পৃথিবীর সব দেশে সব জাতি সম্প্রদায়ের মধ্যে বিভিন্ন প্রকার খেলাধূলার প্রচলন দেখা যায়। এ দেশের গারো আদিবাসী সমাজেও কিছু কিছু খেলা ধূলার প্রচলন রয়েছে। যেগুলো তারা খেলে থাকে। গারোরা এই সমস্ত খেলাধূলা মাঘ, ফালগুন, চৈত্র বৈশাখ মাসে খেলে থাকে। আবার কোনো কোনো খেলা শরৎ ও হেমন্তের জ্যোৎস্না প্লাবিত রজনীতে খেলে থাকে। গারোদের সেই সব খেলাধূলার নাম দেয়া হল- ১. গি.লা খা.লা ২. দেলাংখাআ. ৩. নাখ্রেক ফাল্লা ৪. রাজমা খাল্লা ৫. চাআওখক রি.মা ৬. ওয়াফং খাল্লা ৭. গাংঘি সি.কা ৮. চিথিম দ.ক্কা ৯. মাইজিংজিং ১০. দ্রিমিমজি ১১. সাআকমামা ১২. ফুল¬খাল্লা ১৩. গোলাদাবারি।
১.গি.লা খাল্লা
গিল্লা এব জাতীয় লতানো গাছের ফল। পাহাড়ের বড় বড় গাছে এই প্রকার লতা জাতীয় গাছ দেখা যায়। এর ফল লম্বায় এক থেকে দেড় হাত। এতে কম পক্ষে একটি ফলে ১০/১২টা করে সুন্দর সুন্দর গোল গোল গিলা থাকে এই খেলা বেশ আনন্দদায়ক। সারাদিন কাজের শেষে জ্যোৎস্না রাতে ছেলে-মেয়ে দল বেঁচে এই খেলা খেলে থাকে। এই খেলা দুইজনে অথবা দল বেঁধে দুই দলেও খেলা যায়। সাধারণত মেঘমুক্ত আকাশে জ্যোৎস্না রাতে বাড়ির বড় উঠানে এই খেলা চলে। পা দিয়ে প্রথমে সোজা করে লাইন টেনে পরে দুই জনে বা দুই দলে মুখোমুখী হয়ে এই খেলা শুরু করে। এই খেলাতে কিছু কিছু কথা এবং নিয়ম কানুন থাকে যা খেলোয়ারদের মেনে চলতে হয়। বিপরীত দিকের খেলোয়াররা প্রথমত তার গিলা পায়ের দাগ কাটা লাইনের চূড়ান্ত সীমানায় সমান্য গর্ত করে গিলা বসিয়ে রাখে এবং অন্যদলের খেলেয়াড়রা বিভিন্ন কথা বা কায়দায় সেগুলো লক্ষ্য করে গিলা ছুঁড়তে থাকে। যেমন-
ক. বেদ
এই বেদ শব্দ দ্বারা প্রথমে খেলা শুরু হয়। বা হাতের তর্জনী ও বুড়ো আঙুল দিয়ে গিলা ধরে ডান হাতের তর্জনী দিয়ে জোরে বেদ বেতাম্মল বলার সাথে সাথে প্রতিপক্ষের গিলার দিকে ছুঁড়ে মারতে হয়। যদি প্রতি পক্ষের গিলায় যদি লাগে তাহলে অবশ্যই খেলা চালিয়ে যেতে পারে দৈবাৎ না লাগলে খেলা চালিয়ে যেতে পারে না। তখন প্রতিপক্ষ পাল্টা আক্রমন করবে।
খ. সিপ
পূর্বের মতই এবারও প্রতিপক্ষের দিকে গিলা ছুঁড়ে দিবে এবং সঙ্গে সঙ্গে বলবে সিপ সিপ। গিলা গিয়ে লাগলে ক্রমান্বয়ে খেলা চালিয়ে যেতে থাকবে।
গ. রাশি
এবারে রাশি রাশি বলে গিলা লাইনের মধ্য দিয়ে গড়িয়ে দেবে।
ঘ. ময়
এবার অন্য কায়দায় গিলাটাকে ময়ময় বলে ছুঁড়ে দেবে এবং সঙ্গে সঙ্গে প্রতি পক্ষের দিকে ছুটে যাবে।
ঙ. গল
এবারে গল গল বলে হাত দিয়ে গিলা ছুঁড়তে চেষ্টা করবে। লাগাতে না পারলে আউট হয়ে যাবে।
