প্রাচীনকাল থেকেই আচিক (গারো) জাতির সন্তান জন্ম ও নামকরণের সময়, অদৃশ্য শক্তির আরাধনা করা হয়। যা এই জাতির সামাজিক চরিত্র ও বৈশিষ্ট্য। আচিক (গারো) জাতি বহু গোষ্ঠীতে বিভক্ত। কিন্তু মূলে তাহারা সবাই আচিক (গারো) জাতির অন্তর্ভুক্ত। বিভিন্ন গোষ্ঠীর আচার আচরণ ভিন্নভিন্ন হলেও আদিকাল থেকেই সমাজের প্রচলিত ধারাকে বহন করে চলেছে।
বিশেষ করে তিনটি গোষ্ঠীর রীতি – রেয়াজ সম্বন্ধে তুলে ধরছি। গোষ্ঠীগুলি যথাক্রমে (১) আকাওয়ে (২)আমবেং (৩) মাটচি।
যদি কোন মহিলার সন্তান প্রসবের সময়কাল নির্ধারিত তথা সন্নিকট হয়ে থাকলে, তৎক্ষণাৎ জরুরি অবস্থায় সকলে কাজ করে থাকে। কমপক্ষে ১সপ্তাহ পূর্বে পৃথক অস্থায়ী ছোট ঘর তৈরি করে অসুস্থ মহিলাকে সেখানে রেখে দেবে। সম্তান প্রসব এবং নামকরণের সময় অবধি এই ছোট ঘরে থাকার নিয়ম। আর মহিলার স্বামী দেবতাকে সন্তুষ্ট করতে বলিদানের প্রতিশ্রুতি দিয়ে থাকে, যাহাতে সন্তান সুষ্ঠভাবে জন্মলাত করে।
দেবতাকে মানত করবে নিজের ক্ষমতানুযায়ী। যেমন ১টি নিখুঁত কালো রং এর পাঠা, কালো রংয়ের এর নিখুঁত ষাঁড় গরু ও লাল রংয়ের নিখুঁত মোরগ। উল্লিখিত সামগ্রীর মধ্যে ষাঁড় গারু বাদে পাঠা ও মোরগ অবশ্যই দরকার। সন্তান প্রসবকালে একজন মহিলা ধাত্রী সঙ্গে থাকবে। যাকে গারো বা আচিক ভাষায় ‘মেচিক কামাল’ বলে আখ্যা দেওয়া হয়। অর্থাৎ মহিলা পুরোহিত।
সন্তান যদি সুষ্ঠভাবে জন্মলাভ করে, তৎক্ষণাৎ মানত করা সামগ্রী দেবতাকে উৎসর্গ করতে হয়। আর যদি প্রসবের সময়কাল ব্যতিক্রম হয়ে থাকে, ঐ মানত করা সামগ্রীটি কামাল (পুরোহিত) মারফৎ ঘরের বাইরে বলি চড়াইতে হবে। প্রাচীনকালে এই জাতিগণের বিশ্বাস, কোন মন্দ আত্মা ডাইনি মহিলাকে হস্তক্ষেপ করেছে।
কামাল (পুরোহিত) মন্ত্রের মাধ্যমে ঐ ডাইনি বা অপদেবতাকে তাড়িয়ে দেবার প্রচেষ্টা চালাবে। প্রথমবারে মন্দ আত্মা বা ডাইনিটি চলে না গেলে বার বার মন্ত্র বলতে থাকবে। আর ঐ মহিলা ধাত্রী ঘরের মেঝেতে অসুস্থ মহিলার শরীরের উপরে আতপ চাল ছিটিয়ে দেবে। অতঃপর কামাল (পুরোহিত) মন্ত্রগুলি গানের সুরে আবৃত্তি করতে করতে জিজ্ঞাসা করবে কে তুমি ? এই অপদেবতার নাম যথাক্রমে “বাংনি ও গিলজারী “। কামাল (পুরোহিত) বাংনি ও গিলজারীকে উদ্দেশ্য করে আদেশ করবে তোমরা অতি সত্বর এখান থেকে চলে যাও। এই ডাইনিদের আচিক (গারো) ভাষায় “স্খাকাল” বলে। অর্থাৎ ডাইনি বা রাক্ষসী জাতীয়।
চলবে…
।। কভার ছবি ধীরেশ চিরান
