Thokbirim | logo

২৫শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | ১০ই ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ

স্মৃতিতে মাইকেল মৃত্যুঞ্জয় রেমা ।। অনিমেষ তজু

প্রকাশিত : আগস্ট ২৭, ২০২০, ২০:৩৮

স্মৃতিতে মাইকেল মৃত্যুঞ্জয় রেমা ।। অনিমেষ তজু

স্বাধীনতার পরে গোড়ার দিকে এমন সময় ছিল, গ্রামে গান বাজনা করা লোকের সংখ্যা নাই বললেই চলে। ঘরে হারমনিয়াম ও তবলার আকাল, অন্যান্য বাদ্যযন্ত্র তো দূরের কথা। নিজের ঝাড়ের বাঁশ কেটে বানানো বাঁশি দেখা যেত কিছু কিছু মানুষের হাতে, যা সুরে-বেসুরে বাজাত। মানুষের অন্তরে সংগীতের প্রবাহ ছিল কিন্তু পরিবেশের অভাব ছিল। তাই গান-বাজনা জানা মানুষের কদর ছিল বেশি।

একদিন আমি দেখলাম আমার নানা (আচ্চু) এন্ডারসন তজু’র কাছারিতে একজন যুবক বয়সের ভদ্রলোক এসে গান-বাজনা করছেন। সে সময়ে আমাদের গ্রামে একমাত্র আচ্চু এন্ডারসন গান-বাজনা করত, সে সুবাদে তিনি হয়ত এসেছিলেন। উনাকে আমি সেদিনেই প্রথম আমাদের গ্রামে আসতে দেখলাম, কালো করে টগবগে যুবক, চুল মেডিয়াম লম্বা। কিছুক্ষণ গান-বাজনা করে লোকটা চলে গেল আমাদের বাড়ির উঠোন হয়ে। আমি তাঁকে দেখেছি, হয়ত তিনি আমাকে দেখেন নাই। পরে মায়ের কাছে শুনলাম তাঁর নাম ‘কালু’ যাকে পরে জানলাম মাইকেল মৃত্যুঞ্জয় রেমা। তখন বয়সে আমি এত ছোট ছিলাম বলেই এত গুরুত্ব দিয়ে দেখিনি তাঁকে। কিন্তু স্মৃতিতে এখনও তাঁর ছবিটি মনে করলেই ঝাঁপসা উজ্জ্বল হয়ে ভাসে। তারপর তাঁকে আর সাক্ষাতে দেখতে পাইনি। শুধু তাঁর সালগিতাল এর উপস্থাপনা ও “জাজং জারাম্বং” গান শুনা ছাড়া।

১৯৯৪-২০০১ সাল, আমি ‘নকমান্দি’তে কম্পিউটার প্রশিক্ষণ ও চাকুরির সুবাদে লজিং করছি। সে সময়ে তাঁর সাথে দেখা এবং পরিচয় হয়ে গেল। তখন সেই প্রথম দেখা এবং অনেক বছর পরে দেখা, চেহারার বড় আকাশ-পাতাল ফারাক দেখলাম! কিন্তু সে কথা তাঁকে আমি কোনদিন প্রকাশ করলাম না। এর পরে সালগিতালে গান রেকর্ডিং করার জন্য তাঁর কাছে গেলাম রেডিও স্টুডিতে। দেখা হলো, কথা হলো ও গান রের্ডিং হলো। এরপর হতে নকমান্দিতে মাঝে মধ্যে তিনি আসতেন, দেখা হলে আন্তরিকতার সাথে কুশল-সংবাদ জিজ্ঞেস করতেন।

মিঃ মাইকেল মৃত্যুঞ্জয় রেমাকে আমি যতটুকু দেখেছি- তিনি ছিলেন একজন অমায়িক, প্রাঞ্জল মনের অধিকারী, পরপোকারী মানুষ। তিনি রেডিওতে শুধু চাকুরি করেননি, সালগিতালকে অন্তর দিয়ে ভালবেসে উন্নয়নের জন্য দীর্ঘ সময় ধরে  স্বীয় দক্ষতায় পরিচালনা করেছেন। তিনি ছিলেন স্বীয় যোগ্যতায় একজন অক্লান্ত, পরিশ্রমী ও দক্ষ মানুষ। তাঁর অকালে পরলোকে চলে যাওয়া অপূরণীয় শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছে, যা পূরণ হবে না। তাঁর অকাল মহাপ্রয়াণে শোকাহত। প্রার্থনা করি যেন তাঁর বিদেহী আত্মা ঈশ্বরের কাছে শান্তিতে থাকে।

বর্তমানের স্ত্রীই খাকখেট হয়েছে! দ্রংয়ের সাথে রিছিল মিলে।। খামাল জয়রাম দ্রং




সম্পাদক : মিঠুন রাকসাম

উপদেষ্টা : মতেন্দ্র মানখিন, থিওফিল নকরেক

যোগাযোগ:  ১৯ মণিপুরিপাড়া, সংসদ এভিনিউ ফার্মগেট, ঢাকা-১২১৫। 01787161281, 01575090829

thokbirim281@gmail.com

 

থকবিরিমে প্রকাশিত কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। Copyright 2020 © Thokbirim.com.

Design by Raytahost