চ. ককরু
এবারে দুই উরুর মাঝখানে গিলাটাকে চেপে ককরু বলার সাথে সাথে দুই হাতে এক তালি দিয়ে এক লাফ দিয়ে গিলা গড়িয়ে দেবে।
ছ. জাস্কু
জাস্কু শব্দের অর্থ হাটু। দুই হাটুর মাঝখানে এবারে গিলা রেখে পূর্ববৎ এক লাফ দিয়ে গিলা গড়িয়ে নিতে হবে।
জ. বেংগিথি
দুই পা সমান করে দাঁড়িয়ে এবং দুই পায়ের মাঝখানে গিলা রেখে বেংগিথি বলার সাথে সাথে এক লাফ দেবে এবং গিলা গড়িয়ে দেবে।
ঝ. দাপ পা
এবারে ডান পায়ের উপর গিলা রেখে দাপপা বলার সাথে সাথে প্রতিপক্ষের গিলার দিকে ছুঁড়ে মারবে।
ঞ. চিপপা
ডান পায়ের দুই আঙুলের মধ্যে গিলা বসিয়ে এবার চিপপা বলার সাথে সাথে গিলা ছুঁড়ে মারবে এবং এটাই হল খেলার চূড়ান্ত পর্যায়। প্রথম থেকে শেষ ধাপ পর্যন্ত একাধারে প্রতিপক্ষকে সার্থক আক্রমন করতে পারলে জিত লাভ করবে।
চলবে…
প্রচ্ছদ মিলন চিসিম
গারো সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী লোকসঙ্গীত : রে রে ।। শেষ পর্ব ।। মতেন্দ্র মানখিন
‘১ সেপ্টেম্বর শুক্রবার থকবিরিম-এর যুগপূর্তি উৎসব অনুষ্ঠান’
: এক এক করে বার বছরে পদার্পণ করলো গারো সাহিত্যের পত্রিকা ......বিস্তারিত
-
১ সেপ্টেম্বর শুক্রবার থকবিরিম-এর যুগপূর্তি উৎসব অনুষ্ঠান
: এক এক করে বার বছরে পদার্পণ করলো গারো সাহিত্যের পত্রিকা ...
-
রে রে : হায়রে আমার কাঞ্জিয়া ।। নীলু রুরাম
: সমর সাংমার রেরে নিয়েই শুরু করি তবে একটু আলাদা। আমাদের...
-
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের নিরাপদ ব্যবহার ।। জাডিল মৃ
: এক. সময় স্রোতের সাথে আবাহমান ছুটে চলা প্রযুক্তির উন্নতি, মানব...
-
বর্তমান সময়ের তুমুল জনপ্রিয় শিল্পী দিশন অন্তু রিছিলের জন্মদিন আজ
: বর্তমান সময়ের তুমুল জনপ্রিয় শিল্পী দিশন অন্তু রিছিলের জন্মদিন আজ।...
-
বীর মুক্তিযোদ্ধা দেবতোষ যেত্রা আর নেই
: হালুয়াঘাট উপজেলার ৪নং সদর ইউনিয়নের কালিয়ানীকান্দা গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা পাস্টার...
-
কেনিয়ার কৃষকরা হাতি তাড়াচ্ছে মৌমাছি দিয়ে
: কেনিয়ায় হাতির তাণ্ডব থেকে ফসল রক্ষায় ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছে কৃষকরা।...
‘১ সেপ্টেম্বর শুক্রবার থকবিরিম-এর যুগপূর্তি উৎসব অনুষ্ঠান’
: এক এক করে বার বছরে পদার্পণ করলো গারো সাহিত্যের পত্রিকা ......বিস্তারিত
‘১ সেপ্টেম্বর শুক্রবার থকবিরিম-এর যুগপূর্তি উৎসব অনুষ্ঠান’
: এক এক করে বার বছরে পদার্পণ করলো গারো সাহিত্যের পত্রিকা ......বিস্তারিত