Thokbirim | logo

৭ই আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | ২২শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ

ট্রাফিক হলো একটা কমনসেন্স-এর বিষয়- সার্জেন্ট লিমা চিসিম

প্রকাশিত : নভেম্বর ২৪, ২০১৯, ০০:২৩

ট্রাফিক হলো একটা কমনসেন্স-এর বিষয়- সার্জেন্ট লিমা চিসিম

লিমা চিসিম প্রথম গারো নারী সার্জেন্ট।বেড়ে ওঠা ময়মনসিংহ জেলার হালুয়াঘাট থানার বিড়ই ডাকুনী গ্রামে।দুভাই দুবোনের মধ্যে তিনিই প্রথম। মা বেবি চিসিম বাবা বিকাশ রিছিল থাকেন গ্রামে। ভাইবোনেরা পড়ালেখা করছেন। লিমা চিসিম পড়ালেখা করেছেন বিড়ইডাকুনি স্কুলে তারপর ময়মনসিংহ মহিলা ডিগ্রি কলেজ থেকে ইন্টার পাশ করে ইডেন থেকে বিএ ডিগ্রি লাভ করেন।বর্তমানে ইডেন থেকেই মাস্টার্স করছেন। লিমা চিসিম প্রথম গারো নারী সার্জেন্ট হিসেবে চাকরি জীবনে প্রবেশ করেন ২০১৫ সালে।বর্তমান কর্মস্থল হচ্ছে মোহাম্মদপুর জোন।লিমা চিসিম এবং থকবিরিম সম্পাদকের সাথে বনানী ওয়ানগালায় নানা বিষয় নিয়ে দীর্ঘ আলাপ হয়। সেই আলাপের বিশেষ অংশ থকবিরিম পাঠকদের জন্য প্রকাশ করা হলো।

সার্জেন্ট হবার যোগ্যতা…

যে কেউ চাইলে ডিগ্রি/অনার্স বা মাস্টার্স করে আসতে পারে। অনেক পরিশ্রম এবং কষ্ট।তারপরও সরকারি চাকরি হিসেবে অনেক গর্বের বিষয়।সরকারিভাবে যেহেতু পুলিশ নিয়োগ হয় যার কারণে আমিও চাই অন্যরা আসুক এই লাইনে।

কলিগদের আচরণ…

সবার আচরণ ভালই! মেয়ে হিসিবে সবাই ভাল আচরণই করে। যেহেত এই জবে এসেছি মানে এই চ্যালেঞ্জিং জব… মানে রাস্তায় একজন মেয়ে… ট্রাফিক মেনটেইন করা কিন্তু অনেক কিছুর ব্যপার। আবার ড্রাইভার রিক্সাওয়া থেকে শুরু করে বিভিন্ন উচ্চ পর্যায়ের ব্যক্তি বলো সব পর্যায়ের মানুষকেই সামাল দিতে হয়। যার সাথে যে রকম টেকেল দেয়া যায় আর কী সেভাবেই দিতে হয়। আমি যেহেতু সরকারিভাবে দায়িত্ব প্রাপ্ত সেহেতু আমাকে কাজ করতেই হবে। যার ধরুন আমি এখন আর এইসব তেমন কিছু মনে করি না।

অনেকেই মাঝে মাঝে হেল্প চায়, দায়িত্বরত সার্জেন্ট হিসেবে আমাকেও হেল্প করতে হয়।এটা এখন আমার ভালোই লাগে।

এখন সেই এবিলিটি চলে আসছে…

অবশ্যই। কাজ করতে করতে সিনিয়রদের দেখতে দেখতে  শিখেছি, শিখতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত। উনারা কীভাবে কাজ করেন, কীভাবে কথা বলেন সবার সাথে… এটা আসলে কমনসেন্স-এর বিষয় আর কী! ট্রাফিক হইলো একটা কমনসেন্স ব্যাপার। এটা মেইনটেন করা এমন কোনো কঠিন কাজ না।