নোট : গারো সম্প্রদায়ের কবি ও লেখক বেনেডিক্ট এম সাংমা ২৬শে মে ২০২০ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন। তাঁর অসংখ্য লেখা উত্তর-পূর্ব ভারতের বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। ‘ গারো জাতির সন্তান জন্ম ও নামকরণ, একটি সংস্কৃতির ধারা’ লেখাটি থকবিরিমের বিশেষ প্রতিনিধি তরুণ লেখক জাডিল মৃ বেনেডিক্ট এম. সাংমার ছেলের মাধ্যমে সংগ্রহ করেছেন। থকবিরিম পাঠকদের জন্য লেখাটি প্রকাশ করা হলো -বি.স
গারো জাতির আদিতত্ত্ব কথা ।। শেষ পর্ব।। বেনেডিক্ট এম. সাংমা
গারো জাতির আদিতত্ত্ব কথা ।। বেনেডিক্ট এম. সাংমা
https://www.facebook.com/IndependentTVNews/videos/1211504035676807
আদিবাসী সাহিত্য নিয়ে বইমেলায় 'থকবিরিম'
একুশে বইমেলায় আদিবাসীদের সাহিত্য চর্চা নিয়ে হাজির হয়েছে #থকবিরিম প্রকাশনী। দেশসেরা প্রকাশনীগুলোর পাশাপাশি সমানতালে এগিয়ে এটি। এক নজরে দেখে নিন……….
Gepostet von independent24.tv am Freitag, 22. Februar 2019
‘১ সেপ্টেম্বর শুক্রবার থকবিরিম-এর যুগপূর্তি উৎসব অনুষ্ঠান’
: এক এক করে বার বছরে পদার্পণ করলো গারো সাহিত্যের পত্রিকা ......বিস্তারিত
-
রাত পোহালেই উদযাপিত হতে যাচ্ছে গারো জনগোষ্ঠীর উৎসব ওয়ানগালা
: রাত পোহালেই উদযাপিত হতে যাচ্ছে গারো জনগোষ্ঠীর সামাজিক সাংস্কৃতিক ও...
-
আজ লেখক ও চিন্তক আলবার্ট মানকিন-এর স্মরণসভা ও স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠান
: মধুপুর গড়াঞ্চলের আদিবাসী নেতা, চিন্তাবিদ, লেখক, সমাজকর্মী, এনজিও কর্মী আলবাট...
-
গুলশান বনানী ওয়ানগালা ২১ অক্টোবর শনিবার
: গুলশান বনানী ওয়ানগালা ২১ অক্টোবর শনিবার আদি সাংসারেক গারো জাতিগোষ্ঠীর...
-
১ সেপ্টেম্বর শুক্রবার থকবিরিম-এর যুগপূর্তি উৎসব অনুষ্ঠান
: এক এক করে বার বছরে পদার্পণ করলো গারো সাহিত্যের পত্রিকা ...
-
রে রে : হায়রে আমার কাঞ্জিয়া ।। নীলু রুরাম
: সমর সাংমার রেরে নিয়েই শুরু করি তবে একটু আলাদা। আমাদের...
-
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের নিরাপদ ব্যবহার ।। জাডিল মৃ
: এক. সময় স্রোতের সাথে আবাহমান ছুটে চলা প্রযুক্তির উন্নতি, মানব...
‘রাত পোহালেই উদযাপিত হতে যাচ্ছে গারো জনগোষ্ঠীর উৎসব ওয়ানগালা’
: রাত পোহালেই উদযাপিত হতে যাচ্ছে গারো জনগোষ্ঠীর সামাজিক সাংস্কৃতিক ও......বিস্তারিত
‘১ সেপ্টেম্বর শুক্রবার থকবিরিম-এর যুগপূর্তি উৎসব অনুষ্ঠান’
: এক এক করে বার বছরে পদার্পণ করলো গারো সাহিত্যের পত্রিকা ......বিস্তারিত