কানের কাছে ভয়ঙ্কর আওয়াজ তুলে এ্যাম্বুলেন্স ছুটে চলেছে। আর কত দূর! আজ পথ ফুরায়না কেন! শ্বাস নিতে গেলেই বুকের পাঁজর ফেটে যেতে চাইছে। পরিবারের আপনজন, মুছে যাওয়া চেনা প্রিয়জন সবার মুখ বন্ধ চোখের পাতায় ভেসে উঠছে। অনেকদিন আগে পেছনে ফেলে আসা মুখটা তার এ্যাম্বুলেন্সের সাথে সাথে দৌড়াচ্ছে কেন! কী সে বলতে চায়! কিছুই বোঝা যাচ্ছে না। শব্দের তরঙ্গে তলিয়ে যাচ্ছে প্রিয়জনের সব আকুতি। ‘নন্দিনি, নন্দিনি এমন করে দৌড়িওনা, পড়ে যাবে।’ প্রিয়মুখটা আর কুলিয়ে উঠছে না। এ্যাম্বুলেন্সের গতি বাড়ছে। বাড়ছে, সাথে তার শব্দ। পাল্লা দিয়ে শ্বাস কষ্ট। সব কিছু পেছনে পড়ে যাচ্ছে, সামনে ভিষণ অন্ধকার। গতি বাড়ছে, বাড়ছে!
গ্লাসটা একটু খুলে দাও, কেউ শুনতে পাচ্ছো! আমি বুকভরে শ্বাস নিতে চাই, সবুজ দেখতে চাই, আমার প্রিয়জনদের কাছে আসতে দাও, শুনতে পাচ্ছো! আমাকে নামিয়ে দাও, আমি আর হাসপাতালে যেতে চাই না। পায়ের কাছে পড়ে থাকা মোবাইল ফোনটা শব্দ করে করে বেজে চলে। ফোনের শব্দে নন্দিনির ঘুম ভেঙে যায়। এত ভোরে মিথিলার ফোন! নিশ্চয় সারারাত আড্ডা দিয়েছে, ঘুমায়নি। এখন অন্যদের ফোন করে বিরক্ত করা। কী ভয়ঙ্কর স্বপ্ন। কে ছিলো এ্যাম্বুলেন্সের ভেতর! ঝাপসা, কিন্তু চেনা মনে হলো মুখটা। ভোর হয়ে আসছে। মসজিদে আযান ভেসে আসে। বারান্দায় দাঁড়ায় সে। কী শীতল বাতাস, স্নিগ্ধ মায়া! সারারাত বৃষ্টির জল গায়ে মেখে মেখে গাছগুলো কেমন নুয়ে আছে। যেন ঠান্ডা শীতল কষ্টের ভার বইতে না পারার ভারে নতজানু হয়ে আছে।
এই শহরে এখনও বিশুদ্ধতা প্রাণ ছুঁয়ে যায়। এমন সময় ফোনটা আবার বেজে ওঠে। আবার মিথিলার ফোন হ্যাঁ, বল। তোর সমস্যা কী বলতো! তোর চোখে ঘুম নেই বলেকি অন্য কেউ ঘুমায় না নাকি! আমার বাবার অঢেল সম্পত্তি নেই হে, আমাকে চাকরি করে খেতে হয়। তাই সময় করে ঘুমাতে হয়, আবার সময় মত উঠে নিজের জন্য রান্না করতে হয়। অরণ্য আজ সকালে মারা গেছে নন্দিনি। ফোনের ওপাশ থেকে ফুপিয়ে কেঁদে ওঠে মিথিলা। তারওকি কান্না পাচ্ছে! কিন্তু কেন! শুধু পরিচিত কেউ মারা গেছে এই কারণে! নাকি সেই মানুষটা একটা সময় তার খুব কাছের কেউ ছিলো সেই কারণে! সম্পর্কে তৃতীয় কারো আগমনকে যখন কেউ সাদরে গ্রহণ করে; তখন সেই ভাঙনে