আমি তখন জলছত্র কর্পোস খ্রীষ্টি হাই স্কুলে দিদি মারিয়া চিরানের নেতৃত্বে সহকারি শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি। পাশাপাশি ফাদার হোমারিকের মতো মহান ফাদার ও নি:স্বার্থ সমাজ সেবকের স্বান্নিধ্যেও আছি, বলা চলে সমাজ সেবার ব্রত নিয়ে।
তখনকার সময়ের আ.বিমা(হা.বিমা) আজকের হা.বিমার মতো ছিল না। ছিল গারো প্রথাভিত্তিক আইনের গ্যাড়াকলে। এই গ্যাড়াকলে পড়ে যে কতো সংসারপ্রিয় গারো পুরুষদের স্বপ্নসাধ নষ্ট হয়ে গেছে তার কোন ইয়ত্তা ছিল না।
তখনকার দিনে হাবিমাবাসীর কাছে গারো সামাজিক প্রথা ছিল স্বর্গীয় আইনের মতো। এর কোনো কোনো হেরফের হওয়া মানে সমাজ- প্রথা নীতির পতন(?)
একদিন মাননীয় ফাদার আমাকে গারো গান লেখার জন ফরমায়েশ দিলেন সাথে এও বলে দিলেন, গানগুলো যাতে সমাজ উদ্দীপনামূলক হয় এবং গারো সংস্কৃতির প্রতিচ্ছবি থাকে। ফাদারের ফরমায়েশ অনুসারে ভাবতে থাকলাম কীভাবে এমন গান লেখা যায়? গানে আবার সুরারোপের বিষয়টি আছে। হাতের কাছে হারমোনিয়ামও ছিল না।
দিনের বেলা শিক্ষকতা, রাত্রে হোস্টেল সুপার হিসেবে বোর্ডিং-এর ছাত্রদের তত্ত্বাবধান করা;এ নিয়ে চলছিল সময় কাল। এক রাত্রে ঘটলো এক বিপত্তি। সম্ভবত রাত এগারো কি বারোটার দিকে হবে হোস্টেলের ছাত্ররা আমাকে ঘুম থেকে জাগালো এবং বললো, আমাদের হোস্টেলের গেইটের সামনে একজন মান্দি পুরুষ কেবলই কাঁদছে,তাকে নাকি তার পরিবার থেকে বিতাড়িত করেছে।
আমি গিয়ে জানতে চাইলাম তার সমস্যার কথা। সে তার সমস্যাবলি যেভাবে আমাকে জানিয়েছে ঐ রাতে আমি আর সারা রাত ঘুমাতে পারিনি। কিন্তু সমস্যা হয়েছে আমার গান লেখার বেলায়। কেবলই মাথা মগজ তোলপাড় করছিল কী করে এঘটনাকে আমি ধরে রাখি? সরাসরি ভাবলাম,গারো পুরুষদের এরকম অসহায়ত্বের বিষয় নিয়ে একটা গানই লিখে ফেলি না কেন? লেখা শুরু করলাম।
কিন্তু লিখতে গিয়েই ঘটলো এক বিপত্তি। কাহিনি আমার জানা কিন্তু গান লেখার কাজ এগুচ্ছে না। গানের স্থায়ী ও সঞ্চারি লিখেই হঠাৎ করে আমার নিজের চোখের জলে কলমের কালিসহ কাগজ ভিজে যেতে থাকলো। তখনকার দিনে বলপেন ছিল না। চোখের জলে কাগজ ভিজে গানের প্রথম চরণটাই বুঝতে পারছিলামনা। চিন্তা করে প্রথম চরণটাই স্মরণে এনে আবার লেখলাম। আবারও চোখের জল। আবারও নষ্ট।নিজেকে শক্ত করতে চেষ্টা করলাম। কিন্ত সে রাত্রে গানটি আমার শেষই হলো না। আর ঘুম হলো না।
পরদিন গানটি লেখলাম। তবে এটাও ঠিক গানটি শেষ করতে পারি নি। গানটি শেষ করতে দু’বছর লেগেছিল। একারণে পরবর্তী কথাগুলোও একটু পরিবর্তন হয়েছে।
