চোখ রাঙায়
উচ্ছেদ করতে চায় বিশ্ব সন্ত্রাসী উল্লুকের সহায়তায়
জবর দখল করবে আগ্রাসীরা ঐতিহ্যবাহী ভূমি
এবারও কিন্ত একা নই আছে সহস্র আন্দোলন ধ্বনি
শতসহস্র আদিবাসী ছাত্র-যুব জনতা মাঠে নেমেছে
এবার রুখবেই এই অপশাসন আম জনতা যে জেগেছে।
স্বৈরাচারি দোসর জেনে রাখো মাথায়
যতই মাথাচারা দিয়েছো জংলী কায়দায়
আমরাও লড়বো, ঝাঁপিয়ে পড়বো একসাথে
রক্তের দাগ এখনো লেগে আছে ‘আবিমার’ হাতে
রক্ত দিব, বীর সেনানী পীরেন স্নাল ও চলেশ রিছিলের মতো
হায়েনাকে বীর দর্পে রুখবে দেশপ্রেমী সাহসী যতো।
আমি উদ্বাস্ত হতে চাই না আমার দেশে
মর্যাদার সাথে বেঁচে থাকতে চাই বীর বেশে
এ মাটি আমার …
এ দেশ সবার …
এ বন আবিমার …
কবি পরিচিতি : থিওফিল নকরেক কবি ও লেখক। ‘আমি উদ্বাস্তু হতে চাই না ’ কবিতাটি ‘আমি উদ্বাস্তু হতে চাই না ’ নামে ২০২০ সালে থকবিরিম প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত কবিতার বই থেকে নেয়া হয়েছে।
আরো লেখা…
বনবিভাগ ইচ্ছাকৃতভাবে আদিবাসীদের জায়গা চিহ্নিত করে কাজ করছে।। অজয় এ. মৃ
https://www.facebook.com/100101444697668/videos/2753730364907910
দোখলা রেঞ্জ অফিসারকে প্রত্যাহার, ক্ষতিসাধনকারীদের শাস্তিসহ ক্ষতিগ্রস্থ বাসন্তী রেমা'কে যথাযথ ক্ষতিপূরণের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও ঘেরাও কমসূচি পালন করছে.. বিক্ষুব্ধ আদিবাসী ও বাঙালি জনতা.. ..স্থান-দোখলা রেঞ্জ অফিস।
Gepostet von Thokbirimnews.com am Dienstag, 15. September 2020
‘সাংসারেক ওয়ান্না, গোড়ামী আর উপসাংসারেক-এর গল্প’
: আমার ধারণা-মিদ্দি রাবুগা, সালজং আমার উপর অধিক খুশি হয়ে বর......বিস্তারিত
-
সাংসারেক ওয়ান্না, গোড়ামী আর উপসাংসারেক-এর গল্প
: আমার ধারণা-মিদ্দি রাবুগা, সালজং আমার উপর অধিক খুশি হয়ে বর...
-
কালাচাঁদপুরে চলছে মাসব্যাপী গারো বইমেলা
: কালাচাঁদপুরের শিশু মালঞ্চস্কুল প্রাঙ্গণে চলছে গারো বইমেলা। বইমেলা শুরু হয়েছে...
-
প্রকাশিত হলো লিয়াং রিছিল-এর Bi·sarangni Goserong
: প্রকাশিত হলো আ·চিক ছড়াকার লিয়াং রিছিল-এর প্রথম অনবদ্য সাহিত্য-কর্ম ‘Bi·sarangni...
-
আমরা আটকে গেছি ।। মৃগেন হাগিদক
: প্রগতিশীল নেতাদের অভিমত, আমরা (আচিক, মান্দি বা গারো) আটকে আছি,...
-
গারো জাতি সত্তার কবি মতেন্দ্র মানখিনকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা
: আজ কবি মতেন্দ্র মানখিনের জন্মদিন। জন্মদিনে থকবিরিম পরিবারের পক্ষ থেকে...
-
Noksil ।। Labison Sku
: Noksil Mosla nonga bringni do.bipani japingko cha.ai Da.au mangmang...
‘সাংসারেক ওয়ান্না, গোড়ামী আর উপসাংসারেক-এর গল্প’
: আমার ধারণা-মিদ্দি রাবুগা, সালজং আমার উপর অধিক খুশি হয়ে বর......বিস্তারিত
‘সাংসারেক ওয়ান্না, গোড়ামী আর উপসাংসারেক-এর গল্প’
: আমার ধারণা-মিদ্দি রাবুগা, সালজং আমার উপর অধিক খুশি হয়ে বর......বিস্তারিত