তলিয়ে যায় প্রেম, মায়া-মমতা, বিশ্বাস-সবকিছু। কিন্তু সেই মেয়েটাও কেন অরণ্যকে ছেড়ে গেল! তার না হয় অনেক দোষ ছিলো! যে এসেছিলো নতুন হয়ে, ঘর নতুন, মানুষ নতুন, প্রেম নতুন; সেই নতুন কেন তলিয়ে গেল কুৎসিত পুরাতনে! তুই আমার ভাইকে মাফ করে দিস। যে অন্যায় সে তোর সাথে করেছে, মৃত মানুষটার প্রতি আর কোনো রাগ পুষে রাখিস না। মিথিলা নিজের মত বলেই চলে।
বাইরে তখন ভয়ঙ্কর আওয়াজ তুলে এ্যাম্বুলেন্স ছুটে চলে। হয়ত আরও একটা গল্পের সমাপ্তি হলো বিশুদ্ধ বাতাসের অপ্রাপ্তিতে। নন্দিনির দু গাল বেয়ে জলের ধারা নেমে আসে। বুকের পাঁজরে পুষে রাখা কষ্টগুলো যেন গলে গলে ভিজিয়ে দিচ্ছে তার দীর্ঘদিনের শুষ্ক খাক হয়ে থাকা ধরণী।
০৭ জুন, ২০২০
‘১ সেপ্টেম্বর শুক্রবার থকবিরিম-এর যুগপূর্তি উৎসব অনুষ্ঠান’
: এক এক করে বার বছরে পদার্পণ করলো গারো সাহিত্যের পত্রিকা ......বিস্তারিত
-
রাত পোহালেই উদযাপিত হতে যাচ্ছে গারো জনগোষ্ঠীর উৎসব ওয়ানগালা
: রাত পোহালেই উদযাপিত হতে যাচ্ছে গারো জনগোষ্ঠীর সামাজিক সাংস্কৃতিক ও...
-
আজ লেখক ও চিন্তক আলবার্ট মানকিন-এর স্মরণসভা ও স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠান
: মধুপুর গড়াঞ্চলের আদিবাসী নেতা, চিন্তাবিদ, লেখক, সমাজকর্মী, এনজিও কর্মী আলবাট...
-
গুলশান বনানী ওয়ানগালা ২১ অক্টোবর শনিবার
: গুলশান বনানী ওয়ানগালা ২১ অক্টোবর শনিবার আদি সাংসারেক গারো জাতিগোষ্ঠীর...
-
১ সেপ্টেম্বর শুক্রবার থকবিরিম-এর যুগপূর্তি উৎসব অনুষ্ঠান
: এক এক করে বার বছরে পদার্পণ করলো গারো সাহিত্যের পত্রিকা ...
-
রে রে : হায়রে আমার কাঞ্জিয়া ।। নীলু রুরাম
: সমর সাংমার রেরে নিয়েই শুরু করি তবে একটু আলাদা। আমাদের...
-
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের নিরাপদ ব্যবহার ।। জাডিল মৃ
: এক. সময় স্রোতের সাথে আবাহমান ছুটে চলা প্রযুক্তির উন্নতি, মানব...
‘রাত পোহালেই উদযাপিত হতে যাচ্ছে গারো জনগোষ্ঠীর উৎসব ওয়ানগালা’
: রাত পোহালেই উদযাপিত হতে যাচ্ছে গারো জনগোষ্ঠীর সামাজিক সাংস্কৃতিক ও......বিস্তারিত
‘১ সেপ্টেম্বর শুক্রবার থকবিরিম-এর যুগপূর্তি উৎসব অনুষ্ঠান’
: এক এক করে বার বছরে পদার্পণ করলো গারো সাহিত্যের পত্রিকা ......বিস্তারিত