বান্দুরা লিটিল ফ্লাওয়ার মাইনর সেমিনারিতে গল্প বই পড়া সম্পূর্ণ নিষেধ। যদি ধরা পরে সোজাসুজি সেমিনারি থেকে আউট! কথায় আছে, যেখানে বিধি নিষেধ কড়াকড়িভাবে আরোপিত সেখানে দুষ্ট বুদ্ধিও বেশি খেলে। প্রকাশ্যে তো পড়াই যাবে না! যদি কেউ দেখে গা হলে রাতেই কলিং। সিদ্ধান্ত “বাড়িতে যাও” এমন আদেশ হতে পারে। এমন কড়াকড়িতেও এখানে অনেকে উপন্যাস পড়েছে, আমিও তাদের দলে সামিল। এছাড়াও যারা খাদ্য মন্ত্রীর সাথে ভাব তারা স্পেশাল খানা ভাগে পেয়েছে, শিয়ালের মাংস রাত তিনটার সময় প্রসেস করে মজা করে খেয়েছে, বাড়তি জিনিস যেমন বান্দুরার রসগোল্লা, মিষ্টি খেয়েছে। পরিচালক বা রেক্টর জানেন না। রাত দশটার পর ঘুম। সবাই দল মিলে টয়লেটে লং/সর্ট কল সারে। আমরা যারা বই পড়ি তারা শেষে হারিকেন নিয়ে লং কলে বসি। তারপর বই পড়ি অতি সাবধানে। বই সরবরাহ করত বাইরের সহপাঠীরা।
করাচিতে এমন কোনো বিধি নিষেধ নেই। কর্তৃপক্ষ বলতো, ‘You are adult. In us your decision which is right and wrong. Agnel and Joe Cutts (Panjabi), student of English Medium তাদের নিকট থেকে ডিটেকটিভ/নভেল বই নিয়ে পড়তাম।
একদিন জো কোটস বলল, George, if you want to read other books you cam borrow from Sadar. Just deposit tk.5.00 and read it. Return and you can get week! another one for a এভাবেই জেমড বন্ডের বইগুলো From Russia with love, Goldfish etc. Love Fire এ নভেলটি এগনেলের কাছ থেকে নিয়ে পড়েছিলাম। পুরোপুরি রগড় বই। ক্যাটিগরিতে আজকাল ট্রিপিল এক্স! প্রতিটি চেপ্টারে গভীর লীলায়নের বর্ণনা। এমন চাইনিজ রগড়ের বই কিনেছিলাম গুলিস্তান সিনেমা হলের পশ্চিমে দোকান থেকে। এখানে পেঙ্গুইন প্রকাশনার পুরাতন বই সুলভ মূল্যে পাওয়া যেত। এছাড়াও অন্যান্য ইংলিশ গল্পের বই পাওয়া যেত। এটাই হল ছাত্র জীবনের অতি সংগোপনে সাধিত কর্মকাণ্ড।
লেখালেখি করতে গেলে বিভিন্ন বইপত্র পড়তে হয়, ঘাটতে হয়। রমনার আর্চবিশপ হাউজে কলেজ জীবনে প্রচুর আমেরিকান এনসাইক্লোপেডিয়া পড়তাম, ঘাটাঘাটি করতাম। বেশি আকৃষ্ট হয়েছি গ্রিক মিথোলজি গল্পে। এছাড়াও অন্যান্য বই পড়তাম। আর্চবিশপ হাউজের লাইব্রেরিতে বাংলা ভাষার উপর বিভিন্ন সাহিত্য পুস্তকাদি ছিল, কিন্তু কোন গ্রন্থ তালিকা ছিল না। বইগুলো অবহেলায় পড়ে থাকত। এ পুস্তকগুলো সদ্ব্যবহার করেছেন। এখানে পালি ভাষার দুই তিনটি পুস্তক ছিল। আরো ছিল, রবিরশ্মি, বাংলা উপন্যাসের পর্যালোচনা পুস্তক।
হেলেনদি যখন মাস্টার ডিগ্রি নিয়ে পড়ছিলেন তখন জ্ঞানের আহরণ সদভাবে ও চুরি করে পড়েছি শত শত বিধি নিষেধ আরোপ করা সত্ত্বেও। সে সময় সুযোগ ছাড়িনি, পড়েছি যা পেয়েছি শত ঝুঁকির মধ্যেও। তবুও এখনো জানার অনেক বাকি। জীবন ডায়াহ্নে যতটুকু পেয়েছি সারা জীবন বই, সাময়িকী, সিনেমার বই, ঈদ সংখ্যা, পূজা সংখ্যা সংগ্রহ করেছি।
