পূর্ব প্রকাশের পর…
২. দেলাং খা.আ
গারোরা অতীতে মৃত ব্যক্তির দেহ আগুনে পুড়ত। জাঁক জমক সহকারে মৃত ব্যক্তির উদ্দেশ্যে নানা প্রকার সামাজিক ও ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান তারা পালম করতো। গারো ছেলে মেয়েরাও তাদের খেলার মধ্যমে এই সমস্ত আচার অনুষ্ঠান অনুকরণ করতো। তারা কোন জ্যান্ত ইঁদুর ফড়িং অথবা অন্য কোনো প্রাণি ধরে তা বধ করে তার উদ্দেশ্য গ্রাপ স.লা বা সুর করে কাঁদত। পালাক্রমে সবাই এসে কান্নাকাটি করতো। তার পর এক সময় সেই প্রাণির দেহ আগুনে পুড়ে সেই স্থানের উপর সুন্দর করে মৃত ব্যক্তির আত্মার জন্য ঘর তৈরি করতো। সেই ঘরের উপর অনেকগুলো নানা রঙের কাপড়ের টুকরো নিশানের মত করে বেঁধে দিত। এটাকেই গারো ছেলে-মেয়েরা মৃত মানুষের ঘর বা দেলাং খা.আ বলে।
২.নাখ্রেক ফাল্লা
নাখ্রেক অর্থ শুকনো মাছের ফারা আর ফাল্লা মানে বিক্রি করা। গারো যুবক যুবতীরা মাঠে বা বড় উছানে চাঁদনী রাতে সবাই মিলে এই খেলা খেলে থাকে। যে কোন একজন এক ছেলেকে উল্টো করে পিঠি নিয়ে অনেক গুলো লোকের সামনে নিয়ে জিজ্ঞেস করবে নাখ্রেক রাগেনমা নাখ্রেক? অর্থাৎ শুকনো মাছের ফারা কিনবা নাকি শুকনো মাছের ফারা? তখন ঐ ছেলেদের মধ্য থেকে একজন ফিঙে পাখি হয়ে বলবে ‘ফেৎচুই চুই মাখ্রি গিদল দল’ মাখ্রি মানে বানর অর্থাৎ ঐ পাখি সবাইকে সর্তক করে দিচ্ছে এটা মাছ নয়। এটা বানরের শুকনো মাংস। বানরের মাংস শুনে তা আর কেউ নিতে চাইবেনা তখন বিক্রয়কারীরা বিরক্ত হয়ে ঐ ফিঙে লোকটিকে ধরতে চেষ্টা করবে।
৩. রাজামা খাল্লা
এই খেলা সাধারণত দুই দলে হয়। গারোরা এই খেলা আশ্বিন কার্তিক মাসে এবং ফাল্গুন চৈত্র মাসের মেঘমুক্ত রজনীতে খেলা করে থাকে। এই খেলার জন্য প্রথমে একজন রাজামা বা প্রধান নির্বাচন করা হয়। এর পর প্রত্যেক দলে ৪/৫জন করে লোক সংখ্যা ৮/১০ লোক মনোনীত করা হয়। দুইদলের মধ্যে যে কোন দল প্রথম খেলা আরম্ভ করতে পারে। রাজামা বা প্রধান ব্যক্তি নিকিণষ্ট জায়গায় বসে থাকে। আরম্ভকারী দলের খেলোয়াড়রা ঘরের আনাচে কানাচে ঝোপে ঝড়ে গাছের আড়ালে, মাচং ঘরের নিচে সুবিধামত জায়গায় লুকায়, লুকানো হয়ে গেলে রাজামা জোরে ককরেক করে বলে একটা সংকেত দিবে। সেই সংকেত পেলে অন্যদল তাদের খূঁজে বের করতে চেষ্টা করবে। গোপনকারীদের খুঁজে বের করতে পারলে তৎক্ষণাৎ হাতের তালুতে মুখ দিয়ে আওয়াদিল বলে মাথায় চাপ দিতে হবে। আওয়া দিল বলে মাথায় স্পর্শ করতে পারলে তখন ঐ খেলোয়াড় আউট বা মরা বলে গণ্য হয়। যদি গোপনকারী দলের সবাইকে ঐ ভাবে আইট না করা না যাই কেউ যদি পালিয়ে এসে রাজমার মাথায় আওয়াদিল দেয় তাহলে ঐ দল এই খেলায় জিটবে এবং পুনরায় তাদের দলই খেলা আরম্ভ করতে পারবে। আর যদি না পারে তাহলে অন্যদল লুকাতে যাবে এবং আগের দল তাদের খূঁজে বের করবে।