একটা গানে অবশ্যই এক ইতিহাস থাকে। থাকতে হয়। নতুবা গানটা অল্প সময়ের আবেগী বাণী হয়।ভালবাসার গানে তা বোধহয় সহজেই সম্ভব। কিন্তু একটা জাতি সত্ত্বার প্রথাভিত্তিক আইন সৃষ্ট সামাজিক সমস্যার কথা গানের বাণীতে আনতে গিয়ে সময় নিতেই হয়েছে। বুঝতে হয়েছে।
জেমস জর্নেশ চিরান গারো সম্প্রদায়ের বিশিষ্ট কবি ও প্রাবন্ধিক। কবির থকবিরিমে প্রকাশিত সাক্ষাৎকারের বিশেষ অংশ ফাদারের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা রেখে থকবিরিম পাঠকদের জন্য প্রকাশ করা হলো-সম্পাদক।
ফাদারের ছবি থকবিরিম অ্যালবাম থেকে সংগৃহীত।
ফাদারকে নিয়ে আরো লেখা…
আম্বি, ফাদার হোমরিকনা গ্রাবাদ্দা ।। তাপস্রাং সরোজ ম্রং
মান্দিদের চিন্তা মান্দিদেরকেই করতে হবে ।। ফা. হোমরিক সি.এস.সি
ফাদার হোমরিকের স্মরণে ‘ মিমাংগাম’ করলেন চিজং নকমা
জলছত্র ধর্মপল্লিতে ফাদার হোমরিকের স্মরণ সভা
‘১ সেপ্টেম্বর শুক্রবার থকবিরিম-এর যুগপূর্তি উৎসব অনুষ্ঠান’
: এক এক করে বার বছরে পদার্পণ করলো গারো সাহিত্যের পত্রিকা ......বিস্তারিত
-
আজ লেখক ও চিন্তক আলবার্ট মানকিন-এর স্মরণসভা ও স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠান
: মধুপুর গড়াঞ্চলের আদিবাসী নেতা, চিন্তাবিদ, লেখক, সমাজকর্মী, এনজিও কর্মী আলবাট...
-
গুলশান বনানী ওয়ানগালা ২১ অক্টোবর শনিবার
: গুলশান বনানী ওয়ানগালা ২১ অক্টোবর শনিবার আদি সাংসারেক গারো জাতিগোষ্ঠীর...
-
১ সেপ্টেম্বর শুক্রবার থকবিরিম-এর যুগপূর্তি উৎসব অনুষ্ঠান
: এক এক করে বার বছরে পদার্পণ করলো গারো সাহিত্যের পত্রিকা ...
-
রে রে : হায়রে আমার কাঞ্জিয়া ।। নীলু রুরাম
: সমর সাংমার রেরে নিয়েই শুরু করি তবে একটু আলাদা। আমাদের...
-
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের নিরাপদ ব্যবহার ।। জাডিল মৃ
: এক. সময় স্রোতের সাথে আবাহমান ছুটে চলা প্রযুক্তির উন্নতি, মানব...
-
বর্তমান সময়ের তুমুল জনপ্রিয় শিল্পী দিশন অন্তু রিছিলের জন্মদিন আজ
: বর্তমান সময়ের তুমুল জনপ্রিয় শিল্পী দিশন অন্তু রিছিলের জন্মদিন আজ।...
‘আজ লেখক ও চিন্তক আলবার্ট মানকিন-এর স্মরণসভা ও স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠান’
: মধুপুর গড়াঞ্চলের আদিবাসী নেতা, চিন্তাবিদ, লেখক, সমাজকর্মী, এনজিও কর্মী আলবাট......বিস্তারিত
‘১ সেপ্টেম্বর শুক্রবার থকবিরিম-এর যুগপূর্তি উৎসব অনুষ্ঠান’
: এক এক করে বার বছরে পদার্পণ করলো গারো সাহিত্যের পত্রিকা ......বিস্তারিত