আমর চাকরি জীবনে এটাই আমার নেশা ছিল। ময়মনসিংহে সংকলন থেকে প্রায় বই কিনেছি বিভিন্ন বিষয়ে। আমার ঘরে যেখানে সেখানে বিভিন্ন ধরনের মাসিক/ বিশেষ সংখ্যা/ সাময়িকী জমা হয়ে রয়েছে। কয়টা পড়ব! পূজা সংখ্যায় সানন্দা, আনন্দলোকই বেশি। ঢাকায় অফিসে যেরুম ডি’কস্তার জন্যে বিভিন্ন পিরিওডিকাল ম্যাগাজিন মাসিক দিত এক ভদ্রলোক। আমি তার কাস্টমার হয়ে গেলাম। প্রতি মাসে তাকে পাঁচশত টাকা দিতাম। এভাবেই ময়মনসিংহ স্টেশন রোডের হকার খলিলের কাছ থেকে অনেক সাময়িকী কিনেছি, অনেকগুলো আবার আনকমনও ছিল।
জ্ঞান আহরণ করেছি যখন আমি তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ি। স্টিফেন রিছিল, আড়ু রিছিলের মাতুল, রাণীখং অনেক বই সংগ্রহ করতেন। তখনই পড়েছি ” এক বৃত্তে দুটি ফুল” দস্যু বাহরাম, দস্যু তারিক, দস্যু মোহন, কালো ভ্রমর ইত্যাদি। কামিনী ঘাগ্রা দিদির কাছ থেকেও আমি ও ইগুদা (ইগ্নেসিয়াস দাওয়া) বই নিয়ে পড়তাম। অধিকাংশই উপন্যাস বই। আর পারব না বই কিনতে। মাসিক বাজেট শূন্য। সুতরাং, যেখানে সুযোগ পেয়েছি সদ্ব্যবহার করেছি। গল্প, উপন্যাস, সাময়িকী, ইংলিশ নভেল পড়েছি। তবুও এখনো আমার জানার অনেক বাকি রয়ে গেছে হয়তো।
৯:৪০, বুধবার, ০৮/০৯/২০২০
লেখক পরিচিতি : জর্জ নীলু রুরাম কবি ও গল্পকার।
আরো লেখা…
গারো জাতির সন্তান জন্ম ও নামকরণ, একটি সংস্কৃতির ধারা ।। বেনেডিক্ট এম. সাংমা
‘সাংসারেক ওয়ান্না, গোড়ামী আর উপসাংসারেক-এর গল্প’
: আমার ধারণা-মিদ্দি রাবুগা, সালজং আমার উপর অধিক খুশি হয়ে বর......বিস্তারিত
-
সাংসারেক ওয়ান্না, গোড়ামী আর উপসাংসারেক-এর গল্প
: আমার ধারণা-মিদ্দি রাবুগা, সালজং আমার উপর অধিক খুশি হয়ে বর...
-
কালাচাঁদপুরে চলছে মাসব্যাপী গারো বইমেলা
: কালাচাঁদপুরের শিশু মালঞ্চস্কুল প্রাঙ্গণে চলছে গারো বইমেলা। বইমেলা শুরু হয়েছে...
-
প্রকাশিত হলো লিয়াং রিছিল-এর Bi·sarangni Goserong
: প্রকাশিত হলো আ·চিক ছড়াকার লিয়াং রিছিল-এর প্রথম অনবদ্য সাহিত্য-কর্ম ‘Bi·sarangni...
-
আমরা আটকে গেছি ।। মৃগেন হাগিদক
: প্রগতিশীল নেতাদের অভিমত, আমরা (আচিক, মান্দি বা গারো) আটকে আছি,...
-
গারো জাতি সত্তার কবি মতেন্দ্র মানখিনকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা
: আজ কবি মতেন্দ্র মানখিনের জন্মদিন। জন্মদিনে থকবিরিম পরিবারের পক্ষ থেকে...
-
Noksil ।। Labison Sku
: Noksil Mosla nonga bringni do.bipani japingko cha.ai Da.au mangmang...
‘সাংসারেক ওয়ান্না, গোড়ামী আর উপসাংসারেক-এর গল্প’
: আমার ধারণা-মিদ্দি রাবুগা, সালজং আমার উপর অধিক খুশি হয়ে বর......বিস্তারিত
‘সাংসারেক ওয়ান্না, গোড়ামী আর উপসাংসারেক-এর গল্প’
: আমার ধারণা-মিদ্দি রাবুগা, সালজং আমার উপর অধিক খুশি হয়ে বর......বিস্তারিত