নানা কিসিমের নানা শ্রেণির মানুষ…

হুম নানা কিসিমের নানা শ্রেণির মানুষ তার জন্য তাদের মন মানসিকতাও নানা ধরনের।

কোনো স্মরণীয় ঘটনা…

একদিন ডিউটি করছিলাম তো সেদিন একজন মহিলার  ব্যাগ থেকে  পকেটমার টাকা নিয়ে গেছে। মহিলা যাচ্ছিল নিউমাকের্ট শপিং করতে। তো সেই সময় মহিলা এসে বলল, ম্যাডাম আমি তো সাভার থেকে শপিং করতে এসেছিলাম  নিউমার্কেটে কিন্তু আমার পার্স থেকে পকেটমার সব টাকা নিয় গেছে। আমার কাছে কোনো টাকা নাই। এখন আমি কীভাবে বাসায় যাবো? আমি বাসায় যেতে চাই আপনি আমাকে সাহায্য করেন। আমি বললাম অবশ্যই সাহায্য করবো বলে গাড়ি ভাড়া দিয়ে বাসায় পাঠিয়েছি। মাঝে মাঝে এমন পরিস্থিতিতে পড়তে হয়।

বাইকে গুন্ডারা আসে না?

হুম… আসে…  তাদের পরিস্থিতি বুঝে টেকেল দিতে হয়।  তো এমন এমন স্টুডেন্টরা আছে তারা উবারে পাঠাওয়ে বাইক চালায় সারভাইব করার জন্য মাঝে মাঝে তাদের সেক্রিফাইস করতে হয়। অনেকেই পরিস্থির কারণে চাকরি করে তার জন্য আমি বলি এটা কমনসেন্সের বিষয়!

রিকশাওয়ালা বা বাইকওয়ালা বা ড্রাইভাররা আপনাকে নারী দেখে  কিছু বলে?

না ঐরকম কোনো ব্যঙ্গ বা কোনো ধরনের কথা বলে না। অনেকে বুঝতেই পারে না। আমি মেয়ে না ছেলে বা আমি আদিবাসী বা বাঙালি। তবে মাঝে মাঝে অনেকেই আমাকে প্রশ্ন করে– আপনি কোন এলাকার? আপনি কি চিটাংয়ের? তখন বলি- না আমি চিটাগাংয়ের না আমি ময়মনসিংহের।

বর্তমান গারো তরুণ-তরুণীরা এই কাজে আসতে চাইলে আপনার পরামর্শ কী?

আমি তো বলি আসুক। আমি সব সময় বলি তারা যেন আসে। আর মাঝে মাঝে আমি যখন দেখি নিয়োগবিজ্ঞপ্তি তখন শেয়ার করি আমার ওয়ালে যেন সবাই দেখে। দেখে আবেদন করতে পারে। তারা পুলিশের ওয়েবসাইট আছে  সেখানেও ঢুকে খোঁজ নিতে পারে। কারণ মেয়ে হিসেবে যে তুমি এই কাজ করতে পারবে না তা-না হয়তো আট ঘন্টা ডিউটি করতে হয় কিন্তু তোমোকে আট ঘণ্টাই যে দাঁড়িয়ে থাকতে হবে তা-না। কিন্তু রাস্তায় প্রেসার থাকলে স্বাভাবিকভাবেই তোমাকে দাঁড়িয়ে থাকতে হবে, তোমাকে কাজ করতেই হবে। গাড়ির ড্রাইভার বা যে কেউই তোমাকে দেখলে যেন সমীহ করে ঐ ধরনের কাজ করতে হবে।

তো আমি তাদের আসতে বলি… যদি মনে হয় যে, আমি অবশ্যই কষ্ট করে আমার জীবনকে এই চ্যালেঞ্জিং পেশায়  গড়ে তুলবো তাহলে সে আসতে পারে এবং নিজের জীবনকে সুন্দরভাবে গড়ে তুলতে পারে।

আরো সাক্ষাৎকার

জীবন সম্পর্কে পরিস্কার ধারণা থাকতে হবে।।প্রলয় চিসিম

দায়িত্বশীল ও জবাবদিহিতামূলক নিউজপোর্টালের উপর মানুষ নির্ভর করবে।। নিখিল মানখিন




সম্পাদক : মিঠুন রাকসাম

উপদেষ্টা : মতেন্দ্র মানখিন, থিওফিল নকরেক

যোগাযোগ:  ১৯ মণিপুরিপাড়া, সংসদ এভিনিউ ফার্মগেট, ঢাকা-১২১৫। 01787161281, 01575090829

thokbirim281@gmail.com

 

থকবিরিমে প্রকাশিত কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। Copyright 2020 © Thokbirim.com.

Design by Raytahost