৪. চাআওখক রি.মা
চাআওখক মানে চোর আর রি.মা মানে ধরা অর্থাৎ চোর ধরা এই খেলাকে চোর পুলিশের খেলাও বলা যেতে পারে। এই খেলায় একজন পুলিশ ও একজন চোর সাজে। চোর এক বাড়ি থেকে চুরি করে পালাতে চেষ্টা করবে। তখন পাড়া প্রতিবেশীরা ঐ চোরকে ধরার জন্য চোর চোর বলে দৌড়াবে। ধরতে পারলে তাকে পুলিশের হাতে সমর্পণ করবে এবং পুলিশ চোরকে শাস্তি দেয়ার অভিনয় বরবে।
৫. ওয়াফংসাল্লা
এই খেলা সাধারণত দুইজনের মধ্যে হয়ে থাকে। একটি ৩/৪ হাত পরিমাণ শক্ত মাঝারি আকারের বাঁশ বা লাঠি দিয়ে দুই জনে মুখোমুখি হয়ে দুই জনের পায়ে পা মিলিয়ে বাঁশ বা লাঠি নিজের আওতায় আনতে চেষ্টা করে। যে নিজের আওতায় আনতে পারে সেই বিজয়ী হয়।
চলবে…
আরো লেখা
গারো সম্প্রদায়ের প্রচলিত খেলাধূলা ।। পর্ব-১ ।। মতেন্দ্র মানখিন
https://www.youtube.com/watch?v=4YD5GHH2N3o
‘১ সেপ্টেম্বর শুক্রবার থকবিরিম-এর যুগপূর্তি উৎসব অনুষ্ঠান’
: এক এক করে বার বছরে পদার্পণ করলো গারো সাহিত্যের পত্রিকা ......বিস্তারিত
-
১ সেপ্টেম্বর শুক্রবার থকবিরিম-এর যুগপূর্তি উৎসব অনুষ্ঠান
: এক এক করে বার বছরে পদার্পণ করলো গারো সাহিত্যের পত্রিকা ...
-
রে রে : হায়রে আমার কাঞ্জিয়া ।। নীলু রুরাম
: সমর সাংমার রেরে নিয়েই শুরু করি তবে একটু আলাদা। আমাদের...
-
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের নিরাপদ ব্যবহার ।। জাডিল মৃ
: এক. সময় স্রোতের সাথে আবাহমান ছুটে চলা প্রযুক্তির উন্নতি, মানব...
-
বর্তমান সময়ের তুমুল জনপ্রিয় শিল্পী দিশন অন্তু রিছিলের জন্মদিন আজ
: বর্তমান সময়ের তুমুল জনপ্রিয় শিল্পী দিশন অন্তু রিছিলের জন্মদিন আজ।...
-
বীর মুক্তিযোদ্ধা দেবতোষ যেত্রা আর নেই
: হালুয়াঘাট উপজেলার ৪নং সদর ইউনিয়নের কালিয়ানীকান্দা গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা পাস্টার...
-
কেনিয়ার কৃষকরা হাতি তাড়াচ্ছে মৌমাছি দিয়ে
: কেনিয়ায় হাতির তাণ্ডব থেকে ফসল রক্ষায় ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছে কৃষকরা।...
‘১ সেপ্টেম্বর শুক্রবার থকবিরিম-এর যুগপূর্তি উৎসব অনুষ্ঠান’
: এক এক করে বার বছরে পদার্পণ করলো গারো সাহিত্যের পত্রিকা ......বিস্তারিত
‘১ সেপ্টেম্বর শুক্রবার থকবিরিম-এর যুগপূর্তি উৎসব অনুষ্ঠান’
: এক এক করে বার বছরে পদার্পণ করলো গারো সাহিত্যের পত্রিকা ......বিস্তারিত