Thokbirim | logo

২৬শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | ১১ই ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ

ডাক্তার বেকারের ৫ম প্রয়াণ দিবস, সেই অশ্রুঝরা দিনটি আবারো ফিরে এলো ।। সুজিত রাংসা

প্রকাশিত : সেপ্টেম্বর ০১, ২০২০, ১৯:৪৯

ডাক্তার বেকারের ৫ম প্রয়াণ দিবস, সেই অশ্রুঝরা দিনটি আবারো ফিরে এলো ।। সুজিত রাংসা

সেই অশ্রুঝরা দিনটি আবারো ফিরে এল।  আমরা কাইলাকুড়ি পরিবার আবার শোকাহত, মর্মাহত। আজ ১লা সেপ্টেম্বর ২০২০, আমাদের সকলের প্রিয় ডাক্তার ভাইয়ের ৫ম মৃত্যু বার্ষিকী।

ডাক্তারের প্রয়াণ দিবস

ডাক্তারের প্রয়াণ দিবসে প্রার্থনা সভা

ডাক্তার ভাইয়ের জম্ম ১৯৪১ খ্রি: ১২ আগস্ট, নিউজিল্যান্ডে ওয়েলিংটনে, মধ্যবিত্ত পরিবারে। চার ভাই ও দুই বোনের মধ্যে তিনি দ্বিতীয়।  তার ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন জাগে ছোট একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে, তিনি যখন প্রাইমারিতে পড়ার সময় তার হাতের একটি আঙ্গুল কেটে যায়, তখন সে মায়ের পিছনে পিছনে ঘুরে কান্নাকাটি করে ব্যাথার জন্য। মা বলেন খুব লেগেছে বুঝি? তুমি কি ডাক্তারের কাছে যাবে? ডাক্তারের ওষুধ খাওয়ার পর ব্যাথা ভাল হয়ে যায়। তার পর তার মা তাকে বলেন তুমি কি বড় হয়ে ডাক্তার হতে চাওনা? ডাক্তার হয়ে অন্যের দু:খ, কষ্ট কমাতে চাও না? মায়ের এই কথা থেকে তার প্রবল ইচ্ছে, বড় হয়ে ডাক্তার হবে, মানুষের সেবা করবে। যা পূরণ হয় ১৯৬৫ খ্রী: নিউজিল্যান্ডের অটাগো মেডিকেল কলেজ থেকে এম বি বি এস পাশ করার পর। পৃথিবীর বিভিন্ন গরীব এবং যুদ্ধে ক্ষতি গ্রস্হ হওয়া দেশ গুলিতে ঘুরে ঘুরে কাজ করেন, পাপুয়ানিউগিনি, জাম্বিয়া, ভিয়েতনাম ইত্যাদি দেশে। কাজের পাশাপাশি বিভিন্ন পোস্টগ্রেজুয়েশন গুলি করেন।

ডাক্তার বেকার

ডাক্তার বেকার

অবশেষে ১৯৭৯ খ্রিষ্টাব্দে বাংলাদেশে চলে আসেন, বাংলাদেশে এসে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে ঘুরে কাজ করেন এবং তিনি খুজতে ছিলেন যেখানে তিনটি সমাজের গরীব লোক বসবাস করে এমন জায়গা । অবশেষে তিনি তা খুজে পেলেন মধুপুর থানার তৎকালীন শোলাকুড়ি ইউনিয়নের থানার বাইদ নামক প্রত্যন্ত গ্রামে।  তিনজন সেচ্ছাসেবক নিয়ে ১৯৮৩ খ্রি. চার্চ অব বাংলাদেশ নামক চার্চের  প্রায় বন্ধ হয়ে যাওয়া ডিসপেনসারির হাল ধরেন। তখন মাসিক বাজেট ছিল দশ হাজার টাকা। এই তিনজন সেচ্ছাসেবী থেকে আস্তে আস্তে বাড়তে থাকে সেচ্ছাসেবী। এলাকার স্বাস্থ্য সেবা বঞ্চিত গরীব অসহায় মানুষের কথা ভেবে বাড়তে থাকে কাজের এরিয়া। এভাবে বাড়াতে থাকে মাসিক বাজেটও। আর আমাদের প্রিয় ডাক্তার ভাইকে আপন করে নেন এই এলাকার তিনটি সমাজের গরিব দুঃখী মানুষ। তার আর দেশে ফিরে যাওয়া হলো না, এদেশের গরিব,সুবিধা বঞ্চিত,কেটে খাওয়া মানুষের  মায়ার জালে আবদ্ধ হয়ে থেকে গেলেন।

 

২০১৫ খ্রিস্টাব্দে ১লা সেপ্টেম্বর ৭৪বছর বয়সে মহান সৃষ্টিকর্তার ডাকে এই পৃথিবীর সকল মায়া ত্যাগ করে পরলোকগমন করেন আমাদের সকলের প্রিয় ডাক্তার ভাই।

তিনি মৃত্যু শয্যাশায়ী অবস্থায় তিনটি ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন…

১. তার নিজের গড়া প্রতিষ্ঠানে মৃত্যুবরন করতে চান, কোন রকম লাইফ সাপোর্ট ছাড়া। আমরা উনার ইচ্ছেকে সমর্থন করেছি।

২. তিনি যে ঘরে থেকে অফিস করতেন ঐ ঘরের বারান্দায়, তার দেখানো স্হানে যেন  তাকে সমাধি দেওয়া হয়। আমরা তাই করেছি।

৩. তার রেখে যাওয়া প্রতিষ্ঠানটি যেন কখনও বন্ধ না হয়, দেশী, বিদেশি, বাংলাদেশ সরকারসহ সকল সহৃদয়বান ব্যাক্তিবর্গের নিকট সবিনয় অনুরোধ করেন সাহায্য সহযোগিতার হাত বাড়াতে।

আমরা কাইলাকুড়ি পরিবার তার তৃতীয় ইচ্ছেটি পূর্ণ করতে বাংলাদেশ সরকারসহ,বিভিন্ন এনজিও, বিভিন্ন  কোম্পানি,  বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন,  দেশী, বিদেশি সর্ব স্তরের জনগনের নিকট সবিনয় অনুরোধ করি সাহায্য সহযোগিতা করতে এগিয়ে আসার জন্য।




সম্পাদক : মিঠুন রাকসাম

উপদেষ্টা : মতেন্দ্র মানখিন, থিওফিল নকরেক

যোগাযোগ:  ১৯ মণিপুরিপাড়া, সংসদ এভিনিউ ফার্মগেট, ঢাকা-১২১৫। 01787161281, 01575090829

thokbirim281@gmail.com

 

থকবিরিমে প্রকাশিত কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। Copyright 2020 © Thokbirim.com.

Design by Raytahost